এর আগে পদত্যাগ করেছেন ইসরাইলি সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভার। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে ইসরাইলের অভ্যন্তরণে ঢুকে হামলা চালায়। ওই হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন।
এবার কিছু কমান্ডারসহ পদত্যাগ করছেন ইসরাইলি সেনাপ্রধান হারজি হালেভি। বেসরকারি প্রচারমাধ্যম চ্যানেল টুয়েলভ-এর বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভি কিছু দিনের মধ্যে পদত্যাগ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত সপ্তাহে সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভার পদত্যাগের পর এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার বিষয়ে আগাম তথ্য দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দায়ী সকল কর্মকর্তাকে চাকরি ছাড়তে হবে, আর সেটা চিফ অব স্টাফ থেকে শুরু করে (সবাইকেই)।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমনকি অনেক অফিসার ‘যুদ্ধবিষয়ক তদন্তের প্রস্তুতির জন্য’ আইনি প্রতিনিধিত্ব চেয়েছেন।
এর আগে গত সোমবার ইসরাইলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। হামাসের গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে চালানো হামলার ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগের এই ঘোষণা দেন তিনি।
অবশ্য নতুন গোয়েন্দাপ্রধান নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন বলে একই দিন ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আইনি ইঙ্গিত পাওয়ার পর সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র লিখেছিলেন মেজর জেনারেল আহারন হালিভা। মূলত তদন্ত কমিটি গঠিত হলে তার সমস্ত বিবৃতিও সেখানে উপস্থাপন করা হবে বলে ধারণা পাওয়ার পরই তিনি পদত্যাগ করেন।
চ্যানেল টুয়েলভ বলছে, ‘অদূর ভবিষ্যতে অবসর নিতে বাধ্য করা হবে’ এমন কমান্ডারদের মধ্যে আহারন হালিভাই প্রথম। এছাড়া ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের প্রধান রনেন বার-সহ আরও বেশ কয়েকজন অফিসারও এই তালিকায় রয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, মেজর জেনারেল ইয়ারন ফিঙ্কেলম্যান এবং মেজর জেনারেল এলিজার টোলেদানোসহ অনেক কমান্ডারকে যাদের একসময় সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হয়েছিল, তাদেরকেও এখন ‘ব্যর্থতার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, রাজনৈতিক মহল এখন আশা করছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইয়াল জামির হয়তো হালেভির স্থলাভিষিক্ত হবেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের শত শত যোদ্ধা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে ঢুকে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। তেল আবিব দাবি করেছে, ওই হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত এবং ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে হামাস।
অপরদিকে হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজা উপত্যকায় জল, স্থল ও আকাশ পথে হামলা চালিয়ে আসছে। সপ্তম মাসে পৌঁছানো ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর এই যুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন মানবিক সংকট তৈরি করেছে। যুদ্ধে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।