ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আবারও রাফায় হামলা শুরু করেছে ইসরাইল : বিরোধিতা বাইডেন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪
  • ৬৩ Time View

হামাস যুদ্ধবিরতির খসড়া চুক্তি মেনে নিয়েছে। তবে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এই চুক্তিতে ইসরায়েলের শর্ত মানা হয়নি দাবি করে আবারও রাফায় হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে রাফায় অভিযানের বিরোধিতা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।

হোয়াইট হাউজের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাইডেন ফোনকলে ‘রাফায় অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার বিষয়টি আবারও পরিষ্কার করেছেন।’ উত্তর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলার পর সেখানকার হাজারো বাসিন্দা দক্ষিণের রাফায় আশ্রয় নেন। সেখানে এ মুহূর্তে ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি অবস্থান করছেন, যাদের বেশিরভাগই খোলা আকাশের নিচে তাঁবু খাটিয়ে বাস করছেন।

রাফায় স্থল অভিযান শুরুর আগে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেওয়ার একটি গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বারবার ইসরায়েলকে তাগাদা দিলেও এখনো দেশটি এই অনুরোধ রাখেনি।

সোমবার হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কার্বি জানান, রাফার বেসামরিক মানুষ ঝুঁকিতে থাকবে এরকম কোনো স্থল অভিযানকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। এর আগে পর্যন্ত হোয়াইট হাউজ বলছিল, রাফায় ‘বড় ধরনের’ অভিযানের বিরোধিতা করছে ওয়াশিংটন।

বিশ্লেষকদের মতে, এবার আরও কড়া ভাষায় ইসরাইলকে হুশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন। বাইডেন প্রশাসন রাফা অভিযানের বিকল্প হিসেবে মিশর-গাজা সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও সুনির্দিষ্টভাবে হামাসের নেতাদের বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তাব দিয়েছে।

কিন্তু নেতানিয়াহু রাফা অভিযানকে অত্যাবশ্যক বলে দাবি করেছেন। তার মতে, হামাসকে নির্মূল করতে এই অভিযান জরুরি, কারণ রাফায় হামাসের অনেক যোদ্ধা লুকিয়ে আছেন। নেতানিয়াহু আরও দাবি করেছেন, রাফাহ শহরে হামাসের চারটি ব্যাটেলিয়ন রয়েছে, যাদেরকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত বিজয় অর্জন হবে না।

জন কার্বি আরও জানান, ফোনকলে বাইডেন রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, গাজায় আটকে থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের জীবনকে সুরক্ষিত করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মতি দেওয়া।

‘আমরা জিম্মিদের মুক্ত করতে চাই। আমরা ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চাই এবং মানবিক সহায়তা বাড়াতে চাই’, যোগ করেন কার্বি। তিনি বাইডেনের বরাত দিয়ে বলেন, চুক্তিতে সব পক্ষ সম্মত হলে তা হবে ‘সবচেয়ে ভালো ফলাফল’। গতকাল সোমবার হামাস চুক্তিতে সম্মতি দেওয়ার পর ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) রাফাহ পূর্ব মহল্লাগুলো থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর বেশ কয়েক দফা বিমানহামলা চালায় আইডিএফ।

কার্বি জানান, সোমবার নেতানিয়াহুকে কল করার মূল কারণ হল সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি, রাফাহ অভিযান ও গাজায় প্রবেশের কেরেম শালোম ক্রসিং বন্ধ নিয়ে আলোচনা করা। গত সপ্তাহান্তে এই ক্রসিং এর কাছে অবস্থিত সামরিক চৌকিতে হামাসের রকেট হামলায় চার আইডিএফ সেনা নিহত হয়। গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশের মূল পথ হল এই কেরেম শালোম ক্রসিং।

কার্বি জানান, বাইডেন-নেতানিয়াহু ৩০ মিনিট কথা বলেন। এ সময় নেতানিয়াহু অবিলম্বে কেরেম শালোম ক্রসিং আবারও খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মহান বিজয় দিবস পালনকল্পে হাজীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর যুবদলের প্রস্তুতি সভা

আবারও রাফায় হামলা শুরু করেছে ইসরাইল : বিরোধিতা বাইডেন

Update Time : ০১:৫০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

হামাস যুদ্ধবিরতির খসড়া চুক্তি মেনে নিয়েছে। তবে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এই চুক্তিতে ইসরায়েলের শর্ত মানা হয়নি দাবি করে আবারও রাফায় হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে রাফায় অভিযানের বিরোধিতা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।

হোয়াইট হাউজের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাইডেন ফোনকলে ‘রাফায় অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার বিষয়টি আবারও পরিষ্কার করেছেন।’ উত্তর গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলার পর সেখানকার হাজারো বাসিন্দা দক্ষিণের রাফায় আশ্রয় নেন। সেখানে এ মুহূর্তে ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি অবস্থান করছেন, যাদের বেশিরভাগই খোলা আকাশের নিচে তাঁবু খাটিয়ে বাস করছেন।

রাফায় স্থল অভিযান শুরুর আগে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেওয়ার একটি গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বারবার ইসরায়েলকে তাগাদা দিলেও এখনো দেশটি এই অনুরোধ রাখেনি।

সোমবার হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কার্বি জানান, রাফার বেসামরিক মানুষ ঝুঁকিতে থাকবে এরকম কোনো স্থল অভিযানকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। এর আগে পর্যন্ত হোয়াইট হাউজ বলছিল, রাফায় ‘বড় ধরনের’ অভিযানের বিরোধিতা করছে ওয়াশিংটন।

বিশ্লেষকদের মতে, এবার আরও কড়া ভাষায় ইসরাইলকে হুশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন। বাইডেন প্রশাসন রাফা অভিযানের বিকল্প হিসেবে মিশর-গাজা সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও সুনির্দিষ্টভাবে হামাসের নেতাদের বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তাব দিয়েছে।

কিন্তু নেতানিয়াহু রাফা অভিযানকে অত্যাবশ্যক বলে দাবি করেছেন। তার মতে, হামাসকে নির্মূল করতে এই অভিযান জরুরি, কারণ রাফায় হামাসের অনেক যোদ্ধা লুকিয়ে আছেন। নেতানিয়াহু আরও দাবি করেছেন, রাফাহ শহরে হামাসের চারটি ব্যাটেলিয়ন রয়েছে, যাদেরকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত বিজয় অর্জন হবে না।

জন কার্বি আরও জানান, ফোনকলে বাইডেন রাফাহ অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, গাজায় আটকে থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের জীবনকে সুরক্ষিত করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মতি দেওয়া।

‘আমরা জিম্মিদের মুক্ত করতে চাই। আমরা ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চাই এবং মানবিক সহায়তা বাড়াতে চাই’, যোগ করেন কার্বি। তিনি বাইডেনের বরাত দিয়ে বলেন, চুক্তিতে সব পক্ষ সম্মত হলে তা হবে ‘সবচেয়ে ভালো ফলাফল’। গতকাল সোমবার হামাস চুক্তিতে সম্মতি দেওয়ার পর ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) রাফাহ পূর্ব মহল্লাগুলো থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর বেশ কয়েক দফা বিমানহামলা চালায় আইডিএফ।

কার্বি জানান, সোমবার নেতানিয়াহুকে কল করার মূল কারণ হল সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি, রাফাহ অভিযান ও গাজায় প্রবেশের কেরেম শালোম ক্রসিং বন্ধ নিয়ে আলোচনা করা। গত সপ্তাহান্তে এই ক্রসিং এর কাছে অবস্থিত সামরিক চৌকিতে হামাসের রকেট হামলায় চার আইডিএফ সেনা নিহত হয়। গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশের মূল পথ হল এই কেরেম শালোম ক্রসিং।

কার্বি জানান, বাইডেন-নেতানিয়াহু ৩০ মিনিট কথা বলেন। এ সময় নেতানিয়াহু অবিলম্বে কেরেম শালোম ক্রসিং আবারও খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।