অনলাইন নিউজ ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কোনো দলে না গিয়ে যদি আলাদা থাকেন, তবে বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। স্বতন্ত্রদের অবস্থান সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানিয়েছেন আনিসুল হক।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্ররা যদি মনে করেন তারা আলাদা আলাদা থাকবেন, তবে অবশ্যই জাতীয় পার্টি যেহেতু ১১টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি অবশ্যই (বিরোধী দল হিসেবে) প্রাধান্য পাবে।’
এমপিদের শপথ, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কালকে (বুধবার) নতুন সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন। এখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা পার্লামেন্টারি পার্টির নেতা হিসেবে নির্বাচিত করার পর রাষ্ট্রপতি তাকে নতুন সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন।
এই আমন্ত্রণ জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী নতুন সরকার গঠন করবেন। নতুন সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত না গঠিত হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এখন যে সরকার আছে তারা দায়িত্বে থাকবেন। নির্ধারিত সময় না থাকলেও রীতি রয়েছে শপথ নেওয়ার ৫-৭ দিনের মধ্যেই নতুন সরকার গঠিত হয়। আমার মনে হয়, এবারও তাই হবে।’
‘নির্বাচন কমিশন নতুন সদস্য সংসদ সদস্যদের একটা গেজেট করবে। এটা করার পরে শপথ নিতে হবে, সেখানে একটা সময়সীমা রয়েছে যে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেই শপথটা নিতে হবে। এখন সেই প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
স্বতন্ত্ররা কোনো মোর্চা করতে পারবে কি না- এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘কেন পারবেন না? স্বতন্ত্ররা যদি মনে করেন তারা সরকারের সঙ্গে না থেকে নিজস্ব একটা গ্রুপ করবেন, অবশ্যই তারা সেটা করতে পারেন। তখন কাকে বিরোধী দল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, সেটা নির্ধারিত হবে।’
কারা বিরোধী দল হবে সেই বিষয়ে পরিষ্কার হতে আরও অপেক্ষা করতে হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ কালকে শপথ নেওয়ার পর স্বতন্ত্রদের অবস্থান কি হবে তারা নিশ্চয়ই জানাবেন। স্বতন্ত্রদের অবস্থান নির্ণয় হওয়ার পরেই আমার মনে হয় বিরোধীদল কারা থাকবেন সেটা আমরা বুঝতে পারবো।’
স্বতন্ত্র যারা তারা আওয়ামী লীগের। তারা যদি বিরোধী দলে যায়, তবে সরকার এবং বিরোধী দুই পক্ষই আওয়ামী লীগ হলো। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যখন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগের হিসেবে নির্বাচিত হননি। তারা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মার্কাও ছিল ভিন্ন। নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শুধু আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। সে ক্ষেত্রে তারা আওয়ামী লীগার এটা মুখের কথা হতে পারে, কিন্তু আইনের কথা বাস্তবতার কথা সেটা নয়।’
‘তারা স্বতন্ত্র হিসেবে জয়ী হয়েছেন। তারা যদি মনে করেন তারা স্বতন্ত্র হিসেবে থাকবেন। তাহলে দেখা যাবে কতজন স্বতন্ত্র হিসেবে থাকলেন। যদি দেখা যায় তারা একটা মোর্চা করবেন। অবশ্যই সেখানে তখন বিরোধীদল কে হবে তখন পরিষ্কার হয়ে যাবে। সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
সংসদ সদস্যদের শপথ বুধবার হলে মন্ত্রিসভা কবে গঠিত হবে- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা প্রধানমন্ত্রী বলতে পারবেন তিনি তিনি ইনশাল্লাহ আবারও আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি পার্টির দল নেতা হিসেবে নির্বাচিত হবেন, তিনি তখন ঘোষণা দেবেন কখন মন্ত্রিসভা গঠিত হবে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়নি এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বলেন, ‘আমরা সব সময়ই বলে আসছি নির্বাচন তখন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়, যখন জনগণ ভোট দেয়। আপনারা সকলে দেখেছেন এই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়েছে এবং নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়ে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘সেজন্য আমরা বলবো, আমরা যেটা বলি সেটা সঠিক। এর কারণ হচ্ছে বাস্তব চিত্র আমরাই দেখেছি। এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে, যেটা জনগণ স্বীকৃতি দিয়েছে। এর ওপরে কারো স্বীকৃতি প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।’