নতুনেরকথা অনলাইন ডেস্ক:
অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পুরো পরিবার ‘চোর’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, ওই ‘চোরের’ মুখের সামনে কেউ কথা বলতে পারত না। দুদক ও বিচার বিভাগ তাঁর দাসে পরিণত হয়েছিল। এখন কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রমাণ করুন, আপনারা আসলেই ভালো পরিবেশ পেলে ভালো কাজ করতে পারেন।’
সোমবার কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় আসিফ নজরুল এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ সভার আয়োজন করে।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার দুঃখ লাগে, আমার সঙ্গে যাঁরা বড় হয়েছেন, ছাত্রজীবন-বিশ্ববিদ্যালয়জীবন, সাংবাদিকতাজীবন ও শিল্প-সাহিত্যের জগতে যাঁদের দেখেছি, তাঁরা যে বড়লোক হয়েছেন, সেটার কোনো কারণ ছিল না। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা, দুঃখবোধ বা লজ্জা ছিল না।…দুর্নীতি এই সমাজে “এক্সেপ্টেড নর্মে” (সাধারণ বিষয়) পরিণত হয়েছিল। কেউ প্রশ্ন করত না, এত টাকা কোত্থেকে এল? উল্টো গর্ব করত, খুশি হতো; আরে, তাঁর এত টাকা! অবৈধ বিত্ত নিয়ে অহংকার চলত। …এদের কেউ কেউ মসজিদ কমিটিগুলোতে ঢুকে পড়েছিল।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন জায়গায় আড্ডায় শুনতাম, শেখ হাসিনার ক্যাশিয়ার কে, রেহানার ক্যাশিয়ার কে, সালমান কার ক্যাশিয়ার, জয়ের টাকা কার মাধ্যমে যায়, পলক কার টাকা রাখে। দুদক তো ছিল, উচ্চ আদালতও ছিলেন, কোনো বিচার হয়নি। বিচার কার হতো? খালেদা জিয়ার। তিন কোটি টাকা একটা ব্যাংকে রেখেছেন, একটা টাকা সেখান থেকে কেউ আত্মসাৎ বা স্পর্শ করেনি; শুধু প্রক্রিয়াগত ভুলের জন্য তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ১০ বছরের জেল দিয়েছিল দুদক-বিচার বিভাগ মিলে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘সেই “চোর” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাঁর পুরো পরিবার ছিল “চোর”। তিনি সারা দেশে বলে বেড়াতেন, খালেদা জিয়া নাকি এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন! ওই “চোরের” মুখের সামনে কেউ কথা বলতে পারতেন না, দুদক ও বিচার বিভাগ তাঁর দাসে পরিণত হয়েছিল।’
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দুর্নীতি এক্সেপ্টেড নর্মে (সাধারণ বিষয়ে) পরিণত হওয়ার কারণ ছিল, দুর্নীতির কোনো বিচার তো হতোই না, বরং দুর্নীতি যে একটা খারাপ জিনিস, এটা ভাবার সংস্কৃতিটাই চলে গিয়েছিল। …আমরা দেখতাম, একটা বেহায়া প্রধানমন্ত্রী তাঁর পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে—এটা হাসতে হাসতে জাতির সামনে বলছেন। আওয়ামী লীগের কোনো নেতার সঙ্গে দেখা হলে বলতেন, “আপা তো আসলে কিছু করতে পারেন না, ওনার ছোট বোনের জন্য।” বোনের প্রতি কী মায়া! বোন ‘চোর’ দেখে উনি কিছু করতে পারেন না!’