ঢাকা 1:35 pm, Friday, 27 June 2025

ধড্ডা জনকল্যাণ সমিতির দিঘিতে ৬ মাসের ব্যবধানে আবারও বিষ প্রয়োগ, ১০ লাখ টাকার ক্ষতি

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:46:55 pm, Saturday, 27 April 2024
  • 6 Time View

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :

হাজীগঞ্জের হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা জনকল্যাণ সমিতির দিঘিতে (পুকুর) আবারও বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করা হয়েছে। শুক্রবার রাতের আঁধারে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই গ্রামের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ গরিবের প্রায় ১০ লাখ টাকার হক নষ্ট করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও রাতের আঁধারে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ নিধন করে দুর্বৃত্তরা।

পুকুর দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবু তাহের বকাউল বলেন, শনিবার ভোররাতে ফজর নামাজ আদায়ে মসজিদে যাওয়ার সময় স্থানীয় মহিলারা জানান, দিঘির মাছগুলো মরে ভেসে উঠেছে। প্রথমে ভাবলাম গ্যাসের অভাবে মাছ মরে ভেসে উঠছে। কিন্তু পরে দেখি দিঘিতে তিন প্যাকেট গ্যাসের পাউডার ভাসছে। তখন বুঝতে পারলাম যে, বিষ প্রয়োগ করে মাছগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

তিনি আরও বলেন, এই দিঘিটির মালিক হচ্ছে ধড্ডা জনকল্যান সমিতি। ২০২২ সালে সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হুমায়ুন কবির লিটন। আর তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দিঘির মাছ বিক্রি করে যে টাকা আয় হয়, ওই টাকা গ্রামের মসজিদ ও মাদ্রাসাসহ অসহায় গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুর্বৃত্তরা পুকুরে বিষ দিয়ে মাছগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

এমন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে আবু তাহের বকাউল জানান, বিষ দেওয়ার বিষয়টি সমিতির সভাপতিসহ এলাকার গণ্যামান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছেন এবং তাদের নির্দেশনায় পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে কে বা কারা পুকুরে গ্যাস পাউডার দিয়েছে, তা ধারণা বা অনুমান করতে পারছেন না কেউ।

এ দিকে শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালীন সময়ে দেখা গেছে স্থানীয় ও এলাকার লোকজন মরা মাছগুলো ধরে নিয়ে যাচ্ছেন এবং অসংখ্য চিল (পাখি) মাছ শিকার করছেন। এসময় স্থানীয়রা জানান, দিঘিতে মরা মাছ ভেসে উঠার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর কয়েক শতাধিক মানুষ জাল, ছাঁই, টেঁটা, ছালনিসহ যার যা আছে, তা নিয়ে পুকুরে নেমে পড়েন এবং তারা ফজর নামাজের পর থেকে মাছ ধরতে শুরু করে।

স্থানীয় তারা মিয়া জানান, লিটন সাহেব ভালো মানুষ। তিনি সমিতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মাছ বিক্রির টাকাগুলো মসজিদ, মাদ্রাসা ও মানুষকে দিয়ে দেন। অথচ কে বা কারা পুকুরে বিষ দিয়ে এইবারসহ একে একে দুইবার মাছগুলো মেরে ফেলছে। তিনিও দোষীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে ধড্ডা জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও ইউনিয়ন উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির আহবায়ক হুমায়ুন কবির লিটন বলেন, বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ নিধনের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে ২ ডাকাত গ্রেপ্তার, লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার

ধড্ডা জনকল্যাণ সমিতির দিঘিতে ৬ মাসের ব্যবধানে আবারও বিষ প্রয়োগ, ১০ লাখ টাকার ক্ষতি

Update Time : 06:46:55 pm, Saturday, 27 April 2024

মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :

হাজীগঞ্জের হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা জনকল্যাণ সমিতির দিঘিতে (পুকুর) আবারও বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করা হয়েছে। শুক্রবার রাতের আঁধারে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই গ্রামের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ গরিবের প্রায় ১০ লাখ টাকার হক নষ্ট করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও রাতের আঁধারে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ নিধন করে দুর্বৃত্তরা।

পুকুর দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবু তাহের বকাউল বলেন, শনিবার ভোররাতে ফজর নামাজ আদায়ে মসজিদে যাওয়ার সময় স্থানীয় মহিলারা জানান, দিঘির মাছগুলো মরে ভেসে উঠেছে। প্রথমে ভাবলাম গ্যাসের অভাবে মাছ মরে ভেসে উঠছে। কিন্তু পরে দেখি দিঘিতে তিন প্যাকেট গ্যাসের পাউডার ভাসছে। তখন বুঝতে পারলাম যে, বিষ প্রয়োগ করে মাছগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

তিনি আরও বলেন, এই দিঘিটির মালিক হচ্ছে ধড্ডা জনকল্যান সমিতি। ২০২২ সালে সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হুমায়ুন কবির লিটন। আর তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দিঘির মাছ বিক্রি করে যে টাকা আয় হয়, ওই টাকা গ্রামের মসজিদ ও মাদ্রাসাসহ অসহায় গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুর্বৃত্তরা পুকুরে বিষ দিয়ে মাছগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

এমন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে আবু তাহের বকাউল জানান, বিষ দেওয়ার বিষয়টি সমিতির সভাপতিসহ এলাকার গণ্যামান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছেন এবং তাদের নির্দেশনায় পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে কে বা কারা পুকুরে গ্যাস পাউডার দিয়েছে, তা ধারণা বা অনুমান করতে পারছেন না কেউ।

এ দিকে শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালীন সময়ে দেখা গেছে স্থানীয় ও এলাকার লোকজন মরা মাছগুলো ধরে নিয়ে যাচ্ছেন এবং অসংখ্য চিল (পাখি) মাছ শিকার করছেন। এসময় স্থানীয়রা জানান, দিঘিতে মরা মাছ ভেসে উঠার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর কয়েক শতাধিক মানুষ জাল, ছাঁই, টেঁটা, ছালনিসহ যার যা আছে, তা নিয়ে পুকুরে নেমে পড়েন এবং তারা ফজর নামাজের পর থেকে মাছ ধরতে শুরু করে।

স্থানীয় তারা মিয়া জানান, লিটন সাহেব ভালো মানুষ। তিনি সমিতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মাছ বিক্রির টাকাগুলো মসজিদ, মাদ্রাসা ও মানুষকে দিয়ে দেন। অথচ কে বা কারা পুকুরে বিষ দিয়ে এইবারসহ একে একে দুইবার মাছগুলো মেরে ফেলছে। তিনিও দোষীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে ধড্ডা জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও ইউনিয়ন উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির আহবায়ক হুমায়ুন কবির লিটন বলেন, বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ নিধনের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।