অনলাইন নিউজ ডেস্ক :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ আত্মগোপনে আছেন বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান।
তিনি বলেন, পারিপার্শ্বিক যে কথাগুলো আসছে যেগুলো ভাইরাল হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে আত্মগোপনে আছে। তবে যতটুকু তথ্য আছে, সরকারি কোনো বাহিনী এ কাজটা করেনি। প্রার্থী নিখোঁজের ঘটনা ভোটের মাঠে নতুন মেরুকরণ হবে না বলে মনে করেন এই কমিশনার।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ। তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, শুক্রবার রাত থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ বিষয়ে আনিছুর রহমান বলেন, আমরা প্রতিবেদন পেয়েছি। তাতে বলা হয়েছে, প্রার্থী নিখোঁজ। তিনি বলেন, ওই প্রার্থী কোথায় আছেন, তা একবার শনাক্ত করা গিয়েছিল। কিন্তু মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পরে আর তার অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। তারপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রার্থীর কথোপকথনের একটি অডিও তিনি শুনেছেন। প্রার্থী অন্যান্য মিডিয়ার সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাতে মনে হয় যে তার এ রকম একটি পরিকল্পনা আগেই করা ছিল। তাকে খুঁজে পেলে পুরোটা জানা যাবে। ইসি আনিছুর আরও বলেন, ইচ্ছা করে একটা লোক যদি লুকিয়ে থাকে, তাহলে তাকে খুঁজে বের করা একটু ডিফিকাল্ট।
আসিফ আহমেদ আত্মগোপনে গিয়েছেন এমন ধারণার কারণ ব্যাখ্যা করে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য-উপাত্ত আছে, তাতে এ রকমই ধারণা জন্মে। কারণ অডিওটা শুনেছি, ভাইরাল হয়েছে। সে অডিওতে কিন্তু এ রকমই আছে, তিনি তার স্ত্রীর নামে তার কণ্ঠে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন কী নিয়ে যেতে হবে, সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দিতে বলেছেন। ১০ মিনিট পর বের হয়ে গেলে চালু করতে বলেছেন। তার মানে কী? তার মানে হচ্ছে, একটা পরিকল্পনা তারা করেছেন। এটাই আমরা অনুমান করছি।
তিনি আরও বলেন, প্রার্থীর স্ত্রী বা কেউ এখন পর্যন্ত তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে ইসির কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন চেয়েছিলাম। প্রার্থীর স্ত্রী এখন পর্যন্ত পুলিশ বা রিটার্নিং কর্মকর্তা কাউকে বিষয়টি জানাননি। সাধারণত কেউ নিখোঁজ হলে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। সেটাও করা হয়নি।
নিখোঁজ প্রার্থীর অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে দাবি করে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য তিনি এ আত্মগোপনে যেতে পারেন। তিনি নিজেও বলেছেন তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় ভোটের মাঠে ভিন্ন মেরুকরণ তৈরি হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় তেমন কিছু হবে না। খুব বেশি যে প্রভাব পড়বে এরকম কিছু না। তার স্ত্রী তার পক্ষে সব কাজ করে যাচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও অন্য পাঁচটি সংসদীয় আসনে সুন্দর পরিবেশে ভোট হবে আশা প্রকাশ করে আনিছুর রহমান বলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। ভোটকেন্দ্রে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সাড়ে আটটা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ভোট চলবে। ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার এডুকেশন যথেষ্ট করা হচ্ছে। সুন্দর পরিবেশে সুষ্ঠু ভোট হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই কমিশনার।