ঢাকা ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেনে নিন, রোজা রেখে কি রক্ত দিতে পারবেন ?

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৫৮:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
  • ৫৫ Time View

এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে দুই বা তারও বেশি মরণাপন্ন রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা যায়। রোজায়ও রোগীর জরুরি রক্ত দরকার হয়। কিন্তু অনেকেই এ সময়ে রক্ত দেওয়া নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। তবে রোজা থাকা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত দিলে রোজা ভাঙে না। কারণ, এখানে রক্ত বের করে নেওয়া হচ্ছে, দেওয়া নয়।

একজন সুস্থ–সবল ব্যক্তির শরীরে প্রায় ১ থেকে দেড় লিটার বাড়তি রক্ত থাকে, তাই যেকোনো জরুরি অবস্থায় রক্তদান করলেও শরীরে ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়ে না। অবশ্য এই পরিমাণের চেয়ে বেশি রক্তক্ষরণ হলে অন্য কথা। রক্তদান–পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় তিন-চার লিটার পানি বেশি খেলে, রক্তদানজনিত ভলিউম–স্বল্পতা কেটে যায়। তবে কেউ যদি শারীরিকভাবে দুর্বল থাকে, মনে করেন যে তিনি রক্ত দিলে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেলবেন, তাহলে তাঁর জন্য ইফতারের পর রক্ত দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

আমরা জানি, স্বাভাবিক প্রবেশপথ দিয়ে পেটে বা মস্তিষ্কে কোনো কিছু গেলে রোজা ভেঙে যায়। কিন্তু শরীর থেকে কোনো কিছু বের হলে রোজা ভাঙে না। তাই দুর্ঘটনায় পড়ে, হাত-পা ভেঙে বা কেটে রক্ত বের হলে রোজা ভাঙবে না। রক্ত গড়িয়ে পড়লে অজু ভঙ্গ হয়, রোজা নয়। রক্তদানের পর রক্তদান কেন্দ্রে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে রক্তের ভলিউম ঠিক হয়ে যায়। এই বিশ্রামে শরীর ঝিমঝিম করা, মাথা হালকা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

রোজার দিনগুলোয় রক্তদানের পর ২-৪ ঘণ্টা ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। যেমন শারীরিক পরিশ্রম, সাইকেল চালানো, অধিক উচ্চতায় কাজ করা ইত্যাদি। রক্তদান–পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তরলজাতীয় উপাদান যেমন ডাবের পানি, ফলের রস, খাওয়ার স্যালাইন, নরমাল পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ লিটার বেশি খেতে হবে।

মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ একজন ব্যক্তি রক্তদানের জন্য উপযুক্ত। রক্তদানের আগের রাতে ৬-৮ ঘণ্টার ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারপরও কোনো রকম অসুবিধা হলে রক্তদান কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অধ্যাপক ডা. সৈয়দা মাসুমা রহমান, কনসালট্যান্ট, নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

হাজীগঞ্জে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করলেন ইউএনও

জেনে নিন, রোজা রেখে কি রক্ত দিতে পারবেন ?

Update Time : ০৬:৫৮:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪

এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে দুই বা তারও বেশি মরণাপন্ন রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা যায়। রোজায়ও রোগীর জরুরি রক্ত দরকার হয়। কিন্তু অনেকেই এ সময়ে রক্ত দেওয়া নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। তবে রোজা থাকা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত দিলে রোজা ভাঙে না। কারণ, এখানে রক্ত বের করে নেওয়া হচ্ছে, দেওয়া নয়।

একজন সুস্থ–সবল ব্যক্তির শরীরে প্রায় ১ থেকে দেড় লিটার বাড়তি রক্ত থাকে, তাই যেকোনো জরুরি অবস্থায় রক্তদান করলেও শরীরে ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়ে না। অবশ্য এই পরিমাণের চেয়ে বেশি রক্তক্ষরণ হলে অন্য কথা। রক্তদান–পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় তিন-চার লিটার পানি বেশি খেলে, রক্তদানজনিত ভলিউম–স্বল্পতা কেটে যায়। তবে কেউ যদি শারীরিকভাবে দুর্বল থাকে, মনে করেন যে তিনি রক্ত দিলে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেলবেন, তাহলে তাঁর জন্য ইফতারের পর রক্ত দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

আমরা জানি, স্বাভাবিক প্রবেশপথ দিয়ে পেটে বা মস্তিষ্কে কোনো কিছু গেলে রোজা ভেঙে যায়। কিন্তু শরীর থেকে কোনো কিছু বের হলে রোজা ভাঙে না। তাই দুর্ঘটনায় পড়ে, হাত-পা ভেঙে বা কেটে রক্ত বের হলে রোজা ভাঙবে না। রক্ত গড়িয়ে পড়লে অজু ভঙ্গ হয়, রোজা নয়। রক্তদানের পর রক্তদান কেন্দ্রে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে রক্তের ভলিউম ঠিক হয়ে যায়। এই বিশ্রামে শরীর ঝিমঝিম করা, মাথা হালকা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

রোজার দিনগুলোয় রক্তদানের পর ২-৪ ঘণ্টা ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। যেমন শারীরিক পরিশ্রম, সাইকেল চালানো, অধিক উচ্চতায় কাজ করা ইত্যাদি। রক্তদান–পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তরলজাতীয় উপাদান যেমন ডাবের পানি, ফলের রস, খাওয়ার স্যালাইন, নরমাল পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ লিটার বেশি খেতে হবে।

মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ একজন ব্যক্তি রক্তদানের জন্য উপযুক্ত। রক্তদানের আগের রাতে ৬-৮ ঘণ্টার ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারপরও কোনো রকম অসুবিধা হলে রক্তদান কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অধ্যাপক ডা. সৈয়দা মাসুমা রহমান, কনসালট্যান্ট, নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কর্মসূচি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর