চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আপন ভাতিজা মেহেদী হাসান শুভ’র হাতে খুন হয়েছেন বিউটিশিয়ান ও প্রবাসী হারুনুর রশিদের স্ত্রী মমতাজ বেগম রিক্তা (৩৫)। খুন হওয়ার ৩৬ ঘন্টার মধ্যে থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি এবং আটকৃতদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক খুনের রহস্য বের করতে সক্ষম হয়। এমন তথ্য জানিয়েছেন থানা পুলিশ।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদগঞ্জ থানায় প্রেস কনফারেন্সে হত্যার তথ্য বিবরণ তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সার্কেল) পংকজ কুমার দে।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ মন্ডল ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
স্ত্রী হত্যার খবর জানতে পেরে রিক্তার স্বামী হারুনুর রশিদ (রাকিবুল হাসান) বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে আসেন এবং আজ ফরিদগঞ্জ থানায় নিজে বাদী হয়ে স্ত্রীর হত্যার ঘটনায় মামলা করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ কুমার দে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ঘটনার দিন বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে দুবাই প্রবাসী হারুনুর রশিদ (রাকিবুল হাসান) স্ত্রী এবং বিউটিশিয়ান মমতাজ বেগম রিক্তার সাথে তার আপন ভাতিজা আবদুল মালেকের ছেলে ঢাকায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ুয়া মেহেদী হাসান শুভর সাথে কথা কাটাকাজি হয়। এক পর্যায়ে বাবা মায়ের নামে কটু কথা সইতে না পেরে ভারতীয় সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল দেখানো খুনের আদলে হাতুড়ি দিয়ে মাথা আঘাত করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ছুরি দিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয় এবং ঘরে থাকা লেপে মুড়িয়ে বাথরুমে ফেলে রাখে।
প্রেস ব্রিফিং শেষে থানা পুলিশ অভিযুক্ত মেহেদী হাসান শুভকে বিকেলে চাঁদপুর আদালতে পাঠায়।
১৭ জানুয়ারি ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া বাজারের বধুয়া বিউটি পার্লার সত্ত্বাধিকারী মমতাজ বেগম রিক্তা নিজের বাবার বাড়িতে নৃশংস খুনের শিকার হন। ঘটনার পরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার আপন বোনের ছেলে বাপ্পী ও ভাতিজা মেহেদী হাসান শুভকে আটক করে। এক পর্যায়ে মেহেদী হাসান শুভ হত্যাকণ্ডের কথা স্বীকার করে। পুলিশ তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক উপজেলার চরমান্দারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুর থেকে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও কাটার আলামত হিসেবে উদ্ধার করেন।
মমতাজ বেগম রিক্তার সাথে ১০ বছর পূর্বে চট্টগ্রামের প্রবাসী হারুনুর রশিদ (রাকিবুল হাসান) এর বিয়ে হয়। কিন্তু রিক্তার পিতা-মাতা না থাকায় সে বাবার বাড়ীতে থাকত। রিক্তার কোনো সন্তান নেই।