ঢাকা 12:16 am, Tuesday, 22 July 2025

মতলবে ছেলের ঋণের বোঝা সইতে না পেরে পিতার আত্মহত্যা

ছবি-সংগৃহিত।

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় প্রবাসী ছেলের ঋণের টাকার অপবাদ সইতে না পেরে গলায় ওড়না পিছিয়ে আত্মহত্যা করেছে পিতা আব্দুল হান্নান প্রধান (৬০)। ২০ জুলাই( রবিবার) বিকেলে উপজেলার নারায়ণপুর পৌরসভার পদুয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে মতলব দক্ষিণ খানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে,নিহত আব্দুল হান্নান প্রধানের ছেলে সুলতান হোসেন ওরফে রুবেল দীর্ঘদিন যাবৎ স্পেনে চাকরি করছেন।সে সুবাদে তার আপন এক চাচাতো ভাইকে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকার বিনিময়ে স্পেনে নিয়ে কর্মস্থলের ব্যবস্থা করে দেন তিনি।

এছাড়া মাদারীপুর জেলার কামরুল ইসলাম নামে এক আদম ব্যবসায়ীর সাথে স্পেনে পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে সুবাদে বাংলাদেশ থেকে আরো ৭ জনকে স্পেন নেয়ার জন্য আদম ব্যবসায়ী কামরুল ইসলামের সাথে চুক্তি করে সুলতান হোসেন ওরফে রুবেল। বাংলাদেশ খাবার ডেলিভারি

পরে রুবেল তার নিজ এলাকার ৭ জনকে স্পেন নেয়ার জন্য তাদের কাছ থেকে ২০ থেকে ২২ লক্ষ টাকা করে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে ওই আদমকে দেয়। পরবর্তীতে তাদেরকে স্পেনে নেয়ার পর কর্মস্থলের ব্যবস্থা করে দিতে না পারায় ৪ জন দেশে ফিরে এসেছে এবং ৩ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগণ তাদের টাকা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য তার বাবা আব্দুল হান্নান প্রধানকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। পরে তিনি কয়েকজনকে কিছু টাকা ফিরিয়ে দেন। এদিকে তার প্রবাসী ছেলে রুবেল এবং আদম ব্যবসায়ী কামরুলও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাই পাওনাদারদের টাকা দিতে না পেরে রাগে ক্ষোভে আত্মহত্যা করেন।

নিহত আব্দুল হান্নানের স্ত্রী মরিয়ম বেগম বলেন, মাদারীপুরের কামরুল ইসলাম নামে এক দালাল মাধ্যমে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নেয় এবং সাতজনকে বিদেশে পাঠায় আমার ছেলে রুবেল।

কিন্তু ওই দালাল তাদের কাউকেই কাজ দিতে না পারায় চারজন দেশে ফিরে আসে। তাদের টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে আমার স্বামী আত্মহত্যা করে। আমার স্বামী জায়গা জমি বিক্রি করে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা তাদের পরিশোধ করেছিল।

মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, বিদেশে চাকুরীর জন্য লোক নিয়ে তাদের কাজ দিতে না পারায় কেউ কেউ দেশে ফিরে এসে টাকার জন্য চাপ দেয় তার পিতা আব্দুল হান্নান প্রধানকে। জমি জমা বিক্রি করে কিছু টাকা ফিরিয়ে দেন। বাকী টাকার জন্য চাপ দিলে তা দিতে না পেরে রাগে ক্ষোভে আত্মহত্যা করেন তিনি।এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

মতলবে ছেলের ঋণের বোঝা সইতে না পেরে পিতার আত্মহত্যা

Update Time : 10:56:29 pm, Monday, 21 July 2025

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় প্রবাসী ছেলের ঋণের টাকার অপবাদ সইতে না পেরে গলায় ওড়না পিছিয়ে আত্মহত্যা করেছে পিতা আব্দুল হান্নান প্রধান (৬০)। ২০ জুলাই( রবিবার) বিকেলে উপজেলার নারায়ণপুর পৌরসভার পদুয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে মতলব দক্ষিণ খানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে,নিহত আব্দুল হান্নান প্রধানের ছেলে সুলতান হোসেন ওরফে রুবেল দীর্ঘদিন যাবৎ স্পেনে চাকরি করছেন।সে সুবাদে তার আপন এক চাচাতো ভাইকে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকার বিনিময়ে স্পেনে নিয়ে কর্মস্থলের ব্যবস্থা করে দেন তিনি।

এছাড়া মাদারীপুর জেলার কামরুল ইসলাম নামে এক আদম ব্যবসায়ীর সাথে স্পেনে পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে সুবাদে বাংলাদেশ থেকে আরো ৭ জনকে স্পেন নেয়ার জন্য আদম ব্যবসায়ী কামরুল ইসলামের সাথে চুক্তি করে সুলতান হোসেন ওরফে রুবেল। বাংলাদেশ খাবার ডেলিভারি

পরে রুবেল তার নিজ এলাকার ৭ জনকে স্পেন নেয়ার জন্য তাদের কাছ থেকে ২০ থেকে ২২ লক্ষ টাকা করে প্রায় দেড় কোটি টাকা নিয়ে ওই আদমকে দেয়। পরবর্তীতে তাদেরকে স্পেনে নেয়ার পর কর্মস্থলের ব্যবস্থা করে দিতে না পারায় ৪ জন দেশে ফিরে এসেছে এবং ৩ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগণ তাদের টাকা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য তার বাবা আব্দুল হান্নান প্রধানকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। পরে তিনি কয়েকজনকে কিছু টাকা ফিরিয়ে দেন। এদিকে তার প্রবাসী ছেলে রুবেল এবং আদম ব্যবসায়ী কামরুলও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাই পাওনাদারদের টাকা দিতে না পেরে রাগে ক্ষোভে আত্মহত্যা করেন।

নিহত আব্দুল হান্নানের স্ত্রী মরিয়ম বেগম বলেন, মাদারীপুরের কামরুল ইসলাম নামে এক দালাল মাধ্যমে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নেয় এবং সাতজনকে বিদেশে পাঠায় আমার ছেলে রুবেল।

কিন্তু ওই দালাল তাদের কাউকেই কাজ দিতে না পারায় চারজন দেশে ফিরে আসে। তাদের টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে আমার স্বামী আত্মহত্যা করে। আমার স্বামী জায়গা জমি বিক্রি করে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা তাদের পরিশোধ করেছিল।

মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, বিদেশে চাকুরীর জন্য লোক নিয়ে তাদের কাজ দিতে না পারায় কেউ কেউ দেশে ফিরে এসে টাকার জন্য চাপ দেয় তার পিতা আব্দুল হান্নান প্রধানকে। জমি জমা বিক্রি করে কিছু টাকা ফিরিয়ে দেন। বাকী টাকার জন্য চাপ দিলে তা দিতে না পেরে রাগে ক্ষোভে আত্মহত্যা করেন তিনি।এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।