শাহরাস্তি প্রতিনিধি:
গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন ব্যাংক এশিয়ার এক এজেন্ট। চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার মেহার কালীবাড়ি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে ভুক্তভোগীরা এজেন্ট শাখায় এসে বিক্ষোভ করে।
কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, তাদের সঞ্জয়পত্রের টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে এশিয়া ব্যাংকের কালিবাড়ী বাজারের এজেন্ট হৃদয় চন্দ্র পাল উধাও হয়ে যায়। এশিয়া ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি থানা কমপ্লেক্সের পাশেই অবস্থিত শাহরাস্তি পোস্ট অফিসের নতুন ভবনের কাজ শুরু হওয়ায় মেহার কালিবাড়ী বাজারে অস্হায়ীভাবে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট অফিসের একটি কক্ষে বিগত কয়েক মাস ধরে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম চলে আসছে।
শাহরাস্তি পোস্ট মাস্টার মো. মজিবুর রহমান জানান, ব্যাংক এশিয়ার সঙ্গে পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা চুক্তি রয়েছে সেই কারণে একই অফিসে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি জানান, আমার কাছে চেকের কোন কাজ নেই। সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে হলে (এম আই সি আর) চেক থাকতে হয়। ঐ ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে আমাকে চেক জমা দিতে হয়। এই চেক কালেকশনের জন্য আমি প্রধান ডাক ঘরে পাঠাই।
তিনি জানান, যেহেতু ব্যাংক এশিয়া এমআইসিআর চেক দিতে পারে তাই এজেন্ট শাখায় গ্রাহকরা এ কাজটি করেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ এজেন্ট হৃদয় চন্দ্র পাল জালিয়াতির মাধ্যমে জাল রিসিটের মাধ্যমে টাকা গুলো তার নিজের অ্যাকাউন্টে নিয়ে নেয়।
গত বুধবার ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গ্রাহকদের ৪০ লাখ টাকা ২ ফেব্রুয়ারি ও ৫ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ টাকা করে ২ কিস্তিতে পরিশোধ করতে করবে বলে হৃদয় চন্দ্র পাল অঙ্গীকার নামা দেয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই হৃদয় তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে গ্রাহকরা এজেন্ট শাখায় জড়ো হতে থাকে। এ সময় বেশ কয়েকজন দাবি করেন প্রায় কোটি টাকা অধিক অর্থ নিয়ে হৃদয় উধাও হয়ে যায়। উপস্থিত গ্রাহকদের মধ্যে অফিস চিতোষীর মরিয়ম আক্তারের ১০ লাখ টাকা, নিজ মেহার গ্রামের আব্দুল মালেকের ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা, পদুয়া গ্রামের ইয়াছিনের ৫ লাখ টাকা, কচুয়া উপজেলার সোরাইস গ্রামের সুচিত্রার ৬ লাখ টাকা, হাজেরা খাতুনের ৩ লাখ ঝর্ণা আক্তারের ২ লাখ, রোজিনা বেগমের ২ লাখ, মামুন হোসেনের ১৫ লাখ, মো. জহির হোসেনের ৮ লাখ ২০ হাজার, সুরাইয়ার ২ লাখ ৫০ হাজার, সালেহা বেগমের ১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে বলে তারা দাবি করেন। এছাড়া আরও বেশ কিছু গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় হৃদয়।
ব্যাংক এশিয়ার জেলা ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর তদন্ত চলছে। কতো টাকা নিয়ে হৃদয় জালিয়াতি করেছে তা তদন্ত শেষে বলা যাবে। গ্রাহকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।