গোপনে ২য় বিয়ে করে ১ম স্ত্রীকে অত্যাচারের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ১ম স্ত্রী। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের।
ঘটনার বিবরনে জানাযায়, উপজেলার শাশীয়ালী গ্রামের শাহ আলম এর পুত্র মো. ফয়সাল ভালোবেসে বিয়ে করেন কবি রূপসা গ্রামের নাছির ভূঁইয়ার মেয়ে খাদিজা আক্তার মিতুকে। মিতু এ প্রতিনিধিকে জানান, ‘২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি ফয়সাল আমাকে তুলে নিয়ে তাদের বাড়িতে বিয়ে করে। সেখানে তার মা বাবাও ছিলো। শুরুতে এ বিয়েটি আমার মা বাবা মেনে না নিলেও মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে পরবর্তীতে আমাদের বিয়েটি মেনে নেয়। ফয়সাল তখন বেকার ছিলো। সে কিছুই করতো না।
আমাদের ভাই না থাকায় আমার মা-বাবা তাকে শুধু জামাই না, সন্তান হিসেবেও বিবেচনা করতো। তাইতো নিজেদের খরচে জামাইকে বিদেশ পাঠায়। ২০১৭ সালে তাকে আমরা আমাদের খরচে সৌদি আরব পাঠাই। বিয়ের এক বছরের মাথায় আমাদের একটি কন্যা সন্তান হয়। নাম ফাতেমা ইসলাম। সে বিদেশ যাওয়ার পর থেকে পরিবর্তন হয়ে যায়। আমাদের সাথে তেমন একটা যোগাযোগ রাখতো না। খোঁজ-খবর নিতো না। কোনো ধরনের টাকা পয়সাও পাঠাতো না। আমি এবং আমার মেয়ে সম্পূর্ণ আমার বাবা এবং ভগ্নিপতির উপর নির্ভর হয়ে পড়ি। তারাই আমাদের ভরণ পোষন চালাতো। এর মাঝে সে (ফয়সাল) এক বার দেশে আসে। দেশে এসে আমাদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালায়। তখনই আমি জানতে পারি সে ২য় বিয়ে করেছে।
ফয়সাল ২০২১ সালের ২৫ মে মাগুরা জেলার খোকন মিয়ার মেয়ার মেয়ে রিতা খাতুনকে বিয়ে করে। দেশের আসার পর সে ঐখানেই বেশী থাকতো। ফয়সাল প্রায় সময়ই আমাকে চাপ প্রয়োগ করতো বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিতে। টাকা না দিলে সে আমাকে মারত। ফয়সাল এবং তার পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আমি বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করি। মামলার বাদী করি ফয়সাল, তার পিতা, মাতা এবং ২য় স্ত্রীকে। এই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তারা নানাভাবে আমাকে চাপ প্রয়োগ করে। এমনকি হুমকী ধমকীও দেয়।
২০২৫ সালের ৮ জুন এবং ২৯ জুন দুই দপায় তারা আমার বাড়িতে এসে আমাকে মারধর করে, কেন আমি মামলা প্রত্যাহার করিনি। বাধ্য হয়ে আমি ঐ সময় ফরিদগঞ্জ থানায় তাদের বিরুদ্ধে জিডি করি। এখন সে আমার বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করছে, আমি নাকি তার প্রেরিত টাকা দিয়ে জায়গা এবং বাড়ি করেছি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। সে যদি প্রমাণ করতে পারে তার টাকায় আমি বাড়ি এবং জমি কিনেছি, তাহলে যেকোনো শাস্তি আমি মাথা পেতে নেবো। কয়েক বছর বিদেশ করে এতো টাকা সে কীভাবে পাঠাবে?
ইউপি মেম্বার আবদুল খালেক পাটওয়ারী বলেন, ওরা আসলে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। প্রথমে মেয়ের বাবা মা মেনে না নিলেও একটা সময় মেনে নেয়। ওরা কিন্তু আগে থেকেই আত্মীয়। খালাতো ভাই বোন। আর মেয়েদের কোনো ভাই নেই। তাই মেয়ের বাবা পরবর্তীতে জামাইকে ছেলের মতোই জানতো। ছেলেটি প্রথম বেকার ছিলো। ছেলেদের অবস্থা তেমন একটা ভালো ছিলো না। একটা সময় ছেলে মেয়ের কাছেই থাকবে সে চিন্তা থেকে কিছু সম্পত্তি ছেলের নামে লিখে দেয় এবং নিজেদের খরচে তাকে বিদেশ পাঠায়। কিন্তু একটা সময় ছেলে পরিবর্তন হয়ে যায়। এমনকি সে গোপনে ২য় বিয়েও করে। তাই তারা তাদের দেওয়া সম্পত্তি ফিরিয়ে নেয়।
অভিযুক্ত ফয়সাল বিদেশ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।