চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ফ্যাসিবাদ স্টাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, অবিলম্বে কমিটি বাতিল না করলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। পদ পদবি পাওয়া শিক্ষকদের অনেকেই প্রত্যাখ্যান করেছেন এই পকেট কমিটি।
জানা যায়, জেলা কর্তৃক কমিটি সুপারিশের কপি হাতে পেয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন শিক্ষকরা। ইতিমধ্যে পদপদবি পাওয়া অনেকেই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁরা আওয়ামী সরকারের রাতের ভোট ও পকেট কমিটির খেলা আর দেখতে চান না। অবিলম্বে এ কমিটি বাতিলের দাবি তাদের। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি শাহরাস্তি উপজেলা শাখার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৪ বছরের জন্য কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও বিগত সরকারের ছত্রছায়ায় আধিপত্য বিস্তার করে শিক্ষক সমাজ কে জিম্মি করে ১০ বছর পার করে।
ফ্যাসিবাদের পতনের পর নতুন করে নির্বাচনের স্বপ্ন দেখা শুরু করে শিক্ষক সমাজ। নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ইউনিয়ন ও পৌর কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্ভাব্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য একাধিক প্রার্থী গণসংযোগ শুরু করেন। শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন। ইতিমধ্যেই স্বাক্ষরিত কপি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা শিক্ষক সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হঠাৎ করেই সভাপতি জয়নাল আবেদীন সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাজ্জাদ সহ ৪০ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর শিক্ষক সমাজে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কমিটি ঘোষণার পর সিনিয়র সহ-সভাপতি মকবুল আহমেদ মজুমদার তাঁর পদ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, আমি কারো দয়ায় পদপদবি চাই না। শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ ভোটে আমরা প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চাই। একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনে কমিটি ঘোষণা হয়েছে বলে তিনি জানান।
নিজ মেহের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের ভোটাধিকার কেন হরন করা হলো জানতে চাই। এ পদ আমার দরকার নেই, আমি শিক্ষকদের ভোটে তাদের প্রতিনিধি হতে চাই। শিক্ষক সমাজ পকেট কমিটি মেনে নিবে না। সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। নাট্য বিষয়ক সম্পাদক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমি এই অপমানিত পদবী প্রত্যাখ্যান করছি। এটি আমাদের পেশাজীবী সংগঠন। কোন মহলের হস্তক্ষেপ ও রাতের ভোট মানি না।
সহকারী শিক্ষক জহিরুল ইসলাম ও কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। সহকারী শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন বলেন, এটি শিক্ষকদের সাথে প্রতারণার শামিল। সুচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আলী আক্কাস পাটোয়ারী রাতের আঁধারে পকেট কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কাব স্কাউট সম্পাদক বিজয় লাল দে তাঁর পদ প্রত্যাখ্যান করেছেন। ঘোষিত কমিটি বাতিল করে শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচনের আহ্বান জানান শিক্ষক নেতৃবৃন্দ অন্যথায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।