মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের একটি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা ইসলামের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলায় তাকে শোকজ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তিনি হলেন ১১১ নং মতলব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চন্দনা রাণী ঘোষ। ওই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির দুই (মুসলিম ও হিন্দু) শিক্ষার্থীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদের সমাধান করতে গিয়ে ক্লাশ টিচার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনে কুরুচিপূর্ণ কথা বলার অপরাধে শিক্ষিকাকে শোকজ করেছে শিক্ষা অফিস। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুন নাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, গত ১২ আগস্ট (বুধবার) ১১১ নং মতলব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ ও দেবাশীষ বর্মনের সাথে ঝগড়া হয়। ওই ঝগড়া মিটাতে গিয়ে ইসলাম ধর্মের অনুভূতির উপর আঘাত করে কথা বলেন ক্লাশ টিচার চন্দনা রাণী ঘোষ। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনা এবং উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রাতেই মতলব ইমাম উলামা ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিলের উদ্যেগ নিলে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এবং ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস পেয়ে তাদের কর্মসূচী স্থগিত করেন।পরদিন বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই ঘটনাটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য উভয় পক্ষের স্বীকারোক্তি নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন। এসময় মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ, মতলব বাজার শাহী জামে মসজিদের ইমাম মুফতি গোলাম সারোয়ার ফরিদী, উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমুন নাহারসহ ইমাম উলামা ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ, মতলব প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক ও অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সকলের উপস্থিতিতে মতলব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চন্দনা রাণী ঘোষ তার তার দোষ স্বীকার করে বলেন, এসব কথা বলা মোটেই ঠিক হয়নি।
আমার অনেক বড় ভুল হয়েছে। এ ভুলের জন্য সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। তার এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে চাকরী থেকে অব্যাহতির দাবী জানান মতলব বাজার শাহী জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মাওলানা গোলাম সারোয়ার ফরিদীসহ প্রতিবাদকারী সংগঠনগুলো।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন,তার অপরাধের জন্য প্রথমত তাকে শোকজের জন্য শিক্ষা বিভাগকে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পাঠদান থেকে বিরত থাকবে ওই শিক্ষিকা। এছাড়া বিষয়ট জেলা প্রশাসককেও অবহিত করা হয়েছে।
অপরদিকে শিক্ষিকা চন্দনা রাণী ঘোষ সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তার দোষ স্বীকার করে দেশবাসীর নিকট দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।