গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির পরে সরেজমিন ওই সড়কের নায়েরগাঁও বাজার এলাকায় গিয়ে দেখাগেছে প্রায় ৩শ’ গজ দৈর্ঘ্যরে এই জলাবদ্ধতা। বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার উচ্চতা আরো বাড়ে।
সড়কের পূর্ব পাশে বসতবাড়ি ও পাকা ভবন এবং পশ্চিমে বসতবাড়িসহ বড় একটি পুকুর। এসব পাকা ভবন ও পুকুর থেকে পানি নিষ্কাশনের কোন ধরণের ব্যবস্থা নেই। বরং বৃষ্টির পানিসহ ওইসব বাড়ির ব্যবহৃত সকল ধরণের পানি ও ময়লা আবর্জনা এই স্থান দিয়ে বের হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
ওই সড়কে ঢাকা-মতলব চলাচলকারী মতলব এক্সপ্রেসের চালক আমজাদ হোসেন বলেন, এই সড়কটি মেরামতের স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া দরকার। গত দুই বছর আমরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। মাঝে মাঝে আমাদের কাছ থেকে স্থানীয়রা ১শ’ টাকা করে চাঁদা নিয়ে মেরামত করে।
প্রাইভেট গাড়ী চালক এমরান হোসেন বলেন, এখানে পুকুর থাকাতে জলবাদ্ধতা তৈরী হয়। প্রায় সময় চলতে গিয়ে আমাদের গাড়ী আটকে নষ্ট হয়ে যায়। আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি। কারণ এই সড়কে দিন ও রাতে যাত্রীবাহী বাস, আন্ত:জেলা মালবাহী ট্রাক ও অসংখ্য ছোট যানবাহন চলাচল করে। সময় লাগবের জন্য ঢাকার সাথে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালি জেলার অনেক যানবাহন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছে।
সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক কামরুল হাসান বলেন, বিগত দুই বছর এখান দিয়ে চলতেগেলে গাড়ী বন্ধ হয়ে যায়। আমরা চালকরা একবার ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে মেরামত করেছি। এখন এই পুকুরের পানি আবারও সড়কে। আমাদের এই দুর্ভোগের বিষয়টি কারা দেখবে এটাই হচ্ছে প্রশ্ন।
নায়েরগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল রানা, নেছার উদ্দিন ও সেলিম দেওয়ান বলেন, বাজার সংলগ্ন আঞ্চলিক সড়কে জলাবদ্ধতা। যে কারণে যানবাহন বাজারের সড়ক দিয়ে চলাচল করে। যার ফলে বাজারের সড়কটিও ক্ষতিগ্রস্ত এবং যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা ব্যবসায়ীরাও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মামুন জানান, বাজারের সড়ক উন্নয়ন কাজের জন্য আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরার দুইবার আবেদন করেছি। বরাদ্দ পেলে কাজ করা যাবে। আঞ্চলিক সড়কের কাজ করবে সড়ক বিভাগ। স্থানীয়ভাবে সহযোগিতা লাগলে করা হবে।
সওজ সড়ক বিভাগ চাঁদপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, চাঁদপুর বাবুরহাট-মতলব-পেন্নাই আঞ্চলিক সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম সড়ক। এই সড়কের নায়েরগাঁও বাজার অর্থাৎ আমাদের সড়কের ২৬তম কিলোমিটার স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে চলাচল খুবই সমস্যা হচ্ছে। এই স্থানটি পূর্বেও আমরা মেরামত করেছি। বর্ষা ও বৃষ্টিতে পাশের পুকুরের পানি সড়কে উঠে যাওয়ার কারণে এই পরিস্থিতি হয়। পুকুরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলে আমরা দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নিতে পারবো। তাহলে আর দুর্ভোগ থাকবে না।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা বলেন, নায়েরগাঁও বাজারের সড়কের জলাবদ্ধতার দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করছি। সেখানে আমাদের কিছু খাস জমি আছে। সেগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করতে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দিয়েছি। জেলা প্রশাসন থেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দেয়া হলে উচ্ছেদ অভিযান করা যাবে এবং সেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। দুর্ভোগ কমাতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত।