লেখক ও গবেষক নাদিম মাহমুদ বলেছেন, ‘জামায়াত মূলত শিং মাছ। ছাই দিয়ে ধরতে গেলেও আপনার আঙুল বিদ্ধ করবে আবার এমনিতে গেলেও করবে। তারা একাত্তরকে এখনো ভারতের যুদ্ধ মনে করেন, তারা পাকিস্তান বিভক্তকরণের জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর দোষ চাপান।’
বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।
নাদিম মাহমুদ বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর আমির সাতচল্লিশ থেকে দুই হাজার পঁচিশ পর্যন্ত তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের দ্বারা কেউ ‘কষ্ট’ পেয়ে থাকলে ক্ষমা চেয়েছেন। এর মধ্যে দিয়ে জামায়াত ইসলামী একাত্তরের অপরাধকে ‘হালকা’ করে ফেলল। তিনি হয়তো মনে করেছেন, তার দলীয় কোনো নেতাকর্মী কাউকে চিমটি কাটলে কেউ যদি ব্যথা পান আর কাউকে খুন করলে যে ব্যাথা পাবেন তা সমান এবং তাদেরকে ক্ষমা করা উচিত।”
তিনি বলেন, প্রশ্ন হলো, কেন তিনি সাতচল্লিশ ডেকে আনলেন? কেন তিনি দুই হাজার পঁচিশ টানলেন? দেশের মানুষ তো তাদের সাতচল্লিশের, বায়ান্নোর জন্য ক্ষমা চাইতে বলেননি।
তাদের বলা হয়েছে, তারা একাত্তরে যে অপরাধ করেছে, যে যুদ্ধাপরাধ করেছে, সেটা স্বীকার করে ‘ক্ষমা’ চান কি না? তাদেরকে প্রশ্ন করা হয়েছে, একাত্তরে জামায়াতের অবস্থান দেশের বিরুদ্ধে ছিল কি না? তাদের আলবদর, আলসামস, রাজাকারদের অত্যাচার তারা ওউন করেন কি না?
তিনি আরো বলেন, এসব প্রশ্ন করলে, তারা বলছেন তারা একাত্তরে ছোট ছিলেন, তারা ওই সময়ে নেতৃত্বের ওপর দায় দিয়ে পার পেতে চান, তারা বলে শেখ মুজিব তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন, গোলাম আযম ক্ষমা চেয়েছেন।
নাদিম মাহমুদ বলেন, এমন একটি দলকে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই। স্বাধীনতার চুয়ান্ন বছর পরও যারা নিজেদের অপরাধের গভীরতা বুঝতে পারে না। আর পারে না বলে কৌশলে সাতচল্লিশের আশ্রয় নিয়েছে, কৌশলে একাত্তরকে এড়িয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব না বুঝেও যারা জামায়াতের আমিরের ক্ষমা চাওয়ায় গদগদ, তারা মনে রাখেন, ৫ আগস্টের পর এই দেশে প্রেস ক্লাবে জিন্নাহর জন্মদিন পালিত হয়েছে, পাকিস্তানের স্বাধীনতা উদযাপন করেছে। এরা সুযোগ পেলেই পূর্ব-পশ্চিমকে এক কাতারে ফেলবে। একাত্তর নিয়ে যারা এখনো অন্ধকারে, তাদের কাছ থেকে দেশপ্রেম শেখার কিংবা দেখার প্রয়োজনীয়তা একবারে অপ্রসাঙ্গিক।