ঢাকা 12:16 am, Sunday, 29 June 2025

নারায়ণগঞ্জে বাস থেকে শক্তিশালী টাইম বোমা উদ্ধার, প্রাণে রক্ষা পেল যাত্রীরা

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:43:46 pm, Saturday, 6 January 2024
  • 3 Time View

অনলাইন নিজউ ডেস্ক :

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কক্সবাজারগামী বাস থেকে উদ্ধার বোমাটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি)। এটি একটি ‘টাইম জেনারেটিং’ বোমা। পুরো ডিভাইসে একটি ডিজিটাল ঘড়ি, ব্যাটারির এক প্রান্তের তার ও অপর প্রান্তে এক্সপ্লোশন (গান পাউডার, পেট্রল, বারুদ) লাগানো ছিল। ঘড়ির টাইমার সক্রিয় হয়ে আইইডি বোমাটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে বাসের ১৬ যাত্রী, সুপারভাইজার, চালকসহ ১৯ জনের সবারই প্রাণহানি হতো।

আজ শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বড় ধরনের মৃত্যুপুরী থেকে রক্ষা পেয়েছি। সামনে আরও কাউন্টার থেকে বাসটিতে যাত্রী উঠত। সব যাত্রী প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, শুক্রবার রাতে বেঙ্গল পরিবহনের বাসটি গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে আসার পর সায়েদাবাদ থেকে যাত্রী ওঠায়। বাসের সুপারভাইজার মো. হাসান যাত্রীর সংখ্যা গণনাকালে গাড়ির পেছনের সিটে ব্যাগ দেখতে পান, কিন্তু যাত্রী নেই। সুপারভাইজার ওই আসনের যাত্রীকে মুঠোফোনে কল করলেও তা বন্ধ পান। তিনি ব্যাগ খুলে বোমাসদৃশ বস্তুটি দেখতে পান। তিনি চালককে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাকে গাড়ি থামাতে বলেন এবং ৯৯৯ হটলাইন নম্বরে ফোন করেন।

পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা বলেন, পুলিশ গিয়ে তার লাগানো বোমার মতো দেখতে পেয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেয়। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে নিশ্চিত হন, এটি একটি বোমা। এটিকে আইইডি বলে। এরপর তাঁরা বোম্ব ডিসপোজাল স্যুট পরে বোমাটি গাড়ির ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে যান এবং প্রক্রিয়া মেনে বোমাটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেন। বিস্ফোরণ ঘটানোর পর আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে একটি ১২ ভোল্টের মোটরসাইকেলের ব্যাটারি, দুই বোতল ফ্ল্যাশ পাউডার, ৩ বোতল পেট্রল ও একটি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি।

বোমাটির যখন নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, তখন বিকট শব্দে আশপাশে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, ‘গাড়িটি যেহেতু এসি গাড়ি, এটা বিস্ফোরিত হলে যাত্রীরা সবাই মারা যেত। কারণ, বিস্ফোরিত হওয়ার সঙ্গে গান পাউডার, পেট্রল ও বারুদ মিশে যে এক্সপ্লোশনটা হতো, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা বড় ধরনের মৃত্যুপুরী থেকে রক্ষা পেয়েছি।’

যারা ব্যাগের মধ্যে বোমাটি রেখেছিল, তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, ‘দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্য নাশকতাকারীরা ঢাকার একটি ট্রেনে কিন্তু আগুন দিয়েছে। রাতে আমরা বাসের ভেতরে শক্তিশালী বোমা পেলাম। গাড়ির সুপারভাইজারের কারণে বোমাটি বিস্ফোরিত হওয়ার আগেই আমরা ডিফিউজড করতে পেরেছি। না হলে অনেক মানুষের প্রাণহানি হতো।’ এমন অবস্থায় যাত্রীদের তল্লাশি করে গাড়িতে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জহিরুল ইসলাম, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইওয়ান) কামরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

সারা পৃথিবীতে সাংবাদিকতা পেশা ঝুকিপূর্ণ, কিন্তু আমাদের দেশে একটু বেশি ঝুকিপূর্ণ

নারায়ণগঞ্জে বাস থেকে শক্তিশালী টাইম বোমা উদ্ধার, প্রাণে রক্ষা পেল যাত্রীরা

Update Time : 05:43:46 pm, Saturday, 6 January 2024

অনলাইন নিজউ ডেস্ক :

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কক্সবাজারগামী বাস থেকে উদ্ধার বোমাটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি)। এটি একটি ‘টাইম জেনারেটিং’ বোমা। পুরো ডিভাইসে একটি ডিজিটাল ঘড়ি, ব্যাটারির এক প্রান্তের তার ও অপর প্রান্তে এক্সপ্লোশন (গান পাউডার, পেট্রল, বারুদ) লাগানো ছিল। ঘড়ির টাইমার সক্রিয় হয়ে আইইডি বোমাটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে বাসের ১৬ যাত্রী, সুপারভাইজার, চালকসহ ১৯ জনের সবারই প্রাণহানি হতো।

আজ শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বড় ধরনের মৃত্যুপুরী থেকে রক্ষা পেয়েছি। সামনে আরও কাউন্টার থেকে বাসটিতে যাত্রী উঠত। সব যাত্রী প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, শুক্রবার রাতে বেঙ্গল পরিবহনের বাসটি গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে আসার পর সায়েদাবাদ থেকে যাত্রী ওঠায়। বাসের সুপারভাইজার মো. হাসান যাত্রীর সংখ্যা গণনাকালে গাড়ির পেছনের সিটে ব্যাগ দেখতে পান, কিন্তু যাত্রী নেই। সুপারভাইজার ওই আসনের যাত্রীকে মুঠোফোনে কল করলেও তা বন্ধ পান। তিনি ব্যাগ খুলে বোমাসদৃশ বস্তুটি দেখতে পান। তিনি চালককে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাকে গাড়ি থামাতে বলেন এবং ৯৯৯ হটলাইন নম্বরে ফোন করেন।

পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা বলেন, পুলিশ গিয়ে তার লাগানো বোমার মতো দেখতে পেয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেয়। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে নিশ্চিত হন, এটি একটি বোমা। এটিকে আইইডি বলে। এরপর তাঁরা বোম্ব ডিসপোজাল স্যুট পরে বোমাটি গাড়ির ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে যান এবং প্রক্রিয়া মেনে বোমাটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেন। বিস্ফোরণ ঘটানোর পর আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে একটি ১২ ভোল্টের মোটরসাইকেলের ব্যাটারি, দুই বোতল ফ্ল্যাশ পাউডার, ৩ বোতল পেট্রল ও একটি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি।

বোমাটির যখন নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, তখন বিকট শব্দে আশপাশে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, ‘গাড়িটি যেহেতু এসি গাড়ি, এটা বিস্ফোরিত হলে যাত্রীরা সবাই মারা যেত। কারণ, বিস্ফোরিত হওয়ার সঙ্গে গান পাউডার, পেট্রল ও বারুদ মিশে যে এক্সপ্লোশনটা হতো, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা বড় ধরনের মৃত্যুপুরী থেকে রক্ষা পেয়েছি।’

যারা ব্যাগের মধ্যে বোমাটি রেখেছিল, তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, ‘দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্য নাশকতাকারীরা ঢাকার একটি ট্রেনে কিন্তু আগুন দিয়েছে। রাতে আমরা বাসের ভেতরে শক্তিশালী বোমা পেলাম। গাড়ির সুপারভাইজারের কারণে বোমাটি বিস্ফোরিত হওয়ার আগেই আমরা ডিফিউজড করতে পেরেছি। না হলে অনেক মানুষের প্রাণহানি হতো।’ এমন অবস্থায় যাত্রীদের তল্লাশি করে গাড়িতে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জহিরুল ইসলাম, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইওয়ান) কামরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ।