ঢাকা ১০:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী কালিন সরকার সাংবাদিক হত্যার বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি

অতীতে গড়ে ওঠা বিচারহীনতার সংস্কৃতিই সাংবাদিক হত্যা, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকেরা। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত সময়ের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। গত দেড় মাসে দুই সাংবাদিক হত্যাসহ ৬ মাসে সাংবাদিক নির্যাতন, মামলা-হামলা ও নিপীড়নের ১৯৬ ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ জনসম্মুখে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার মধ্য দিয়ে দুর্বৃত্তরা প্রমাণ করেছে, এ দেশে কেউই নিরাপদ নয়।

শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। গাজীপুরে আসাদুজ্জামান মানিক হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইনের দাবিতে এই মানববন্ধন সমাবেশের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজ।

ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মামুনুর রশিদ পাঠানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ফরহাদের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাবেক সভাপতি নুরুন্নবী নোমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রবীর চক্রবর্তী,আব্দুছ ছোবহান লিটন, সিনিয়র সাংবাদিক মো: মহিউদ্দিন, এস এম মিজানুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক নারায়ন রবিদান, নির্বাহী সদস্য শিমুল হাসান।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, ১৯৭১ সালে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে চার সাংবাদিক শহীদ হয়েছিলেন। আর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছয় সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার গত ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে হত্যার শিকার হয়েছেন ৩০ সাংবাদিক, দেড় হাজার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, নির্যাতন চালানো হয়েছিল। অন্তর্বর্তী কালিন সরকার এখন পর্যন্ত সাংবাদিক হত্যার বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। এমনকি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পর্যন্ত দিতে পারেনি। এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ এ পর্যন্ত ১১৯ বার পেছানো হয়েছে।

বক্তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং সাংবাদিক হত্যা, খুন, গুম, হামলা-মামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গত ১৬ বছরে রাজধানীসহ সারা দেশে ১৭ সাংবাদিক খুন হয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি হত্যাকাণ্ডেরও সুষ্ঠু বিচার হয়নি। রক্তস্নাত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গণমাধ্যমকে এখনো যারা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে, ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ২ হাজার লাশের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় আছে অন্তর্বর্তী কালিন সরকার।

এখনো হত্যা, নির্যাতন বন্ধ হয়নি। গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার দায় সরকার এড়াতে পারে না। তুহিন হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাসহ সাংবাদিক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

১০ম গ্রেডসহ ৫ দফা দাবী বাস্তবায়নে ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের স্মারকলিপি প্রদান

অন্তর্বর্তী কালিন সরকার সাংবাদিক হত্যার বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি

Update Time : ০৯:৫৩:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

অতীতে গড়ে ওঠা বিচারহীনতার সংস্কৃতিই সাংবাদিক হত্যা, খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের অন্যতম কারণ বলে মন্তব্য করেছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকেরা। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত সময়ের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। গত দেড় মাসে দুই সাংবাদিক হত্যাসহ ৬ মাসে সাংবাদিক নির্যাতন, মামলা-হামলা ও নিপীড়নের ১৯৬ ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ জনসম্মুখে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার মধ্য দিয়ে দুর্বৃত্তরা প্রমাণ করেছে, এ দেশে কেউই নিরাপদ নয়।

শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। গাজীপুরে আসাদুজ্জামান মানিক হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইনের দাবিতে এই মানববন্ধন সমাবেশের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজ।

ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মামুনুর রশিদ পাঠানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ফরহাদের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাবেক সভাপতি নুরুন্নবী নোমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রবীর চক্রবর্তী,আব্দুছ ছোবহান লিটন, সিনিয়র সাংবাদিক মো: মহিউদ্দিন, এস এম মিজানুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক নারায়ন রবিদান, নির্বাহী সদস্য শিমুল হাসান।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, ১৯৭১ সালে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে চার সাংবাদিক শহীদ হয়েছিলেন। আর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছয় সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার গত ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে হত্যার শিকার হয়েছেন ৩০ সাংবাদিক, দেড় হাজার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, নির্যাতন চালানো হয়েছিল। অন্তর্বর্তী কালিন সরকার এখন পর্যন্ত সাংবাদিক হত্যার বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। এমনকি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পর্যন্ত দিতে পারেনি। এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ এ পর্যন্ত ১১৯ বার পেছানো হয়েছে।

বক্তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং সাংবাদিক হত্যা, খুন, গুম, হামলা-মামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গত ১৬ বছরে রাজধানীসহ সারা দেশে ১৭ সাংবাদিক খুন হয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি হত্যাকাণ্ডেরও সুষ্ঠু বিচার হয়নি। রক্তস্নাত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গণমাধ্যমকে এখনো যারা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে, ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ২ হাজার লাশের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় আছে অন্তর্বর্তী কালিন সরকার।

এখনো হত্যা, নির্যাতন বন্ধ হয়নি। গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার দায় সরকার এড়াতে পারে না। তুহিন হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাসহ সাংবাদিক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।