ঢাকা 10:58 am, Tuesday, 11 November 2025

স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় বিচার প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ক্ষোভ প্রকাশ

চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট এলাকায় প্রবাসীর বাড়িতে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও মোবাইলসহ মুল্যাবান জিনিসপত্র চুরির ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ২০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামী আটক না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক দুই আসামী রয়েছে জামিনে। সদর মডেল থানা পুলিশ বলছে আসামী আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সরেজমিন প্রবাসী আবুল কালাম প্রধানিয়ার বাড়ির চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া ক্ষতিগ্রস্ত সালমান খানের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, গত ২১ অক্টোবর রাতে আমার বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। ওই দিন থানায় জিডি করা হয়।

পরদিন বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে আমার স্ত্রী শাবনুর (২২) বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্থানীয়দের সহায়তায় দুইজন আটক হয়। তারা হলেন- সদরের শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে রিমন হোসেন রকি ও কাশেম পাটওয়ারীর ছেলে আরাফ উদ্দিন নয়ন।

মামলার বাদী শাবনুর বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই চোর সনাক্ত হয়। তাদেরকে পুলিশ আটক করে। তারা কিভাবে আবার জমিনে মুক্ত হয়, বলতে পারবো না। আমি এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবী করছি এবং আমার চুরি যাওয়া দুই ভরি স্বর্ণের চেইন, এক ভরি ওজনের দুটি বালা, দুটি স্যামসাং মোবাইল (এস-২০ ও এ-১২ মডেল) এবং নগদ ২২ হাজার টাকা ফেরত চাই।

সালমান খান বলেন, প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হলেও চুরির ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামী আটক হয়নি। ২২ অক্টোবর আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্থানীয়দের সহায়তায় দুইজনকে পুলিশে সোপর্দ করি। তাদেরকে আদালতে চালান দেয়া হলেও গত ২৬ অক্টোবর তারা জামিনে চলে আসে। ওইদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আমার চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারে জামিনে থাকা দুইজনসহ প্রধান আসামীকে আটক করার দাবী করছি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।

বাড়ির মালিকের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ঘটনার দিন ওই তিন যুবক একসাথে এসেছে। তারা দুইজন নীচ তলায় ছিলো। একজন চতুর্থ তলায় উঠে এবং তালা ভেঙে জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তাদের তিনজনের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়। ঘটনার পরে একজন একা বের হয়। দুইজন অন্য রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যায়। যদিও বলাবলি হয় রকি ও আরাফ নামের দুই ছেলে বাসা ভাড়ার জন্য আসছে। কিন্তু তারা আমার সাথে কথাও বলেনি এবং ফোনও দেয়নি।

এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মামুন বলেন, মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, মামলা হওয়ার পর আমরা ঘটনাটি খুবই গুরুত্বসহকারে দেখছি। সিসিটিভির ফুটেজ আমাদের সংগ্রহে আছে। দুইজনকে আটক করা হয়। তারা দুইজন জামিনে আছে। প্রধান আসামীকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, আমি যতটুকু জেনেছি সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনায় জড়িতের চিহ্নিত করা হয়েছে। থানার ওসিকে ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

যেসব সাংবাদিকদের দেখলে মানুষ ভয় পায়, তাদেরকে স্বার্থ উদ্ধারে সাময়িক কাজে লাগায়, পরে ছুঁড়ে ফেলে-বিদায়ী জেলা প্রসাশক মো. মোহসিন উদ্দিন

স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় বিচার প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ক্ষোভ প্রকাশ

Update Time : 09:48:25 am, Tuesday, 11 November 2025

চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট এলাকায় প্রবাসীর বাড়িতে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও মোবাইলসহ মুল্যাবান জিনিসপত্র চুরির ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ২০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামী আটক না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক দুই আসামী রয়েছে জামিনে। সদর মডেল থানা পুলিশ বলছে আসামী আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সরেজমিন প্রবাসী আবুল কালাম প্রধানিয়ার বাড়ির চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া ক্ষতিগ্রস্ত সালমান খানের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, গত ২১ অক্টোবর রাতে আমার বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। ওই দিন থানায় জিডি করা হয়।

পরদিন বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে আমার স্ত্রী শাবনুর (২২) বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্থানীয়দের সহায়তায় দুইজন আটক হয়। তারা হলেন- সদরের শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে রিমন হোসেন রকি ও কাশেম পাটওয়ারীর ছেলে আরাফ উদ্দিন নয়ন।

মামলার বাদী শাবনুর বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুই চোর সনাক্ত হয়। তাদেরকে পুলিশ আটক করে। তারা কিভাবে আবার জমিনে মুক্ত হয়, বলতে পারবো না। আমি এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবী করছি এবং আমার চুরি যাওয়া দুই ভরি স্বর্ণের চেইন, এক ভরি ওজনের দুটি বালা, দুটি স্যামসাং মোবাইল (এস-২০ ও এ-১২ মডেল) এবং নগদ ২২ হাজার টাকা ফেরত চাই।

সালমান খান বলেন, প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হলেও চুরির ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামী আটক হয়নি। ২২ অক্টোবর আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে স্থানীয়দের সহায়তায় দুইজনকে পুলিশে সোপর্দ করি। তাদেরকে আদালতে চালান দেয়া হলেও গত ২৬ অক্টোবর তারা জামিনে চলে আসে। ওইদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আমার চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারে জামিনে থাকা দুইজনসহ প্রধান আসামীকে আটক করার দাবী করছি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।

বাড়ির মালিকের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ঘটনার দিন ওই তিন যুবক একসাথে এসেছে। তারা দুইজন নীচ তলায় ছিলো। একজন চতুর্থ তলায় উঠে এবং তালা ভেঙে জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তাদের তিনজনের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়। ঘটনার পরে একজন একা বের হয়। দুইজন অন্য রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যায়। যদিও বলাবলি হয় রকি ও আরাফ নামের দুই ছেলে বাসা ভাড়ার জন্য আসছে। কিন্তু তারা আমার সাথে কথাও বলেনি এবং ফোনও দেয়নি।

এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মামুন বলেন, মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, মামলা হওয়ার পর আমরা ঘটনাটি খুবই গুরুত্বসহকারে দেখছি। সিসিটিভির ফুটেজ আমাদের সংগ্রহে আছে। দুইজনকে আটক করা হয়। তারা দুইজন জামিনে আছে। প্রধান আসামীকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, আমি যতটুকু জেনেছি সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনায় জড়িতের চিহ্নিত করা হয়েছে। থানার ওসিকে ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।