ঢাকা 11:00 pm, Tuesday, 28 October 2025

হাতিয়া থেকে চেয়ারম্যান ঘাট শিঘ্রই ফেরি সার্ভিস চালু হবে-নৌ উপদেষ্টা

ছবি-ত্রিনদী

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নদী ঘাটসমূহ যেন দখলমুক্ত থাকে এবং জনগণের সম্পদ যাতে কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতার ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত না হয়— এমন আহ্বান জানিয়েছেন নৌ পরিবহণ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলের অনেক নেতা ঘাট দখল করে রেখেছে, যেন সেটি তাদের নিজস্ব সম্পত্তি। এটি আর চলতে দেওয়া যাবে না। আপনারা সবাই মিলে ঘাট দখল প্রতিহত করবেন। ঘাট জনগণের সম্পদ, এটি জনগণের জন্যই ব্যবহার করতে হবে। এই রুটে খুব শিগগিরই ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নলচিরা ঘাট পরিদর্শন শেষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেন।

নৌ উপদেষ্টা আরও বলেন, এর আগে আমরা এখানে আসতে পারিনি, কাজও শুরু করতে পারিনি। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘাট দখল করে রেখেছিলেন, যার কারণে নদী বন্দর ঘোষণার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন বিলম্বিত হয়েছে। কিন্তু এখন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের উন্নয়ন ও জনস্বার্থে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে। এই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের জন্য ঘাটগুলো দখলমুক্ত রাখা জরুরি।

তিনি দ্বীপবাসীর উদ্দেশে বলেন, এই ঘাট আপনাদের, দেশের সম্পদ আপনাদের। তাই ঘাট যেন কোনোভাবে দখল না হয়, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে।

ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, নলচিরা–চেয়ারম্যান ঘাট রুটে ফেরি সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তার দায়িত্বকালেই এই রুটে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, হাতিয়ার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি— মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে স্থায়ী ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফেরি সার্ভিস চালু হলে হাতিয়া থেকে মূল ভূখণ্ডে যাতায়াত অনেক সহজ হবে। এর মাধ্যমে দ্বীপবাসীর জীবনমান উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাহেদুল আলম, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন যতন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

সভায় বক্তারা ঘাট দখলমুক্ত রাখার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ফেরি সার্ভিস চালু হলে হাতিয়া দ্বীপের দীর্ঘদিনের যোগাযোগ সংকট দূর হবে এবং স্থানীয় অর্থনীতি চাঙা হবে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নলচিরা ঘাটে জোয়ার-ভাটার কারণে নৌযান চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ফেরি সার্ভিস চালু হলে শুধু যাত্রী নয়, পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাও আরও উন্নত হবে।

তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকারের ঘোষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাতিয়ার উন্নয়ন অগ্রযাত্রা আরও বেগবান হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

শাহরাস্তিতে আইনশৃঙ্খলা ও মাসিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

হাতিয়া থেকে চেয়ারম্যান ঘাট শিঘ্রই ফেরি সার্ভিস চালু হবে-নৌ উপদেষ্টা

Update Time : 08:33:24 pm, Tuesday, 28 October 2025

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নদী ঘাটসমূহ যেন দখলমুক্ত থাকে এবং জনগণের সম্পদ যাতে কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতার ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত না হয়— এমন আহ্বান জানিয়েছেন নৌ পরিবহণ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলের অনেক নেতা ঘাট দখল করে রেখেছে, যেন সেটি তাদের নিজস্ব সম্পত্তি। এটি আর চলতে দেওয়া যাবে না। আপনারা সবাই মিলে ঘাট দখল প্রতিহত করবেন। ঘাট জনগণের সম্পদ, এটি জনগণের জন্যই ব্যবহার করতে হবে। এই রুটে খুব শিগগিরই ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নলচিরা ঘাট পরিদর্শন শেষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেন।

নৌ উপদেষ্টা আরও বলেন, এর আগে আমরা এখানে আসতে পারিনি, কাজও শুরু করতে পারিনি। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘাট দখল করে রেখেছিলেন, যার কারণে নদী বন্দর ঘোষণার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন বিলম্বিত হয়েছে। কিন্তু এখন অন্তর্বর্তী সরকার দেশের উন্নয়ন ও জনস্বার্থে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে। এই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের জন্য ঘাটগুলো দখলমুক্ত রাখা জরুরি।

তিনি দ্বীপবাসীর উদ্দেশে বলেন, এই ঘাট আপনাদের, দেশের সম্পদ আপনাদের। তাই ঘাট যেন কোনোভাবে দখল না হয়, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে।

ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, নলচিরা–চেয়ারম্যান ঘাট রুটে ফেরি সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তার দায়িত্বকালেই এই রুটে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, হাতিয়ার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি— মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে স্থায়ী ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফেরি সার্ভিস চালু হলে হাতিয়া থেকে মূল ভূখণ্ডে যাতায়াত অনেক সহজ হবে। এর মাধ্যমে দ্বীপবাসীর জীবনমান উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাহেদুল আলম, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন যতন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

সভায় বক্তারা ঘাট দখলমুক্ত রাখার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ফেরি সার্ভিস চালু হলে হাতিয়া দ্বীপের দীর্ঘদিনের যোগাযোগ সংকট দূর হবে এবং স্থানীয় অর্থনীতি চাঙা হবে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নলচিরা ঘাটে জোয়ার-ভাটার কারণে নৌযান চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ফেরি সার্ভিস চালু হলে শুধু যাত্রী নয়, পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাও আরও উন্নত হবে।

তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকারের ঘোষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাতিয়ার উন্নয়ন অগ্রযাত্রা আরও বেগবান হবে।