পহেলগাঁওয়ে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারতের শুরু করা ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মোহাম্মদের সদর দপ্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সংগঠনটির প্রধান মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য ও ঘনিষ্ঠ ৪ সহযোগী নিহত হয়েছে। বুধবার (৭ মে) তিনি নিজেই এক বিবৃতির মাধ্যমে এটি স্বীকার করেছেন।
পিটিআইয়ের বরাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মাসুদ আজহার নিহতদের মধ্যে তার বড় বোন ও তার স্বামী, এক ভাতিজা ও তার স্ত্রী, আরও এক ভাগ্নি ও আত্মীয়পরিজনের পাঁচ শিশুর নাম উল্লেখ করেন।
তিনি আরও জানান, তার মা, একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী এবং দুইজন ঘনিষ্ঠ সঙ্গীও ওই হামলায় নিহত হয়েছেন।
ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলাটি বাহাওয়ালপুরের জামিয়া মসজিদ সুবহান আল্লাহ-তে চালানো হয়, যা জইশ-ই-মোহাম্মদের কেন্দ্রীয় কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
বিবিসির খবরেও এই বিবৃতি দিয়ে খবর প্রচার হয়েছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে যা বলছে ভারত
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় জবাব দিতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়, সেটির নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’।
এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রী, কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ জানান, এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের অভ্যন্তরে ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করা’।
পাকিস্তানের ৯টি স্থানে হামলার দাবি ভারতের
আজ এক ব্রিফিংয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি জানান, এই অভিযানে মোট ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়—পাকিস্তানে ৪টি এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ৫টি। পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, সিয়ালকোটের সারজাল ও মাহমুনা জোয়ায় জইশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তইয়বা ও হিজবুল মুজাহিদিনের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলো ছিল।
সিয়ালকোটের সারজাল ঘাঁটি, যা পাকিস্তানের সীমান্ত থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার ভেতরে অবস্থিত, মার্চ ২০২৫-এ জম্মু ও কাশ্মীরে ৪ পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল। মাহমুনা জোয়া ঘাঁটিকে ২০১৬ সালের পাঠানকোট হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি প্রধান হিজবুল মুজাহিদিন ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। একইসঙ্গে মুম্বাই হামলার (২০০৮) পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত মুরিদকে’র ‘মারকাজ তাইবা’ ঘাঁটিও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতশাসিত কাশ্মীরে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে ৪০ জন ভারতীয় সেনাকে হত্যা করে জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম)। ওই হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা তীব্র হয়ে উঠেছিল।