মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্:
হাজীগঞ্জে ৫দিন পর বাবার কোলে ফিরেছে শিশু নুসরাত আক্তার জান্নাত। বুধবার দুপুরে (১৮ ডিসেম্বর) বাবা আরমানের হাতে তার ২ বছর তিন মাস বয়সি শিশু সন্তানকে তুলে দেন হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর, শুক্রবার দুপুরে পৌরসভাধীন রান্ধুনীমূড়া এলাকা থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়।
স্থানীয় এক সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, শিশু জান্নাতকে একজন নারী কোলে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ওই নারীর পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি। এই ঘটনায় ওই দিন হাজীগঞ্জ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। পরে ফেসবুকের সূত্র ধরে একজন সংবাদকর্মীর সহযোগিতায় নিখোঁজের ৫ দিন পর শিশুটি তার বাবার কোলে তুলে দেয় পুলিশ। এসময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শিশুটির বাবাসহ স্বজনেরা।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের রামপুর বাজারে ফার্নিচার দোকানের সামনে অপরিচিত এক শিশুকে কাঁদতে দেখেন কাঠ মেস্তুরি ইমান হোসেন। এসময় তিনি শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে কিছু শিশু খাদ্য (চিপস ও চকলেট) কিনে দেন এবং রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। কিন্তু শিশুটির অভিভাবকের খোঁজ না পেয়ে তিনি শিশুটিকে নিজ বাসায় নিয়ে যান।
এরপর কাঠ মেস্তুতির ছোট ভাই ইয়াছিন শিশুটির ছবি তুলে অভিভাবকের সন্ধানে ফেসবুকে পোস্ট দেন এবং পোস্টটি তিনি একজন সংবাদকর্মীকে ট্যাগ করেন। বিষয়টি বুধবার সকালে সংবাদকর্মীর নজরে আসলে তিনিও শিশুটির ছবি তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করেন। কিছুক্ষন পর সংবাদকর্মীর ফেসবুকে অপর এক শিশুর নিখোঁজের ছবি দেখতে পান। এসময় তিনি খুঁজে পাওয়া ও নিখোঁজ হওয়া শিশুর মিল দেখে বিষয়টি হাজীগঞ্জ থানার ওসিকে অবহিত করেন।
পরে শিশু নুসরাত আক্তার জান্নাতের নিখোঁজ ডায়েরির তদন্ত কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাঈফ বিন আহাম্মেদ ফেসবুকে পোস্টকৃত ইয়াছিনের মোবাইলে ফোন দেন। এবং তার সহযোগিতায় ইমানের বাড়ি থেকে শিশু জান্নাতকে উদ্ধার করে এবং আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করে শিশুটিকে তার স্বজনদের উপস্থিতিতে বাবা আরমান হোসেনে কোলে তুলে দেন।
এ সময় কাঠ মেস্তুরি ইমান হোসেন, তার ভাই ইয়াছিনসহ সংবাদকর্মী ও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে সবাইকে ধন্যবাদ জানান শিশুটির বাবা আরমান হোসেন।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় শিশু নুসরাত আক্তার জান্নাতকে তার বাবার কোলে তুলে দিয়েছি। এসময় শিশুদের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য বাবা-মা’সহ অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান।