ঢাকা 9:20 am, Sunday, 20 July 2025

৮ নভেম্বর আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র ২৫তম ওফাত দিবস

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:29:40 pm, Monday, 7 November 2022
  • 12 Time View

ত্রিনদী ডেস্ক রিপোর্ট ॥

৮ নভেম্বর চাঁদপুর বেগম জামে মসজিদের সাবেক খতিব হযরতুল আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র ২৫তম ওফাত দিবস। ১৯৯৭ সালের এদিন রাত সাড়ে ১১টায় তিনি ঢাকা শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ) চাঁদপুর বেগম জামে মসজিদে দীর্ঘ প্রায় ২৯ বছর ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন। চাঁদপুর জেলার একজন প্রসিদ্ধ আলেম হিসেবে তাঁর সুপরিচিতি ছিলো। জীবদ্দশায় তিনি এই জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসায় অধ্যাপনার দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত তিনি চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার ওচমানিয়া ফাযিল মাদ্রাসায় আরবি বিভাগের অধ্যাপকের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর মাদ্রাসার চাকরি এক মাস থাকাবস্থায় তিনি পৃথিবী থেকে চির বিদায় নেন।

আল্লামা রুহুল্লাহ চাঁদপুর জেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘ বছর যাবত তিনি এই পদে থেকে চাঁদপুর জেলায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের নেতৃত্ব দিয়ে আসেন। তিনি ইমামে আহলে সুন্নাত, আওলাদে রাসুল, মোজাদ্দেদে জামান আল্লামা আবু নছর সৈয়দ মোঃ আবেদ শাহ মোজাদ্দেদী আল মাদানী (রাঃ)’র একান্ত ভক্ত ও মুরিদ ছিলেন। তিনি এই বেগম মসজিদের ইমাম ও খতিবের দায়িত্বে থাকাকালীন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও পীর মাশায়েখ এই মসজিদে এসেছেন এবং তাফসির মাহফিলসহ ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে মেরাজ, ফাতেহায়ে ইয়াজদাহম, শবে বরাত, শবে ক্বদর, আশুরাসহ আরো বিভিন্ন ইসলামী দিবসে ওইসব আলেম ও পীর মাশায়েখ ওয়াজ নছিহত করেছেন। পুরো চাঁদপুর জেলায় তখন বেগম মসজিদের একটা বিশেষ সুখ্যাতি ছিল।

প্রখ্যাত আলেম এবং সুফি হিসেবে আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র সর্বমহলে বেশ গ্রহণযোগ্যতা ছিল। এমনকি ভিন্ন মতাবলম্বীরাও তাঁর ইল্ম এবং আমলের প্রশংসা করতেন। আপাদমস্তক তিনি একজন আশেকে রাসুল, সুফি এবং আমলদার ছিলেন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অকৃত্রিম ভালোবাসায় তিনি তাঁর জীবনকে সাজিয়েছেন। নবীজির ইশ্ক মহব্বতের ব্যাপারে তিনি ছিলেন আপসহীন। ইন্তেকালের সময় তিনি তাঁর স্ত্রী, চার ছেলে, পাঁচ মেয়েসহ অনেক আত্মীয়স্বজন এবং অসংখ্য ভক্ত ও শুভাকাক্সক্ষী রেখে যান। তাঁর বড় ছেলে আবু জাফর মোঃ হাবিব উল্লাহ কৃষি ব্যাংকের এজিএম হিসেবে অবসরগ্রহণ করেন, মেজো ছেলে মাওঃ আনম মুহিবুল্লাহ বর্তমানে ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন চান্দ্রা ছামাদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, তৃতীয় ছেলে আবুল হাসান মোঃ রফিকুল্লাহ গ্রামের বাড়িতে হোমিও চিকিৎসক এবং ছোট ছেলে এএইচএম আহসান উল্লাহ দীর্ঘ ২২ বছর যাবত সাংবাদিকতা পেশার সাথে সম্পৃক্ত।

তিনি বর্তমানে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এবং দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া চাঁদপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ম্যারিজ রেজিস্টার। তাঁর মেয়ের জামাতাদের মধ্যে দুইজন বেঁচে আছেন। হাজীগঞ্জ ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের মেজো হুজুর আওলাদে রাসুল, পীরে কামেল আল্লামা সৈয়দ জাহান শাহ মোজাদ্দেদী আল আবেদী (রঃ) ছিলেন আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র চতুর্থ মেয়ের জামাতা। তাঁর ছোট মেয়ের জামাতা হচ্ছেন মতলব উত্তর উপজেলার হাশিমপুর দরবার শরীফের পীর সাহেব আল্লামা আশফাক আহমাদ। বড় জামাতা হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাস্টার মহিউদ্দিন। বড় জামাতা এবং ছোট জামাতাই এখন বেঁচে আছেন।

আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র ওফাত দিবস উপলক্ষে আগামী শুক্রবার পারিবারিকভাবে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কিডনি দান করা সেই স্ত্রীর বিরুদ্ধেই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ স্বামীর

৮ নভেম্বর আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র ২৫তম ওফাত দিবস

Update Time : 10:29:40 pm, Monday, 7 November 2022

ত্রিনদী ডেস্ক রিপোর্ট ॥

৮ নভেম্বর চাঁদপুর বেগম জামে মসজিদের সাবেক খতিব হযরতুল আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র ২৫তম ওফাত দিবস। ১৯৯৭ সালের এদিন রাত সাড়ে ১১টায় তিনি ঢাকা শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ) চাঁদপুর বেগম জামে মসজিদে দীর্ঘ প্রায় ২৯ বছর ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন। চাঁদপুর জেলার একজন প্রসিদ্ধ আলেম হিসেবে তাঁর সুপরিচিতি ছিলো। জীবদ্দশায় তিনি এই জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসায় অধ্যাপনার দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত তিনি চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার ওচমানিয়া ফাযিল মাদ্রাসায় আরবি বিভাগের অধ্যাপকের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর মাদ্রাসার চাকরি এক মাস থাকাবস্থায় তিনি পৃথিবী থেকে চির বিদায় নেন।

আল্লামা রুহুল্লাহ চাঁদপুর জেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘ বছর যাবত তিনি এই পদে থেকে চাঁদপুর জেলায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের নেতৃত্ব দিয়ে আসেন। তিনি ইমামে আহলে সুন্নাত, আওলাদে রাসুল, মোজাদ্দেদে জামান আল্লামা আবু নছর সৈয়দ মোঃ আবেদ শাহ মোজাদ্দেদী আল মাদানী (রাঃ)’র একান্ত ভক্ত ও মুরিদ ছিলেন। তিনি এই বেগম মসজিদের ইমাম ও খতিবের দায়িত্বে থাকাকালীন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও পীর মাশায়েখ এই মসজিদে এসেছেন এবং তাফসির মাহফিলসহ ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে মেরাজ, ফাতেহায়ে ইয়াজদাহম, শবে বরাত, শবে ক্বদর, আশুরাসহ আরো বিভিন্ন ইসলামী দিবসে ওইসব আলেম ও পীর মাশায়েখ ওয়াজ নছিহত করেছেন। পুরো চাঁদপুর জেলায় তখন বেগম মসজিদের একটা বিশেষ সুখ্যাতি ছিল।

প্রখ্যাত আলেম এবং সুফি হিসেবে আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র সর্বমহলে বেশ গ্রহণযোগ্যতা ছিল। এমনকি ভিন্ন মতাবলম্বীরাও তাঁর ইল্ম এবং আমলের প্রশংসা করতেন। আপাদমস্তক তিনি একজন আশেকে রাসুল, সুফি এবং আমলদার ছিলেন। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অকৃত্রিম ভালোবাসায় তিনি তাঁর জীবনকে সাজিয়েছেন। নবীজির ইশ্ক মহব্বতের ব্যাপারে তিনি ছিলেন আপসহীন। ইন্তেকালের সময় তিনি তাঁর স্ত্রী, চার ছেলে, পাঁচ মেয়েসহ অনেক আত্মীয়স্বজন এবং অসংখ্য ভক্ত ও শুভাকাক্সক্ষী রেখে যান। তাঁর বড় ছেলে আবু জাফর মোঃ হাবিব উল্লাহ কৃষি ব্যাংকের এজিএম হিসেবে অবসরগ্রহণ করেন, মেজো ছেলে মাওঃ আনম মুহিবুল্লাহ বর্তমানে ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন চান্দ্রা ছামাদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, তৃতীয় ছেলে আবুল হাসান মোঃ রফিকুল্লাহ গ্রামের বাড়িতে হোমিও চিকিৎসক এবং ছোট ছেলে এএইচএম আহসান উল্লাহ দীর্ঘ ২২ বছর যাবত সাংবাদিকতা পেশার সাথে সম্পৃক্ত।

তিনি বর্তমানে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এবং দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া চাঁদপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ম্যারিজ রেজিস্টার। তাঁর মেয়ের জামাতাদের মধ্যে দুইজন বেঁচে আছেন। হাজীগঞ্জ ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের মেজো হুজুর আওলাদে রাসুল, পীরে কামেল আল্লামা সৈয়দ জাহান শাহ মোজাদ্দেদী আল আবেদী (রঃ) ছিলেন আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র চতুর্থ মেয়ের জামাতা। তাঁর ছোট মেয়ের জামাতা হচ্ছেন মতলব উত্তর উপজেলার হাশিমপুর দরবার শরীফের পীর সাহেব আল্লামা আশফাক আহমাদ। বড় জামাতা হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাস্টার মহিউদ্দিন। বড় জামাতা এবং ছোট জামাতাই এখন বেঁচে আছেন।

আল্লামা রুহুল্লাহ (রঃ)’র ওফাত দিবস উপলক্ষে আগামী শুক্রবার পারিবারিকভাবে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।