মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ইমন হোসেনকে (২৫) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিকালে উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের টেকের বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে নিহত ইমনের নিজ বাড়ি ইউনিয়নের লোধপাড়া গ্রামের কবিরাজ বাড়ি থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। পরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল জনতা বাজার হয়ে টেকের বাজার এসে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন মিছিলকারীরা।
এসময় হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবী জানিয়ে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটওয়ারী। বক্তব্যের সময় ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই শ্লোগান দিতে থাকেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে সাবেক ইউপি সদস্য মানিক হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা যুবায়ের আলমসহ নিহত ইমনের দুই নবজাতকসহ তিন শিশু সন্তান, পরিবারের সদস্য, স্বজন, স্থানীয় ও এলাকাবাসীসহ কয়েক শতাধিক নারী, শিশু ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) বিকালে রাজারগাঁও ইউনিয়নে একটি মাহফিলে তবারক বিতরণ নিয়ে জিলানী ও সৈকতের তর্ক-বির্তক হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৩ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) বিকালে দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নে সাতবাড়ি ভাঙ্গা গ্রামে আবারও তাদের মাঝে তর্ক-বিতর্ক ও মারামারির ঘটনা ঘটলে জিলানী স্থানীয় একটি দোকানে আশ্রয় নেয়।
ওই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ইমন হোসেন তাকে (জিলানী) বাহির না করার জন্য দোকানীকে বলেন এবং বাহির হলে সৈকত তাকে মারধর করবে এই কথা বলে চলে যান। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় রাজারাগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তারেক আজিজের নেতৃত্বে জিলানীসহ ২০/৩০ যুবক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে জনতা বাজারে এসে ইমনের উপর অতর্কিত হামলা করে।
হামলায় গুরুতর আহত ইমনের ডাক-চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা হত্যার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আশংকাজনক অবস্থায় ইমনকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারী হত্যাকাণ্ডের শিকার ইমন হোসেনের বাবা মো. হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় একটি মামলা (নং- ১৪) দায়ের করেন। এতে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৯ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার নামীয় আসামিরা হলেন, জিলানী বেপারী (২০), তারেক আজিজ (৩০), রাসেল খাঁন (২৭), আব্দুল্লাহ (২৮), রমজান বেপারী (২২), ফরহাদ (২২), রাকিব (২৫), জাবেদ বেপারী (২৮), শাহাদাত বেপারী (২৬), পারভেজ মোশারফ কালু (২৫), জাহিদ (২২), পলাশ (২৬), শিপন চন্দ্র রায় (২৬), রাজু দাশ (২৫), সিয়াম (১৮), কাবির (১৮), নাছির (১৮) ও রায়হান (১৯)।
এর মধ্যে অজ্ঞাত আসামি হিসাবে রাজারগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেএম ফয়েজ বাবুসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক এবং জিজ্ঞাসাবাদ তাদের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে পরবর্তীতে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। মামলার প্রায় সকল আসামি যুবলীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এর মধ্যে তারেক আজিজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।