হাজীগঞ্জে ওয়াজ মাহফিলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইমন (৩০) নামে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
২৩ ফেব্রুয়ারী রাতে উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের জনতা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পুলিশ উপজেলার ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়নের ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক কাজী ফয়েজ বাবুকে আটক করেছে।
নিহত ইমন উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের লোধপাড়া কবিরাজ বাড়ির হারুনুর রশিদের ছেলে।
গত একুশে ফেব্রুয়ারি রাজারগাঁও ইউনিয়নের একটি ওয়াজ মাহফিলে দুই যুবকের মাঝে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে, সেই ঘটনার বিরোধ মিটিয়ে দিতে এগিয়ে আসে ইমন। এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে জিলানী নামের আরেক যুবক । ইমনকে শায়েস্তা করতে ১৫/২০ জনের স্থানীয় একটি দল ভাড়া করে জিলানী। জিলানীর কথায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই দলটি ৪ টি সিএনজি চালিত স্কুটারে করে ইমনের এলকায চলে আসে। এসেই দলটি ইমনকে বাজারে পেয়ে যায়। মাগরিব নামাজ চলাকালীন সমযে ইমন দলটিকে দেখে বাজারের পাশের একটি বাড়ির দিকে দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ১৫/২০ জনের দলটি কাঠের ধামা নিয়ে ইমনকে দৌড়িয়ে একটি বাড়ির বাগানে দিয়ে ধরে বেধড়ক মারধর করে ফেলে চলে যায় দলটি। এর পরেই স্থানীয়রা ইমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দাযিত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য কালা মানিক ও বর্তমান ইউপি সদস্য দুলাল তালুকদার জানান, বাজারর একটি চো-দোকানের সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, ৪টি সিএনজি চালিত স্কুটারে করে ১৫/২০ জনের এক দল দেশীয় কাঠের ধামাসহ বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাজারগাঁও থেকে জনতা বাজরে প্রবেশ করে। এ সময় ইমন (হত্যার শিকার) বাজারের কামরুলের ফার্নিচারের দোকানে সামনে দ্বাড়িয়ে কথা বলছিলেন। তাৎক্ষনিক ইমন বিষযটি বুঝতে পেরে দৌড়ে বাজারের পাশে বকাউল বাড়ির দিকে চলে যায়। পিছনে দিয়ে সেই দলটি ইমনকে দৌড়ে গিয়ে বকাউল বাড়ির বাগানের ভিতরে পিটিয়ে মারাত্বক আহত করে দলটি পালিয়ে যায়। এর পরেই ইমনকে স্থানীয় উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দাযিত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
সাবেক ইউপি সদস্য কালা মানিক আরো জানান, গত ২১ ফেব্রূয়ারী পুর্ব রাজারগাঁও বেপারী বাড়িতে একটি ওয়াজ মাহফিলে লোধপাড়া তালুকদার বাড়ির বাচ্চু মিয়ার ছেলে সৈকত তালুকদারের সাথে রাজারগাঁও পঞ্চায়েত বেপারী বাড়ির আক্তারের ছেলে জিলানী নামের এক যুবকের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেখানেই ইমন ( হত্যার শিকার) জিলানী আর সৈকতকে নিবৃত করে দেন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে জিলানী ইমনকে শিক্ষা দেবার জন্য ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ভাড়া করেন। এই দলটিই শুক্রবার সন্ধ্যায ৪ টি সিএসজি চালিত স্কুটারে করে রাজারগাঁও থেকে এসে জনতা বাজারে ইমনকে পিটিয়ে হত্যা করে। যারা ভাড়া এসেছে তাদের মধ্যে আমরা রাজারগাঁওয়ের তারেক আর রাসেলকে চিনতে পেরেছি।
হত্যাকান্ডের শিকার ইমনের চাচাতো ভাই ফরহাদ জানান, ইমনের তিনটি সন্তান রয়েছে। কিছু দিন আগে তার দুটি সন্তান জন্ম নেয়। ইমন ভাই বার্নিশ মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতো।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিলন জানান, গত ২১ ফেব্রূযারী রাতে পূর্ব রাজারগাঁওযে একটি মাহফিলে ইমনের সাথে কি নিযে জানি কিলিং মিশনটির সাথে কথা কাটকাটি হয়, সেই থেকেই তিক্ততা শুরু হয়।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, ফয়েজ বাবু নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে নিহতের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার দে জানান, জনতা বাজারের একটি চা দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে। আমরা গভীরভাবে দেখছি।