জুমার নামাজের বয়ানে সুদ-ঘুষ ও বেপর্দার বিরুদ্ধে বয়ান করায় মাওলানা আব্দুল আওয়াল নামের এক ইমামকে চাকরি ছাড়তে বলার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ইমাম চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চর দুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের আলোনিয়া গ্রামের বাইতুল মামুর জামে মসজিদে কর্মরত। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা (এ.এস.আই) ইমরান শাহীন চৌধুরী ওই গ্রামের বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশে কর্মরত।
এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) লিখিত অভিযোগ করা হলেও বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়। অভিযোগ কারী হলেন শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন সংগঠনের চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি আনাছ আমিনী।
মসজিদের জনপ্রিয় একজন ইমামকে চাকরি ছাড়ার এমন হুমকি দেয়ায় স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিদের মাঝে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এদিকে মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান শাহীন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত আড়াই বছর ওই মসজিদে খতিব ও পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্বপালন করে আসছেন মাওলানা আব্দুল আউয়াল। সম্প্রতি তিনি শুক্রবার জুমার নামাজের পূর্বে বয়ানে সুদ-ঘুস, বেপর্দা হারাম উপার্জনের বিরুদ্ধে আলোচনা করার পর থেকেই মসজিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান শাহীন চৌধুরী, সদস্য ফিরোজ গংরা ইমামকে মসজিদ থেকে চলে গিয়ে অন্য স্থানে চাকরি খোঁজার কথা বলেন। পরবর্তিতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগী ইমাম শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশনকে জানালে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার প্রার্থনা করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই মসজিদের মুসুল্লি মো. নিশান, রিপন চোধুরীসহ আরো অনেকেই বলেন, হুজুরের প্রকৃতপক্ষে কোন দোষ নেই, হুজুর সুদ-ঘুষ ও হারামের বিরুদ্ধে কথা বলেছে এটাই হুজুরের দোষ।
ওই মসজিদের আরো কয়েকজন মুসুল্লি জানান, মসজিদ কমিটির সদস্য ফিরোজ গংরা ইতোপূর্বে আরো কয়েকজন ইমামকে তারা অন্যায় ভাবে মসজিদ থেকে চাকরিচ্যুত করেছে। তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই হুজুরদের বিদায় করে দেয়া হয়।
এদিকে ওই মসজিদ থেকে চাকুরিচ্যুত হওয়া সাবেক ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. মনিরুল ইসলাম, মো. আইয়ুব আলী, মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, আমরা যখন ওই মসজিদে তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। তখনি আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান শাহীন চৌধুরী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইমাম আব্দুল আউয়ালের কোন দোষ নেই, তবে উনাকে চলে যেতে বলেছি কারণ, আমরা মসজিদে দুই জন নতুন হুজুর নিয়োগ দিবো।
থানার অভিযোগ দেয়ার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত পক্ষকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।