কাতারে আজ থেকে শুরু হচ্ছে শেষ আটের লড়াই। রাত ৯টায় ব্রাজিলের মুখোমুখি হচ্ছে ক্রোয়েশিয়া। জমজমাট লড়াইয়ের অপেক্ষায় বিশ্ববাসী।
অতীত রেকর্ড বলছে, এখন পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে কোনো ম্যাচ হারেনি ব্রাজিল। তবে ব্রাজিল শিবিরে শঙ্কা আরেকটি জায়গায়। বিশ্বকাপে ইউরোপ বাধা টপকানোর ইতিহাস নেই ব্রাজিলের।
ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে ব্রাজিলকে আজ খুলতে হবে ইউরোপের গেরো। ২০০২ সালে সবশেষ বিশ্বকাপ জেতার পর প্রতি আসরেই ইউরোপের কোনো দলের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে ব্রাজিলকে।
এর মধ্যে তিনবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। ২০০৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে, ২০১০ আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের কাছে এবং ২০১৮ বিশ্বকাপের শেষ আটে বেলজিয়ামের কাছে হেরেছিল ব্রাজিল।
ঘরের মাঠে ২০১৪ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে তারা পেয়েছিল লাতিন প্রতিপক্ষ। সেবার কলম্বিয়ার বিপক্ষে জিতলেও সেমিফাইনালে ইউরোপের দল জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে লজ্জায় গুটিয়ে যেতে হয় ব্রাজিলকে।
ইতিহাসের এ অভিশপ্ত ধারা এবার বদলে দিতে বদ্ধপরিকর তিতের দল।
কোয়ার্টার-ফাইনালের এই ম্যাচের আগে দুই দলের আরও কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো।
* একমাত্র দল হিসেবে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরে খেলেছে ব্রাজিল। সবশেষ ২০০২ সালে শিরোপা জেতার পর আর ফাইনালে যেতে পারেনি তারা।
* এ নিয়ে বিশ্বকাপে ষষ্ঠ আসর খেলছে ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বসেরার মঞ্চে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য চার বছর আগে রানার্সআপ হওয়া। রাশিয়া আসরের ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ৪-২ গোলে হেরে যায় তারা।
* বিশ্বকাপে নিজেদের সবশেষ ১১ ম্যাচের ১০টিতে অপরাজিত ক্রোয়েশিয়া। তাদের একমাত্র হার ফ্রান্সের বিপক্ষে, ২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে (৪-২)।
* এবার দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে অপরাজিত থেকে কাতারে আসে ব্রাজিল। গ্রুপপর্বে প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর নিজেদের শেষ ম্যাচে ১-০ গোলে হেরে যায় তারা ক্যামেরুনের কাছে।
* এবার নিয়ে সবশেষ আট বিশ্বকাপেই অন্তত কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলছে ব্রাজিল। এর মধ্যে ১৯৯৪ ও ২০০২ সালে শিরোপা ঘরে তোলে তারা। ১৯৯৮ সালে হয়েছিল রানার্সআপ। ২০০২ সালের পর কেবল একবার সেমিফাইনালে খেলেছে ব্রাজিল। ঘরের মাঠে ২০১৪ সালে জার্মানির কাছে সেবার তারা হারে ৭-১ গোলে।
* এবারের আসরে এখন পর্যন্ত খেলা চার ম্যাচের মধ্যে কেবল একটিতে ৯০ মিনিটের মধ্যে জিতেছে ক্রোয়েশিয়া। গ্রুপপর্বে কানাডার বিপক্ষে পায় ৪-১ গোলের জয়। মরক্কো ও বেলজিয়ামের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে দলটি। শেষ ষোলোয় জাপানের বিপক্ষে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় ১-১ সমতায় শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে জেতে ৩-২ ব্যবধানে।
* চোট কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে জালের দেখা পান নেইমার। শেষ ষোলোয় দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ৪-১ গোলে জেতা ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন ব্রাজিলের এই তারকা। ২০১৪ সালে গ্রুপ পর্বে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-১ গোলে হারানোর ম্যাচে দুটি গোল করেছিলেন তিনি।
* বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিনবার টাইব্রেকারের পরীক্ষা দিতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে। প্রতিবারই সফল হয়েছে তারা। ২০১৮ সালে শেষ ষোলোয় ডেনমার্কের পর কোয়ার্টার-ফাইনালে স্বাগতিক রাশিয়াকে হারায় দলটি। এর পর গত সোমবার একইভাবে জেতে তারা জাপানের সঙ্গে।
* ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আগের চার দেখায়ই অপরাজিত ব্রাজিল। জিতেছে তিনটি, আরেকটি ড্র।
* বিশ্বকাপে ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ হয়েছে দুবার। ২০০৬ সালে ১-০ গোলে এবং ২০১৪ সালে ৩-১ গোলে জেতে ব্রাজিল।