মানুষের মৃত্যুর কোন ধারাবাহিকতা নেই। বাবার আগে ছেলে, বাবার পরে ছেলের মৃত্যু এটাই স্বাভাবিক। তারপরেও কিছু মৃত্যু মানুষের জন্য শিক্ষাগ্রহণ উদহারণ হয়। তেমনি চাঁদপুর শহরের তালতলা এলাকার বাসিন্দা মাওলানা ফখরুল ইসলাম মাছুমের কুরআনে হাফেজ ছেলে আজহারুল ইসলাম ফাহিমের (১৯) মৃত্যুর পর আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নামাজে জানাজা পড়িয়ে ছেলের মরদেহ কাঁদে করে পৌর কবরস্থানে দাফন করতে নিয়ে যান বাবা। পরে কবরের পাশে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় শহরের বাস্টস্যান্ড গৌর-এ গরিবা জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে আজহারুল ইসলাম ফাহিমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দিনগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসাতেই তার মৃত্যু হয়।
মাওলানা ফখরুল ইসলাম মাছুম চাঁদপুর সদরের বাগাদী আহমাদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক এবং শহরের আল-আমিন মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তিন পুত্র সন্তানের মধ্যে ফাহিম ছিলেন দ্বিতীয়। ফাহিম শিশু শ্রেনী থেকে দাখিল দশম পর্যন্ত আল-আমিন মডেল মাদ্রাসায় পড়েন এবং একই মাদ্রাসা থেকে হিফজ সম্পন্ন করেন।
নামাজে জানাজা পূর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফাহিমের বাবা ফখরুল ইসলাম মাছুম জানান, ছেলের মৃত্যুকে আল্লাহর ইচ্ছা বলে মেনে নিয়েছেন। ফাহিম এ বছর শহরের রেলওয়ে নূরানী জামে মসজিদে রমজান মাসে খতমে তারাবিহ পড়িয়েছেন। শুক্রবার জুমআর দিনে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেছেন। মাগরিব নামাজ আদায় করেছেন এবং এশার নামাজের পূর্বেই নিজ বাসায় তার মৃত্যু হয়। ফাহিম এ বছর তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম (এইচএসসি) পরীক্ষার্থী ছিলেন।
এদিকে কুরআনের এই হাফেজের নামাজে জানাজায় চাঁদপুর শহর ও আশপাশের মাদ্রাসা এবং মসজিদের খতিব, ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বহু আলেম-উলামা অংশগ্রহন করেন। নামাজে জানাযা ও দাফন শেষে পিতার নিরব কান্নার এই দৃশ্য সকলকে শোকাহত করে তোলে।