ঢাকা 11:32 am, Friday, 22 August 2025

বাকিলার ইমন কিলিংমিশনে জড়িত মাসুদকে রংপুর থেকে আটক করেছে পুলিশ

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:41:40 pm, Saturday, 2 March 2024
  • 9 Time View

হাজীগঞ্জে ইমন হোসেনকে (২৫) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সরসারি কিলিংমিশনে জড়িত মাসুদকে রংপুর থেকে আটক করেছে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মিন্টু ও সঙ্গীয় ফোর্স ঢাকা যাত্রাবাড়ী ও রংপুরে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে আসামী মাসুদকে রংপুর থেকে আটক করা হয়।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) সন্ধ্যায় উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ৩ সন্তানের জনক ইমনকে।

এ ঘনটায় রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে নিহতের বাবা মো. হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় মামলাটি (নং- ১৪) দায়ের করেন। এতে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৯ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এ দিকে হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড রাজারগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক কে. এম ফয়েজ বাবুকে মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আটক করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

পুলিশ এ মামলায় ২জনকে আটক করলেও এজাহারভূক্ত কোন আসামী এখনো আটক করতে পারেনি। তবে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন এজাহারভূক্ত আসামীদের গ্রেফতারে আমাদের চেস্টা অব্যাহত রয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার ইমন হোসেন পেশায় বার্নিশ (ফার্নিচারের রং) মিস্ত্রি। পাশাপাশি সে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। সে উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের লোধপাড়া গ্রামের কবিরাজ বাড়ির মো. হারুনুর রশিদের ছেলে।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো- জিলানী বেপারী (২০), তারেক আজিজ (৩০), রাসেল খাঁন (২৭), আব্দুল্লাহ (২৮), রমজান বেপারী (২২), ফরহাদ (২২), রাকিব (২৫), জাবেদ বেপারী (২৮), শাহাদাত বেপারী (২৬), পারভেজ মোশারফ কালু (২৫), জাহিদ (২২), পলাশ (২৬), শিপন চন্দ্র রায় (২৬), রাজু দাশ (২৫), সিয়াম (১৮), কবির (১৮), নাছির (১৮) ও রায়হান (১৯) সহ অজ্ঞানামা ৯/১০ জন আসামি রয়েছেন।

জানা গেছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) বিকালে রাজারগাঁও ইউনিয়নে একটি ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলে তবারক বিতরণ নিয়ে জিলানী ও সৈকত নামের দুই যুবকের তর্ক-বির্তকের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৩ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) বিকালে দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নে সাতবাড়ি ভাঙ্গা গ্রামে আবারও তাদের দুই জনের তর্ক-বিতর্ক ও মারামারির ঘটনা ঘটলে জিলানী স্থানীয় একটি দোকানে আশ্রয় নেয়।

ওই সময়ে জিলানী একটি দোকানে আশ্রয় নিলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ইমন হোসেন তাকে বাহির না করার জন্য দোকানীকে বলেন এবং বাহির হলে সৈকত তাকে (জিলানী) মারধর করবে বলে চলে যায়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় রাজারাগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তারেক আজিজ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মামলার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা বাকিলা ইউনিয়নের জনতা বাজারে এসে ইমনের উপর অতর্কিত হামলা করে।

হামলায় গুরুতর আহত ইমনের ডাক-চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা হত্যার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) পঞ্চজ কুমার দে ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

মামলা ও আসামির বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, কে.এম ফয়েজ বাবুকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত মমতাময়ী মায়ের পা ধুইয়ে দিল শিক্ষার্থীরা

বাকিলার ইমন কিলিংমিশনে জড়িত মাসুদকে রংপুর থেকে আটক করেছে পুলিশ

Update Time : 06:41:40 pm, Saturday, 2 March 2024

হাজীগঞ্জে ইমন হোসেনকে (২৫) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সরসারি কিলিংমিশনে জড়িত মাসুদকে রংপুর থেকে আটক করেছে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মিন্টু ও সঙ্গীয় ফোর্স ঢাকা যাত্রাবাড়ী ও রংপুরে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে আসামী মাসুদকে রংপুর থেকে আটক করা হয়।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) সন্ধ্যায় উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ৩ সন্তানের জনক ইমনকে।

এ ঘনটায় রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে নিহতের বাবা মো. হারুনুর রশিদ বাদী হয়ে হাজীগঞ্জ থানায় মামলাটি (নং- ১৪) দায়ের করেন। এতে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৯ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এ দিকে হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড রাজারগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক কে. এম ফয়েজ বাবুকে মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আটক করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাঁর জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

পুলিশ এ মামলায় ২জনকে আটক করলেও এজাহারভূক্ত কোন আসামী এখনো আটক করতে পারেনি। তবে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন এজাহারভূক্ত আসামীদের গ্রেফতারে আমাদের চেস্টা অব্যাহত রয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার ইমন হোসেন পেশায় বার্নিশ (ফার্নিচারের রং) মিস্ত্রি। পাশাপাশি সে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। সে উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের লোধপাড়া গ্রামের কবিরাজ বাড়ির মো. হারুনুর রশিদের ছেলে।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো- জিলানী বেপারী (২০), তারেক আজিজ (৩০), রাসেল খাঁন (২৭), আব্দুল্লাহ (২৮), রমজান বেপারী (২২), ফরহাদ (২২), রাকিব (২৫), জাবেদ বেপারী (২৮), শাহাদাত বেপারী (২৬), পারভেজ মোশারফ কালু (২৫), জাহিদ (২২), পলাশ (২৬), শিপন চন্দ্র রায় (২৬), রাজু দাশ (২৫), সিয়াম (১৮), কবির (১৮), নাছির (১৮) ও রায়হান (১৯) সহ অজ্ঞানামা ৯/১০ জন আসামি রয়েছেন।

জানা গেছে, গত ২১ ফেব্রুয়ারী (বুধবার) বিকালে রাজারগাঁও ইউনিয়নে একটি ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলে তবারক বিতরণ নিয়ে জিলানী ও সৈকত নামের দুই যুবকের তর্ক-বির্তকের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৩ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) বিকালে দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নে সাতবাড়ি ভাঙ্গা গ্রামে আবারও তাদের দুই জনের তর্ক-বিতর্ক ও মারামারির ঘটনা ঘটলে জিলানী স্থানীয় একটি দোকানে আশ্রয় নেয়।

ওই সময়ে জিলানী একটি দোকানে আশ্রয় নিলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ইমন হোসেন তাকে বাহির না করার জন্য দোকানীকে বলেন এবং বাহির হলে সৈকত তাকে (জিলানী) মারধর করবে বলে চলে যায়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় রাজারাগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তারেক আজিজ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মামলার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা বাকিলা ইউনিয়নের জনতা বাজারে এসে ইমনের উপর অতর্কিত হামলা করে।

হামলায় গুরুতর আহত ইমনের ডাক-চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা হত্যার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) পঞ্চজ কুমার দে ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

মামলা ও আসামির বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, কে.এম ফয়েজ বাবুকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।