ফরিদগঞ্জে স্বামীর বন্ধু কর্তৃক গৃহবধু ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। প্রতারণা পূর্বক রাতে ঘরে আশ্রয় চেয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে বলে গৃহবধু অভিযোগ করেছেন। নির্যাতনের শিকার গৃহবধু কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন।
উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ওই ঘটনায় শনিবার রাতে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, চরমথুরা গ্রামের মুনছুর খানের ছেলে মুছা খান রণি (২৫)। গৃহবধুর স্বামীর সাথে ছোট বেলায় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। এ সুবাদে বাড়িতে প্রায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল। দুই বছর আগে বন্ধু বিয়ে করেন। বিয়ের পরও বাড়িতে যাতায়াত করত মুছা খান। প্রায় এক বছর আগে বন্ধু প্রবাসে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। তখন তার পাশে থেকে সহায়তা করে মুছা।
এরপর, মাঝেমধ্যে বন্ধুর বাড়ির খোঁজ খবর নিতো ও খাওয়া দাওয়া করতো। গৃহবধুকে বলেছে বন্ধুর অনুপস্থিতিতে আপনি আমার মা-বোনের মতো। এতে, গৃহবধু ও তার স্বামীর বিশ্বাস আরও বেড়ে যায়।
১৪ই আক্টোবর রাত আনুমানিক ৯ ঘটিকা। মুছা, প্রবাসী বন্ধুকে ইন্টারনেটের সাহায্যে জানায়, পূর্বের একটি মামলায় পুলিশ তার বাড়ি হানা দিয়েছে। রাতে সে বন্ধুর বাড়ি থাকতে চায়। এতে, স্বামী রাজি হয়ে স্ত্রীকে জানালে তিনি মুছাকে বাড়ি থাকেত দেন। রাতে খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ার ভান ধরে মুছা।
গৃহবধু ৮ মাসের সন্তান বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মুছা রাতে কৌশলে মাঝের দরজা খুলে অপর কক্ষে যায়। সে গৃহবধুর মুখ বেঁধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। শত কান্না কাটিতেও ছাড় পাননি তিনি। এরপর, গৃহবধুর বাঁধন খুলে পায়ে ধরে ক্ষমা চায় ও কাউকে না জানানোর অনুরোধ করে। কিন্তু, গৃহবধুর কান্না থামছে না। এক পর্যায়ে, মুছা রাতেই দরজা খুলে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। পরদিন সকালে তার মা কল দিলে সব ঘটনা মাকে জানায়। এতে, ক্ষুব্ধ মা জামাতাকে জানালে তিনি অভয় দিয়ে থানায় মামলা করতে বলেন।
এদিকে, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শনিবার গভীর রাতে ১০ জনের ফোর্স নেমে পড়ে। তারা রাত প্রায় চার ঘটিকায় মুছাকে আটক করতে সক্ষম হয়।
রোববার দুপুরে পুলিশ থানায় গৃহবধুর অভিযোগ পুনরায় শুনে। এরপর, মুছাকে জিজ্ঞেস করলে হুবহু স্বীকারোক্তি দেয়। কিছুক্ষণ পর, গৃহবধুর সামনে হাজির করলে তিনি দেখেই মুছার গালে সজোরে থাপ্পর বসিয়ে দিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। চিৎকার করে বলেন, তুই আমাকে মা-বোন বলেছিলি। মা-বোনকে তুই ধর্ষণ করিস নাকি।
এ ব্যপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম রোববার বিকালে বলেন, প্রাথমিকভাবে বুঝা যাচ্ছে অভিযোগটি নিখাদ। এতে, সন্দেহ থাকার সুযোগ খুঁজে পাচ্ছি না। অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে মুছাকে আইনের আওতায় সোপর্দ করা হবে। তিনি জানান, এ ব্যপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।