চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মমতাজ বেগম রিক্তা (৩৫) নামক এক বিউটিশিয়াকে জবাই ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে তার মরদেহ কম্বল পেঁচিয়ে ঘরের ভেতর টয়লেটে রেখে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা।
খবর পেয়ে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রিক্তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চরমান্দারি এলাকার বেপারী বাড়িতে নিজ বসতঘর থেকে রিক্তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত রিক্তা বেপারী বাড়ির মৃত এমদাদ উল্লাহর ছোট মেয়ে।
এলাকাবাসী জানায়, রিক্তা ফরিদগঞ্জ গৃদকালিন্দিয়া বাজারের বধূবরণ বিউটি পার্লারের মালিক ও বিউটিশিয়ান। প্রতিদিনের মতো বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়িতে ফিরেন তিনি। স্বামী প্রবাসে ও তার কোন সন্তান না থাকায় মৃত বোনের একমাত্র ছেলে বাপ্পিকে (১৮) নিয়ে বসবাস করতেন রিক্তা। বাপ্পি গৃদকালিন্দিয়া বাজারে একটি দোকানে মোবাইল মেরামতের কাজ শিখছে।
বুধবার রাত ৮টার দিকে বাপ্পি বাড়ি ফিরে তার খালা রিক্তাকে ঘরে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে। পরে ঘরের মেঝেতে রক্ত দেখে বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানায় এবং বাড়ির লোকজনসহ ঘরে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে রিক্তার চাচাতো ভাই মাহফুজুর রহমানের মেয়ে ঐশী আক্তার তার মা ও বাপ্পিসহ ঘরে প্রবেশ করে বহু খোঁজাখুঁজি করার পর টয়লেটের ভেতরে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় রিক্তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায়। এ ঘটনা ঐশী তার বাবা মাহফুজুর রহমানকে জানালে তিনি ৯৯৯- এ কল করে পুলিশকে অবহিত করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ রিক্তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে।
রিক্তার বোনের ছেলে বাপ্পি জানায়, ‘আমার জন্মের পর মা মারা যাওয়ায় এই খালার কাছেই বড় হয়েছি। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার সময় খালামনিকে দেখেছি বাজার থেকে পুরি নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছে। আমি রাত ৮টার সময় বাজার থেকে বাড়িতে এসে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। খালাকে অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজার লকে হাত দেই আর সঙ্গে সঙ্গে দরজার লক খুলে যায়। এ সময় ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। ঘরে প্রবেশ করে দেখি ঘরের মেঝেতে খালার বোরখা রক্তমাখা। আমি চিৎকার করে পাশের ঘরের মাহফুজ মামার স্ত্রী লাকি মামিকে ডেকে আনি।
একই বাড়ির মাহফুজুর রহমান জুয়েল বলেন, এই ঘটনা দেখেই আমি জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে জানাই। রিক্তা আমার চাচাতো বোন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ূন কবির জানান, রাতে ৮টা ৫৭মিনিটের সময় একই বাড়ির ইসমাইল মাস্টার ফোন করে জানিয়েছেন রিক্তাকে কারা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি এই ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে এসেছি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার তদন্ত (ওসি) প্রদীপ মন্ডল জানান, খুনের বিষয়ে মাহফুজুর রহমান নামক ব্যক্তি জাতীয় জরুরি সেবাতে (৯৯৯) ফোন করেন। তাৎক্ষণিক আমরা ঘটনাস্থলে এসে মমতাজ বেগম রিক্তার মরদেহ উদ্ধার করেছি। এটি একটি হত্যা এবং এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।