চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মিধিলির প্রভাবে বৃষ্টিতে তলিয়েগেছে শীতকালিন সবজি জমি। প্রভাবশালিদের অবৈধভাবে খাল দখল করে মাছ চাষ করার কারণে বৃষ্টির পানি নামতে না পেরে এমন হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থরা কৃষকরা।
শুক্রবার ঘুর্নিঝড় মিধিলার প্রভাবে চাঁদপুরে ১৭৭ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে তলিয়ে গেছে অনেক শাকসবজি ও বীজতলা। উপজেলার পৌরসভাধীন বলাখাল শ্রীনারায়ণপুর, বলাখাল ও অলিপুরে প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয়েছে লাউ, মিস্টি কুমড়া, শসা, খীরা’সহ বিভিন্ন প্রজাতির সবিজ। বৃষ্টির পানি আটকে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে এসব মাঠে পানি জমে যায়। এতে শ্রীনারায়নপুর মাঠ, বলাখাল মাঠে কৃষকরে প্রায় ৫’শ কোটি টাকার সবজি নষ্ট হয়েছে বলে জানান উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন।
কৃষকরা জানান, শ্রীনারায়নপুর খালে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে প্রভাবশালি দেলোয়ার মাস্টার, রতন, কামাল, জাকির’সহ কয়েকজন মাছ চাষ করে। এতে ওই খাল দিয়ে শ্রী নারায়নপুর মাঠ ও বলাখাল মাঠের পানি নামতে না পেরে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে আমাদের শত শত কোটি টাকার সবজি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
কৃষক খোরশেদ আলম বলেন, শ্রীনারায়নপুর খালে বাঁধ দিয়ে প্রতিন্ধকতা সৃষ্টি করে প্রতি বছর প্রভাবশালিরা মাছে চাষ করার কারণে আজ কৃষক পথে বসেছে। এই মাঠে প্রায় এক থেকে দেড়শ কানি জমিনের সবজি নষ্ট হয়েগেলো।
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৬৮৫ হেক্টর জামিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার মেট্রিক টন। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি গাছ নষ্ট হয়েছে। সেইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিছু বিজতলা সবমিলিয়ে প্রায় ৫’শ হেক্টর হেক্টর জমির সবজি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অবৈধ খাল দখলদার কারণে চরমভাবে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তাদের দাবি, অন্তত ৬’শ হেক্টর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বলাখলাল গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন বলনে, ৫ একর জমিতে লাউ, চালকুমড়া, মিস্টি কুমড়া, খীরা ও শসা চাষ করেছিলাম। বৃষ্টির পানিতে সবগুলো ফসলে পচন ধরেছে। এখন কীভাবে চলবে সংসার আর কীভাবে কিস্তি পরিশোধ করবো, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম বলেন, আমি উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাকে বলাখাল নারায়নপুর খালের বাঁধ কেটে পয়নিস্কাষণের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারের সাথে কথা হয়েছে। প্রয়োজনে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, কৃষি কর্মকর্তাকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি কেউ বাঁধা কাটতে বাঁধা দেয় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে খাল দখলকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।