বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কচুয়া উপজেলা শাখার সাবেক শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে ৮০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। সেচ্ছাচারিতা ও টাকা আত্মসাতের বিষয় নিয়ে বর্তমান উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে,উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু মুসা, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সহ-সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, দপ্তর সম্পাদক উজ্জ্বল কৃষ্ণ মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আকবর হোসেনসহ বিভিন্ন পদে নেতৃবৃন্দ দায়িত্বরত থাকাকালীন পারস্পরিক যোগসাজসে সমিতির অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়ম করেছে। বর্তমানে সমিতির নামে কচুয়া বাজারে ২ টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বৃহৎ আকারের ২টি মার্কেট বিদ্যমান যার আয় ব্যয় সমিতির নিয়ন্ত্রণে হতো। এর মধ্যে দক্ষিন বাজারের ডাক বাংলো সংলগ্ন মার্কেটে প্রায় ৫১ শতক জায়গায় ৩০ টি দোকানঘর এবং মধ্য বাজারে ২,৮৭ শতক জায়গায় ২ টি দোকান আছে। বিগত সময়ের দোকান ভাড়ার অগ্রীম জামানত ও মাসিক আদায়কৃত ভাড়ার কোন হিসাব তারা সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা করেনি এবং মার্কেটের আয় ব্যয়ের হিসাব শিক্ষকদেরকে কখনোই অবগত করেনি।
বিগত সময়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রায় ৫৩৯ জন শিক্ষকের মধ্যে তাদের পছন্দের মাত্র ৩৯ জন শিক্ষককে বিদায় দিয়েছেন। প্রায় ৫০০ জন শিক্ষককে এখনও বিদায় দেয়া হয়নি। প্রত্যাশিত শিক্ষকদের বিদায় দিতে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। অগ্রীম জামানত প্রায় ৩৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা (যা দোকানদারদের ফেরতযোগ্য) গ্রহন করলেও সেই টাকাও বর্তমানে সমিতির ব্যাংক হিসাবে গচ্ছিত নেই। বিগত সময়ে দোকানগুলোর তেমন কোন সংস্কার/উন্নয়ন না করায় প্রায় প্রতিটি দোকানের চালা থেকে পানি পরে। তাদের সময়ে ভূমি উন্নয়ন কর ও পৌর কর বাবদ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বকেয়া রাখে গেছে। আপাত দৃষ্টিতে উক্ত কমিটি বিগত সময়ে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সাধারন শিক্ষকগণের দাবীর প্রেক্ষিতে বর্তমান নির্বাচিত কমিটি বহুবার বিগত সময়ের আয়- ব্যয় হিসাব দাখিলের জন্য পূর্ববর্তী কমিটিকে অনুরোধ করেন। তারা বিষয়টি স্বেচ্ছায় এড়িয়ে যান। যা কচুয়ার প্রায় ১২০০ শিক্ষকের সাথে স্বেচ্ছাচারিতার শামিল। এতে শিক্ষকগনের মাবে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উপজেলা বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকার আমলে উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দরা বিগত সরকারের ক্ষমতা প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ শিক্ষকদেরকে হয়রানি ও স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন।
এছাড়াও শিক্ষক বদলি, দপ্তরি নিয়োগ, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ, বিদ্যালয় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের বরাদ্দ দিবে বলে অনেকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলামের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সমিতির সাবেক ও বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দকে বলা হয়েছে নিজেদের মধ্যে বসে বিষয়টি সমাধান হওয়ার জন্য। যদি তারা নিজেরা সমাধান না করতে পারে, তাহলে পরবর্তীতে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
কচুয়া প্রতিনিধি: 













