প্রথম আলো আর বিএনপি একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশেই আমরা দেখেছি— স্বাধীনতা দিবসের দিন সে দেশের গণমাধ্যম অনুপ্রেরণামূলক বাণী দিয়ে উৎসাহ করে। আর প্রথম আলো তাদের প্রভুদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য জাতির সামনে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে, তরুণ প্রজন্মকে হতাশা এবং উসকানি দেওয়ার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
কাদের বলেন, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়টি যে আমাদের রাজনৈতিক জীবনের সংকট ঘনীভূত করছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়ে কী করব? শিরোনামের সংবাদ এ ষড়যন্ত্রটির একটি অংশ। এই সংবাদটি মিথ্যা, বানোয়াট, ষড়যন্ত্রমূলক এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তিনি বলেন, সাত বছরের একটি শিশুকে ১০ টাকা ঘুস দিয়ে বক্তব্য নেওয়া, সেটি কি সাংবাদিকতা। স্বাধীনতা দিবস তরুণ প্রজন্মের দেশাত্মবোধ সৃষ্টির এক অনন্য দিন, অথচ এই দিনে পলিটিক্যাল সিলেক্টটেড বিশেষ এক এজেন্ডা সেটিংয়ের উদ্দেশ্য এই সংবাদটি প্রকাশ মহান স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার শামিল নয়?
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা দিবসের দিনে দেশের অর্জন মর্যাদা নিয়ে তামাশা করা সাধারণ কোনো ভুল নয়। নিশ্চয়ই এটি অনৈতিক কাজই নয়, ফৌজদারি অপরাধ। দেশের একটি মহল ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালাচ্ছে। সেটি দেশের কোনো বিবেকবান মানুষের না বোঝার কথা নয়। প্রথম আলোর সম্পাদক-প্রকাশক কী দায় এড়াতে পারেন? তারা কি তাদের এই গৃহীত অপরাধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন? ক্ষমা চেয়েছেন? কোনোটাই করেননি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ প্রতিষ্ঠান বলছে— সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর জন্যই সরকার এ ধরনের মামলা করেছে প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে। আমি প্রথমে বলতে চাই— সরকার কিন্তু এখানে মামলা করেনি। মামলা সাধারণ একজন নাগরিকও করতে পারে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রথম আলো আর বিএনপি সাপ্লিমেন্ট করে একে অপরকে। টার্গেট শেখ হাসিনা, টার্গেট সরকার, টার্গেট জনগণ। টার্গেট আগামী নির্বাচন ভণ্ডুল করা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক লিংক এদের অনেক শক্ত। তাই এ খবর ছড়িয়ে দিয়েছে যে দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির জন্য রিপোর্ট করায় এই পত্রিকার, এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য রিপোর্ট করার জন্য টকশোতে অংশ নেওয়ার জন্য সরকার কি একজন লোকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে? তা হলে মিথ্যা সংবাদ আজকের সারা দুনিয়ায় রটানো হচ্ছে যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্যই রিপোর্ট করাতে এই সাংবাদিক এই সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
কাদের বলেন, সাংবাদিকরা আমাদের শত্রু নয়। কিন্তু প্রথম আলো আপনাদের সঙ্গে শত্রুতা করছে। বিএনপিকে আমরা ভাবি প্রতিপক্ষ, বিএনপি আমাদের ভাবে শত্রু। প্রথম আলো আমাদের শত্রু ভাবে। প্রত্যেকের সম্পাদকীয় পলিসি আছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ করে আমরা কি ভুল করে ফেললাম! সেই ডিজিটাল মাধ্যমে এখন আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে। তারা এ বিষয়টা অত্যন্ত চতুরভাবে করে যাচ্ছে।
যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাহজাহান খান, লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুম, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ দপ্তর সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।