ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম দ্বিতীয় বৃহত্তম কচুয়ার সাচার ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ ধাম পূজা ও সাংস্কৃতিক সংঘের ১৫৮তম রথ উৎসবের প্রথম দিনে হাজারো ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে সাচার পশ্চিম বাজার জগন্নাথ মন্দিরের সামনে থেকে রথযাত্রাটি টেনে পূর্ব বাজারে নিয়ে যায় ভক্তবৃন্দ। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসব রথ যাত্রাকে ঘিরে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আয়োজন কমিটির পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এ উৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বহু ভক্ত সাচার এলাকায় এসে ভীড় জমিয়েছে।
শুক্রবার প্রথম রথে লক্ষাধিক ভক্তবৃন্দের সমাগমে জগন্নাথ ধাম মন্দির প্রাঙ্গনে উৎসবের আমেজ বিরাজ হয়েছে। আগামী ৪ জুলাই শুক্রবার উল্টো রথযাত্রা উৎসবের মধ্য দিয়েই এ রথযাত্রার সমাপ্তি ঘটবে। এ উপলক্ষে সাচার জগন্নাথ ধাম ও সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি বটু কৃষ্ণ দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক বাসুদেব সাহা’র পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে স্থানীয় প্রশাসন,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, প্রায় দেড়শত বছর পূর্বে সাচার বাবু বাড়ির জমিদার গঙ্গা গোবিন্দ সেন ভারতে হিন্দু তীর্থস্থান পুরীতে জগন্নাথ দর্শনে গেলে, জগন্নাথ গঙ্গা গোবিন্দকে দর্শন দেননি। বরং পুরীর দরজা-জানালাগুলো আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যায়। দর্শন লাভে ব্যর্থ হয়ে পরম ধার্মিক গঙ্গা গোবিন্দ সেন দর্শন লাভের আশায় পুরীর বাহিরে আমরন-অনশন শুরু করে দেয়। অনশনের কয়েকদিন অতিবাহিত হলে গঙ্গা গোবিন্দ সেন স্বপ্নাদৃষ্ট হন যে, এ স্থানে জগন্নাথ গঙ্গা গোবিন্দ সেনকে দর্শন না দিয়ে তার সাচারের বাড়ির সম্মুখের দীঘিতে ভাসমান নিম কাঠ আকৃতিতে দর্শন দিবেন। স্বপ্নাদৃষ্ট হয়ে গঙ্গা গোবিন্দ সেন নিজ বাড়ি ফিরে আসেন এবং ক’দিন পর উক্ত দীঘিতে স্নান করার সময় আকস্মিক ভাবে ভাসমান নিম কাঠ আকৃতিতে জগন্নাথ দর্শন লাভ করেন।