নিজস্ব প্রতিনিধি॥
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সময়সূচী অনুযায়ী কচুয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হতে পারে ২৫ মে। সেই হিসেবে ভোটের বাকী এখনো প্রায় ২ মাসের ও কম। এরই মধ্যে উপজেলায় নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে ও নির্বাচনের মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে। দোকানপাট ও পাড়া মহল্লায় আলোচনা চলছে নির্বাচনকে ঘিরে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী মাঠে দেখা গেলেও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সমর্থন নিয়ে উপজেলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদীকা ফারহানা পারভীন।
গত ২৯ মার্চ শুক্রবার উপজেলার শ্রীরামপুরে ফারহানা পারভীনের নিজ বাড়িতে এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে ইফতার পার্টিতে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীতা ঘোষণা করেন তিনি। ঘোষণা পর থেকেই ৯, ১০, ১১ তিনটি ইউনিয়নের মহীউদ্দীন খান আলমগীরের প্রার্থী হিসেবে তোরজোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ বিপত্তি বাধে একটি অনাকাঙ্গিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সাক্ষাতকারে ফারহানা পারভীন বলেন- আমি উপজেলা যুবলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা। চতুর্থ বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। আমার ওয়ার্ডের বশির মেম্বারের কাছে টাকা পাওনার বিষয়টি আমার যুবলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নামজুল আলম স্বপনকে জানিয়েছি। তিনি বশির মেম্বারকে আমার টাকাগুলো ফেরত দিতে বলেছেন। তারপরেও মেম্বার গড়িমসি শুরু করে টাকা দেই-দিচ্ছি বলে আমাকে ঘুড়াতে থাকে। গত মঙ্গলবার ইফতারের পর মেম্বার আমাকে ও আমার স্বামীকে খবর দেয় তার কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য। আমি ও আমার স্বামী তার কথা অনুযায়ী তার কার্যালয়ে যাই। কথা বলার একপর্যায়ে মেম্বার বশির আমাকে ও আমার স্বামী কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার গায়ে বশির মেম্বার হাত দিলে মেম্বার ও মেম্বারের সাথে থাকা লোকজনদের সাথে আমার স্বামী বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে এলাকার মুরুব্বীরা এসে আমাকে ও আমার স্বামীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ঘন্টা খানিক পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পাই মেম্বার নাকি আমাদের হামলায় হাসপাতালে ভর্তি। এই নাটক রাতভর চলতে থাকে। পরদিন সকাল বেলা কচুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে আমাকে ও আমার স্বামীকে কচুয়া থানায় আসার জন্য বলে। আমি ওসির সম্মানার্থে থানায় হাজির হই। একঘন্টা বসে থাকার পর ওসি বলে, আপনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি বললাম কিসের মামলা, তিনি বললেন জনপ্রতিনিধির উপর আপনি হামলা করেছেন। আমি বললাম মেম্বার আমাকে লাঞ্চিত করলো উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা করলেন। আমি বললাম আপনি তদন্ত করুন। তিনি বললেন তদন্তের সময় নেই। এখনি আপনাকে চাঁদপুর কোর্টে পাঠানো হবে। এই বলে দ্রুত আমাকে একজন এসআই ও মহিলা কনস্টেবল দিয়ে চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করে। পরে আমি বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাই।
তিনি আরো বলেন- আমার প্রশ্ন আমি উপজেলার যুবলীগের নেত্রী, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। আমার যদি কোন অন্যায় হয়ে থাকে আমার সংগঠনের সভাপতি ও সংগঠনের সম্পাদক মন্ডলীর নেতারা আছে, তারা আমার বিচার করবে তারা আমার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে। কি এমন অন্যায় করলাম তদন্ত ছাড়াই অল্প সময়ে হুলিয়া জাড়ি করে আমাকে কোর্টে পাঠানো হলো। কচুয়া থানার ওসি কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করলো দলের সুনাম ক্ষুন্ন করলো এটা আপনাদের সাংবাদিকদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও কচুয়াবাসীর কাছে প্রশ্ন ? ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়াই কি আমার কাল হলো ? এই থেকেই কি প্রতীয়মান হয় না, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার নেতা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর স্যারের অনুগত হয়ে যতদিন বাঁচবো রাজনীতি করে যাবো।
কচুয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত দুই দিন ধরে কচুয়াতে যে ঘটনা ঘটে গেল সত্যিই যুবলীগ নেত্রী ফারহানা পারভীন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষানীত হয়ে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে তাকে নির্বাচন থেকে সড়ানোর জন্য।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য বশির উল্লাহ জানান, আমার উপর হামলা করেছে ফারহানা পারভীন ও তার স্বামী। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে কচুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করি।
কচুয়া থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, জনপ্রতিনিধি (ইউপি সদস্য) বশির উল্লাহকে মারধরের ঘটনায় স্বামী স্ত্রীকে আটক করে চাঁদপুর চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। এই বিষয়ে আর কোন কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি ।