ঢাকা 9:39 am, Saturday, 8 November 2025

লাকসাম থেকে নিখোঁজ হওয়া দুই মাসের শিশু মতলবে উদ্ধার

লাকসাম থেকে নিখোঁজ হওয়া দুই মাস বয়সী শিশু ঝরনাকে মতলব পৌরসভার পূর্ব কলাদি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় বৃষ্টি নামের এক সন্তানহারা মাকে আটক করে এলাকাবাসী। শুক্রবার (৭ নভেম্বর)  বিকেলে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশ খবর পেয়ে নিখোঁজ শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সরজমিনে জানা যায়, গাজীপুর বউবাজার এলাকার আনোয়ারের ছেলে পারভেজ (২৭) ছোটকাল থেকেই লাকসাম স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পরিবার নিয়ে বসবাস করে, পেশায় হকার।  দুই মাস পূর্বে জন্ম নেওয়ার শিশু কন্যা ঝরনাকে তার মায়ের কাছ থেকে ৬ নভেম্বর চুরি করে মতলব পৌরসভার পূর্ব কলাদী এলাকায় নিয়ে আসে বৃষ্টি। ছোট্ট শিশু ঝরনাকে কোলে নিয়ে ভবঘুরের মতো ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন মহিলার সন্দেহ হয়। পরে এলাকার হাসান, তামিম, বাবু, সাব্বিরসহ কয়েকজন যুবক শিশু বাচ্চার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে (বৃষ্টি) অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে। সেই সময় স্থানীয়রা শিশু বাচ্চার সহ বৃষ্টিকে আটক রেখে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশকে খবর দেয়।
এদিকে লাকসাম থেকে নিখোঁজ শিশুর খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারলে দ্রুত মতলব দক্ষিণ থানায় এসে যোগাযোগ করে।
নিখোঁজ শিশুর পিতা পারভেজ জানায়, অক্টোবরের ৭ তারিখে বৃষ্টির ৩১ দিন বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়। আমার মেয়ের নিখোঁজের সাথে সাথে তাকেও (বৃষ্টি) রেল স্টেশনে দেখা যায়নি। আমরা বহু স্থানে খোঁজখবর করছিলাম। আমার স্ত্রীর শানু বাচ্চার খোঁজে চট্টগ্রামে রয়েছে। আর আমরা খোঁজ পেয়ে মতলবে এসেছি।
এদিকে শিশু নিয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় বৃষ্টির স্বামী মোঃ সুরুজ মতলবে আসে। কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সুরুজের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, পেশায় সে একজন সুইপার, বৃষ্টি হচ্ছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীকে লাকসাম স্টেশনের পাশে ঘর ভাড়া করে রাখলেও দ্বিতীয় স্ত্রী স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসবাস করত। বাচ্চার মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে ঝরনাকে নিয়ে সে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি নামের মেয়েটি পূর্বে মতলবে বসবাস করত।সেই সময় কখনো মানুষের বাসায় কাজ করে আবার কখনো নৌকায়  মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। নিখোঁজ শিশুর বাবা পারভেজ এবং বৃষ্টির স্বামী সুরুজ একই মায়ের সন্তান হলেও তাদের পিতা দুজন।
শিশু ঝরনার বিষয়ে মতলব দক্ষিন থানার অফিসার ইনচার্জ সালেহ আহমেদ জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে, শিশুটিকে ওর অভিভাবকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কচুয়ায় সহজ পদ্মতিতে আগুন নেভানোর যন্ত্র আবিস্কার করেছে স্থানীয় এক উদ্যোক্তা

লাকসাম থেকে নিখোঁজ হওয়া দুই মাসের শিশু মতলবে উদ্ধার

Update Time : 08:39:41 am, Saturday, 8 November 2025
লাকসাম থেকে নিখোঁজ হওয়া দুই মাস বয়সী শিশু ঝরনাকে মতলব পৌরসভার পূর্ব কলাদি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় বৃষ্টি নামের এক সন্তানহারা মাকে আটক করে এলাকাবাসী। শুক্রবার (৭ নভেম্বর)  বিকেলে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশ খবর পেয়ে নিখোঁজ শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সরজমিনে জানা যায়, গাজীপুর বউবাজার এলাকার আনোয়ারের ছেলে পারভেজ (২৭) ছোটকাল থেকেই লাকসাম স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পরিবার নিয়ে বসবাস করে, পেশায় হকার।  দুই মাস পূর্বে জন্ম নেওয়ার শিশু কন্যা ঝরনাকে তার মায়ের কাছ থেকে ৬ নভেম্বর চুরি করে মতলব পৌরসভার পূর্ব কলাদী এলাকায় নিয়ে আসে বৃষ্টি। ছোট্ট শিশু ঝরনাকে কোলে নিয়ে ভবঘুরের মতো ঘোরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয় কয়েকজন মহিলার সন্দেহ হয়। পরে এলাকার হাসান, তামিম, বাবু, সাব্বিরসহ কয়েকজন যুবক শিশু বাচ্চার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে (বৃষ্টি) অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে। সেই সময় স্থানীয়রা শিশু বাচ্চার সহ বৃষ্টিকে আটক রেখে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশকে খবর দেয়।
এদিকে লাকসাম থেকে নিখোঁজ শিশুর খোঁজ পাওয়ার বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারলে দ্রুত মতলব দক্ষিণ থানায় এসে যোগাযোগ করে।
নিখোঁজ শিশুর পিতা পারভেজ জানায়, অক্টোবরের ৭ তারিখে বৃষ্টির ৩১ দিন বয়সী শিশুর মৃত্যু হয়। আমার মেয়ের নিখোঁজের সাথে সাথে তাকেও (বৃষ্টি) রেল স্টেশনে দেখা যায়নি। আমরা বহু স্থানে খোঁজখবর করছিলাম। আমার স্ত্রীর শানু বাচ্চার খোঁজে চট্টগ্রামে রয়েছে। আর আমরা খোঁজ পেয়ে মতলবে এসেছি।
এদিকে শিশু নিয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় বৃষ্টির স্বামী মোঃ সুরুজ মতলবে আসে। কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সুরুজের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, পেশায় সে একজন সুইপার, বৃষ্টি হচ্ছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীকে লাকসাম স্টেশনের পাশে ঘর ভাড়া করে রাখলেও দ্বিতীয় স্ত্রী স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসবাস করত। বাচ্চার মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে ঝরনাকে নিয়ে সে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি নামের মেয়েটি পূর্বে মতলবে বসবাস করত।সেই সময় কখনো মানুষের বাসায় কাজ করে আবার কখনো নৌকায়  মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। নিখোঁজ শিশুর বাবা পারভেজ এবং বৃষ্টির স্বামী সুরুজ একই মায়ের সন্তান হলেও তাদের পিতা দুজন।
শিশু ঝরনার বিষয়ে মতলব দক্ষিন থানার অফিসার ইনচার্জ সালেহ আহমেদ জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে, শিশুটিকে ওর অভিভাবকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।