এবার রুশ বাহিনীতে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে ভয়ানক যুদ্ধবিমান টুপোলেভ। সীমান্তে পরপর কয়েকটি ভারী ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পর ভয়ংকর সুপারসনিক যুদ্ধবিমান টুপোলেভ টু-১৬০এম যুক্ত হচ্ছে। ন্যাটোর কাছে ব্ল্যাকজ্যাক নামে পরিচিত কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী বোমারু বিমানটি সোভিয়েত যুগের টু-১৬০এম প্রথম অত্যাধুনিক সংস্কার। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই সরবরাহ করা হবে।
রাশিয়ার মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট করপোরেশনের প্রধান ইউরি স্লিউসার শুক্রবার বলেছেন। ১২ জানুয়ারি, ২০২১-এ বিমানটি প্রথমবারের মতো আকাশে উঠেছিল। তাস।
রশিয়া-১ টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্লিউসার বলেন, ‘এটি নতুন ক্ষমতা এবং ফাংশনসহ টু-১৬০ এর ওপর ভিত্তি করে একটি উচ্চমাত্রায় আধুনিকায়ন করা বিমান। আমরা এটি দুটি উপায়ে করেছি : আমরা টু-১৬০ বিমানের বিদ্যমান ফ্লিটকে আপগ্রেড করেছি। এই বছর কাজান সামরিক ঘাঁটিতে নতুন স্ট্যান্ডার্ড টু-১৬০এম উৎপাদন করেছি যা দূরপাল্লার উড়োজাহাজের বহরে যোগ করা হবে।’ গত আগস্টে বলেছিলেন যে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রথম নবনির্মিত টু-১৬০এম সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেটি কাজানের একটি বিমান উৎপাদন কারখানার একটি এয়ারফিল্ড থেকে উড্ডয়ন করেছিল।
ফ্লাইটটি ৬০০ মিটার উচ্চতায় চালানো হয়েছিল এবং প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল। টু-১৬০এম হলো সোভিয়েত-ডিজাইন করা টু-১৬০-এর একটি আপগ্রেড সংস্করণ, যাকে সাদা রাজহংস বলা হয়। টু-৯৫এমএসের সাথে এটি দূরপাল্লার সামরিক বিমানের রাশিয়ান বহরের মেরুদণ্ড। টু-১৬০ হলো সর্বকালের বৃহত্তম সুপারসনিক সামরিক বিমান। বিশ্বের সবচেয়ে ভারী যুদ্ধবিমান, যা পারমাণবিক-টিপড ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম। এটি মার্কিন দূরপাল্লার বোমারু বিমান রকওয়েল বি-১ ল্যান্সারের সমকক্ষ। ২০১৫ সালে রুশন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু আদেশ দিয়েছিলেন যে, টু-১৬০ উৎপাদন পুনরায় শুরু করা হবে এবং বিমানটিকে আপগ্রেড করা হবে।
ইউক্রেনকে ‘অসামরিকীকরণ’ লক্ষ্যের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি : ইউক্রেনকে ‘অসামরিকীকরণের’ অগ্রগতির কথা জানিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘এটা বলা যেতে পারে যে, নিরস্ত্রীকরণের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।’ তাস।
এদিকে বাস্তবতা স্বীকার করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেন থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন নিজেই প্রথম ‘যুদ্ধ’ শব্দটি ব্যবহার করে বলেন, তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি শেষ করার আশা করছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, ‘২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাকি বিশ্ব জানত যে, পুতিনের ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ ছিল বিনা উসকানিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে একটি অযৌক্তিক যুদ্ধ। অবশেষে ৩০০ দিন পর পুতিন এটিকে যুদ্ধ বলে কী বুঝাতে চাইছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাস্তবতা স্বীকার করার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে, আমরা তাকে ইউক্রেন থেকে তার বাহিনী প্রত্যাহার করে এই যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান জানাই। পুতিনের পরিভাষা যাই হোক না কেন, ‘তার সার্বভৌম প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে মৃত্যু, ধ্বংস এবং বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে।’
ইউক্রেনে শস্য উৎপাদন ৪০ শতাংশ কমেছে : ইউক্রেনে রুশ হামলার কারণে বছরে দেশটির শস্য উৎপাদন কমেছে ৪০ শতাংশ। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান ইউক্রেনের শস্য সমিতির প্রধান সের্গেই ইভাশচেঙ্কো। বলেন, আমরা চলতি বছরের শেষ নাগাদ ৬৫ থেকে ৬৬ মিলিয়ন শস্য উৎপাদন আশা করছি।
যদিও এর আগের বছর রেকর্ড ১০ কোটি ৬০ লাখ শস্য উৎপাদিত হয়েছিল। ইভাশচেঙ্কো বলেছেন, এর মূল কারণ যুদ্ধ। এর কারণে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে এবং বপন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ইভাশচেঙ্কো আরও বলেন, অনেক এলাকা অবরুদ্ধ। জমিতে যুদ্ধ চলছে। অবকাঠামো ধ্বংস হচ্ছে।