মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :
‘উপজেলা পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে হাজীগঞ্জের সদর ইউনিয়নে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সোমবার (৩ জুন) বিকালে সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সম্মুখে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল। এসময় তিনি সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠু ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন এবং উপস্থিতির বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, দেশের সব নাগরিকের টেকসই ভবিষ্যত ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকারের একটি মহৎ উদ্যোগ হলো ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’। কারণ, দেশের বয়সজনিত কারণে এবং অর্থের অভাবে আমাদেরকে মানবতার জীবনযাপন করতে হয়। অনেক মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়। এমনকি মানুষের কাছে সহযোগিতা চাইতে হয়। কিন্তু সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়িত হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।
এ সময় তিনি পেনশন স্কিম ‘প্রগতি’, ‘সুরক্ষা’, ‘প্রবাসী’ ও ‘সমতা’র বিস্তারিত তুলে ধরে সকলকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় চারটি স্কিমের যে কোন একটিতে অংশ নিতে আহ্বান জানান এবং উপস্থিত সবাইকে পেনশন স্কিমের উপকারিতা অন্যান্যদের মাঝে যথাযথভাবে পৌঁছে দেওয়া এবং আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনকে পেনশন স্কিমে অংশ নিতে উৎসাহ প্রদানের অনুরোধ জানান।
ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ প্রধানিয়া সুমনের সভাপতিত্বে ও ইউপি সচিব মো. সোলায়মান মিয়ার সঞ্চালনায় অবহিতকরণ সভায় উপস্থিতির মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সুহিলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম, প্যানেল চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, ইউপি সদস্য শোহরাব হোসেন মুন্সী ও হেলাল চৌধুরী প্রমুখ। এসময় ইউপি সদস্যসহ ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি এমনভাবে করা হচ্ছে যাতে দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিকই এ ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারবেন এবং ৬০ বছর বয়স থেকে তারা আজীবন পেনশন পাবেন।
শুরুর দিকে চিন্তা না থাকলেও পরে ৫০ বছরের বেশি বয়সীদেরও পেনশন কর্মসূচির আওতায় রাখার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। তারা টানা ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পরই পেনশন সুবিধা পাবেন। আপাতত চার শ্রেণির জনগোষ্ঠীর জন্য চার ধরনের পেনশন কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে।
এগুলো হচ্ছে, প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাসী। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাসী’ এবং দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’ শীর্ষক কর্মসূচি চালু করা হবে।
‘প্রগতি’ ও ‘সুরক্ষা’ কর্মসূচির আওতায় মাসিক চাঁদার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ‘প্রবাসী’ কর্মসূচিতে মাসিক চাঁদার হার ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। ‘সমতা’ কর্মসূচিতে মাসিক চাঁদা ৫০০ টাকা। এ কর্মসূচিতে সমপরিমাণ অর্থাৎ ৫০০ টাকা করে চাঁদা দেবে সরকার।