ফরিদগঞ্জে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে মতবিনিময় সভায় আবেগঘন পরিস্থিতি তৈরি হয়। বক্তব্য দিতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হন ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ হান্নান। তার সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়েন উপস্থিত হাজারো নেতা-কর্মীও।
দীর্ঘ তিন দশক ধরে সমাজসেবা ও মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে উপজেলা জুড়ে ‘আশ্রয়স্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এম এ হান্নান। দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই নেতা দলীয় মনোনয়ন দুইবার পেলেও শেষ পর্যন্ত ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক অপশক্তির কাছে হার মানতে হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতার কারণে দল থেকে বহিষ্কৃতও হতে হয়েছিল তাকে।
তবুও দল ত্যাগ করেননি; বরং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলের হাল ধরে রেখেছেন তিনি—এ কথা স্মরণ করতে গিয়েই আবেগে ভেঙে পড়েন।
বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এম এ হান্নান বলেন, “ফরিদগঞ্জের মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকেই নিজের উপার্জিত অর্থ ব্যয় করি। সামাজিক–মানবিক কাজে আজীবন নিজেকে নিয়োজিত রাখব। এই মানুষের কাছে আমার কোনো দাবিদাওয়া নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি রাজনীতি করি ফরিদগঞ্জকে একটি আধুনিক, শিক্ষাবান্ধব এবং কর্মসংস্থানসমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে। ব্যক্তিগত অর্থে যে কাজগুলো করি, তাতে সরকারি বরাদ্দ যুক্ত হলে আরও বড় পরিসরে মানুষের সেবা করা সম্ভব হবে। এমপি হওয়া মানে ক্ষমতা ভোগ নয়; জনগণের সেবক হওয়াই আমার লক্ষ্য। আমি কখনো দুর্নীতি করব না—করার প্রয়োজনও নেই।
এ সময় তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে আবেদন করে বলেন, আমাকে ফরিদগঞ্জের জনগন অন্তত ১বার জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চায়। তাই ফরিদগঞ্জের জনগণের জন জরিপের ভিত্তিতে আপনি (তারেক রহমান) আমাকে একবার সুযোগ দেন।
সম্প্রতি দল প্রাথমিকভাবে অন্য একজনকে মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি নিরুৎসাহ না হওয়ার কথা জানান। তার বিশ্বাস “গণতন্ত্রের মা, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান আমার দীর্ঘদিনের ত্যাগ ও কাজ মূল্যায়ন করবেন। নেতা-কর্মীদের হৃদয়ের কথা বুঝেই শেষ পর্যন্ত ধানের শীষ আমাকে দেবেন, ইনশাআল্লাহ।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতা-কর্মীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখেন হান্নান, আন্দোলন করেন হান্নান ও নেতা-কর্মীরা, মামলায় পড়েন তারাই, কিন্তু মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে অন্যকে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”
তাদের দাবি, এম এ হান্নানই ফরিদগঞ্জে বিএনপির মূল ভরসা। তাই তাকে ধানের শীষ প্রতীক দিলে বিপুল ব্যবধানে বিজয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি ফরিদগঞ্জে বিএনপির পুরোনো ঐতিহ্যও পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ 























