ঢাকা 2:42 am, Monday, 30 June 2025

উখিয়া সীমান্তের ওপারে আবারও গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:23:35 pm, Thursday, 8 February 2024
  • 4 Time View

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল সীমান্তের ওপারে রাতে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে এই গোলাগুলি হয়। কয়েকটি মর্টার শেলের আওয়াজও ভেসে এসেছে। এতে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দেয় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। তবে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত ছিল শান্ত।

গত শুক্রবার রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপির) সংঘর্ষ শুরু হয়। ইতিমধ্যে বিজিপিকে হটিয়ে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে সোমবার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামে দুজন নিহত হন।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে টিকতে না পেরে বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে আশ্রয় নেয় সে দেশের ৩২৮ জন, যাঁরা সে দেশের বিজিপি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, শুল্ক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সংস্থার সদস্য।

স্থানীয় লোকজন বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। মাঝেমধ্যে কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গেলেও ভারী গোলাবর্ষণের আওয়াজ ছিল না। গতকাল বুধবার রাতে আবারও গুলি ও মর্টার শেলের আওয়াজ শোনা যাওয়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

পালংখালীর রহমতের বিল এলাকার গিয়াস উদ্দিন (৬৫) বলেন, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় মানুষ স্বস্তিতে ছিল। রাতে গুলির শব্দ শুনে অনেকের ঘুম ভেঙে গেছে। কেউ কেউ ঘর থেকে বের হয়ে এদিক-ওদিক যেতে থাকেন। তবে রাত দুইটার পর আর কোনো গোলযোগের খবর আসেনি।

এদিকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা মনে করছেন, বুধবার রাতের গোলাগুলি আরকান আর্মির সঙ্গে বিজিপির হয়নি। সীমান্তের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) ও মিয়ানমারের মংডুর সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নবী হোসাইনের আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির (এআরএ) মধ্যে হয়েছে। আরকান আর্মির পক্ষে নেওয়াকে কেন্দ্র করে আরএসও ও এআরএ নতুন করে বিবাদে জড়িয়েছে।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাতে ১০-১২টা গুলির শব্দ ও ২-৩টি মর্টার শেলের আওয়াজ শোনা গেছে। তবে তা বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে আরেকটু দূরে বলে মনে হয়েছে। এরপরও নতুন করে কিছুটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। তবে আরকান আর্মির সঙ্গে বিজিপির সংঘর্ষ পালংখালী সীমান্ত অংশে থেমে গেছে বলে মনে হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

এনসিপি চাঁদপুর জেলা সমন্বয়ক কমিটি গঠন

উখিয়া সীমান্তের ওপারে আবারও গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

Update Time : 04:23:35 pm, Thursday, 8 February 2024

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল সীমান্তের ওপারে রাতে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে এই গোলাগুলি হয়। কয়েকটি মর্টার শেলের আওয়াজও ভেসে এসেছে। এতে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দেয় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। তবে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত ছিল শান্ত।

গত শুক্রবার রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপির) সংঘর্ষ শুরু হয়। ইতিমধ্যে বিজিপিকে হটিয়ে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে সোমবার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামে দুজন নিহত হন।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে টিকতে না পেরে বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে আশ্রয় নেয় সে দেশের ৩২৮ জন, যাঁরা সে দেশের বিজিপি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, শুল্ক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সংস্থার সদস্য।

স্থানীয় লোকজন বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। মাঝেমধ্যে কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গেলেও ভারী গোলাবর্ষণের আওয়াজ ছিল না। গতকাল বুধবার রাতে আবারও গুলি ও মর্টার শেলের আওয়াজ শোনা যাওয়ায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

পালংখালীর রহমতের বিল এলাকার গিয়াস উদ্দিন (৬৫) বলেন, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় মানুষ স্বস্তিতে ছিল। রাতে গুলির শব্দ শুনে অনেকের ঘুম ভেঙে গেছে। কেউ কেউ ঘর থেকে বের হয়ে এদিক-ওদিক যেতে থাকেন। তবে রাত দুইটার পর আর কোনো গোলযোগের খবর আসেনি।

এদিকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা মনে করছেন, বুধবার রাতের গোলাগুলি আরকান আর্মির সঙ্গে বিজিপির হয়নি। সীমান্তের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) ও মিয়ানমারের মংডুর সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নবী হোসাইনের আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির (এআরএ) মধ্যে হয়েছে। আরকান আর্মির পক্ষে নেওয়াকে কেন্দ্র করে আরএসও ও এআরএ নতুন করে বিবাদে জড়িয়েছে।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাতে ১০-১২টা গুলির শব্দ ও ২-৩টি মর্টার শেলের আওয়াজ শোনা গেছে। তবে তা বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে আরেকটু দূরে বলে মনে হয়েছে। এরপরও নতুন করে কিছুটা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। তবে আরকান আর্মির সঙ্গে বিজিপির সংঘর্ষ পালংখালী সীমান্ত অংশে থেমে গেছে বলে মনে হচ্ছে।