• শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
চাঁদপুর সদর থানায় ঢুকে পুলিশ কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করলেন শিক্ষার্থীরা, ওসি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি চাঁদপুরে ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড, শহরে জলাবদ্ধতা পুলিশ সুপারেরর সাথে বৈশম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সাথে সদর উপজেলা ইউএনও’র মতবিনিময় সভা চাঁদপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা কচুয়ায় রাস্তার পাশ থেকে অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ উদ্ধার নোয়াখালীর সাবেক এমপি স্ত্রী ও সন্তানসহ আটক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চান কিনা রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে যা বললেন নাহিদ কচুয়ায় সড়কে যানজট নিরসনে স্কাউট সদস্য ও সাধারন শিক্ষার্থী বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্বরণে দশানী এলাকায় আলোচনা সভা ও দোয়া

কারেন্টজালের উৎপাদন স্থান চিহ্নিত করে নির্মূল করতে হবে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

ত্রিনদী অনলাইন
ত্রিনদী অনলাইন
আপডেটঃ : সোমবার, ১১ মার্চ, ২০২৪
মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে ১১ থেকে ১৭ মার্চ জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৪ উপলক্ষে নৌ র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান বলেছেন, জেলেদের কারেন্টজাল দিয়ে মাছ ধরার একটি বিষয় রয়েছে। এই বিষয়ে নিয়ে আমি ব্যাক্তিগতভাবেও খুবই ব্যাথিত। পাগলেওত নিজের বুঝ বুঝে। এই কারেন্টজাল দিয়ে সবেমাত্র ভূমিষ্ঠ হওয়া মাছের সন্তান তাকে যদি ধরেন, তাহলে এই মাছত বড় হতে পারবে না। বড় মাছ আমরা আর কোনদিন চোখে দেখবো না। তাই এই কারন্টেজাল সমূলে উৎপাটিত হওয়া দরকার। কারেন্টজালের যে উৎস মূূখ, যেখান থেকে এই জাল তৈরী হয়, ওই জায়গাটাকে চিহ্নিত করে নির্মূল করতে হবে। ওই কারেন্টের জাল যেখান থেকে তৈরী হয়, ওই খোয়াড়কে ভেঙে চুরে চুরমার করে দিতে হবে। আর এটি প্রশাসনকেই করতে হবে। এটি বন্ধ করতে পারলে কোন জেলে এই জাল দিয়ে নদীতে নামার সুযোগ থাকবে না। সুতরাং এই বিষয়টি আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকষর্ণ করছি।

সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মূলহেডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে ১১ থেকে ১৭ মার্চ জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৪ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আজকে আমরা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম, ইলিশকে নিরাপদ রাখবার জন্য, বিশেষ করে মা ইলিশকে বাঁচাবার জন্য এবং জাটকা নিধন বন্ধের জন্যই চাঁদপুরে আসা। অভিযানকালীন সময়ে আমরা যদি মা ইলিশ রক্ষা না করি, তাহলে আমরাই (জেলেরা) বিপদে পড়বো। মা ইলিশ রক্ষার জন্য বড় ভূমিকা জেলেদের। দেশের সর্বশেষ আপডেট হচ্ছে ৫ লাখ ৭১ হাজার মৎস্যজীবীদের তালিকা আছে। আমি এই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বলবো আপনারা এই তালিকাটি সঠিকভাবে প্রনয়ন করেন এবং এই মৎস্য জীবীকার সাথে যারা জড়িত তাদের একটি নামও যেন এই তালিকা থেকে বাদ না যায়, সেই ব্যবস্থা আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের ভরসাস্থল হচ্ছে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের মমতাময়ী মা।

মন্ত্রী বলেন, জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে বড় একটি চ্যালেঞ্জ এবং বড় একটি হুমকির মোকাবিলা করে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজকে তিনি এ দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার স্থিতিশীল পর্যায় নিয়ে এসছেন। আপনারা সবাই জানেন ৭ জানুয়ারি একটি জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। সেই নির্বাচনের আগে অনেক নিন্দুকেরা এবং তাদের বিদেশী প্রভূরা বলেছিল এ দেশে শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরক্ষে নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তাদের মুখে ছাই দিয়ে শেখ হাসিনাই প্রমাণ করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার অধীনে এবং কেবল মাত্র তার অধীনেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ নির্বাচন হয়। গত ৭ জানুয়ারির দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচনই তা প্রমাণ করে।

তিনি বলেন, এই দেশ বাঁচাতে হলে, শেখ হাসিনাকে বাঁচতে হবে। আর শেখ হাসিনাকে বাঁচতে হলে এই দলকে বাঁচতে হবে এবং সু-সংগঠিতভাবে বাঁচতে হবে। শেখ হাসিনার দূরদির্শতার কারণে আমরা সব ধরণের সংকট ও দুর্যোগ থেকে মুক্তি পেয়েছি।

মন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা যে জাটকা রক্ষা সপ্তাহ পালন করছি। আমাদের ইলিশের উৎপাদন ক্ষমতা যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, এর থেকে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তুলনা করি, তাহলে আজকে নিঃসন্দেহে বলতে পারি প্রায় ৬ লাখ মেট্টিক টন ইলিশের উৎপাদন বাংলাদেশের অর্জিত হয়েছে, তা কেবল মাত্রই সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে।

আব্দুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমার মাটি আমার মানুষ, আমার পাট আছে, আমার সম্পদ আছে এবং আমার ইলিশ আছে। আর এই ইলিশেই হতে পারে দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় উপাদান। যথার্থভাবে আজ থেকে বহুদিন আগে ১৯৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু দাঁড়িয়ে এ কথা বলেছিলেন। যার বাস্তব ও প্রয়োগিক ফলাফল ধীরে ধীরে এই জাতি আজকে উপভোগ করছে।

মন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদেরকে বলতে চাই-বঙ্গবন্ধু এই দেশের মানুষের মুখে হাঁসি ফুটাবার জন্য নিরন্তন কাজ করেছেন। ১৯৮১ সালে তার কন্যা শেখ হাসিনা বাবা-মা হারানোর ব্যাথা ও অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে এই বাংলার মাটিতে এসেছেন। সেদিন লক্ষ লক্ষ মানুষের উদ্দেশ্যে বলেছেন আমার পিতা ঘাতকের বুলেটে জীবন দিয়েগেছেন। তার বুকের তাজা খুন এই পদ্মা-মেঘনা ও যমুনার কালো পানি লালে লাল হয়েছে। আজ আমি এসেছে একটি মাত্র স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। যে স্বপ্ন আমার বাবা বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন। যে দেশের মানুষের মুখে তিনি হাসি দেখবেন। আর এই বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফুটাবার জন্যই আমার বাবার সেই অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করবার জন্যই আজকে এই দেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেছি এবং আপনাদর মাঝে ফিরে এসেছি। সেই থেকে তার নিরন্তন যাত্রা।

আব্দুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে তলাবিহীন ঝুড়ি সরকার, সেই বাংলাদেশ কেন আজ মেট্টো রেলের মালিক হবে। সেই বাংলাদেশ কেন আজকে আমাদের সাথে চ্যালেঞ্জ করে নিজের অর্থে পদ্মা-সেতু নির্মাণ করবে। এই বাংলাদেশ কেন আজ এলিবেটেট এক্সপ্রেস নির্মাণ করবে, কেন আজ বঙ্গবন্ধু ট্যানেল দিয়ে সেখানে গাড়ী চলবে। শেখ হাসিনার দুরদর্শি নেতৃত্বে কেবল মাত্র হিংসা থেকে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু এই বাংলার লক্ষ কোটি মানুষের সমর্থন আজ শেখ হাসিনাকে সাহস যুগিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, আজকের এই মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় নাই। আজকে বাঙালি দুই বেলা মাছে ভাতে থাকে না। এই বাংলাদেশের মানুষ আজ তারা একটি গর্বিত জাতি হিসেবে মাথা উচুঁ করে দাড়াবার জন্য নতুন প্রস্তুতি নিচ্ছে শেখ হাাসিনার নেতৃত্বে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ইলিশ এমন সম্পদ, যে সম্পদ দিয়ে আমি বিদেশি মুদ্রা অর্জন করবো এবং তৃতীয় রপ্তানিমূখী পন্য হিসে পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে দিব।

তিনি বলেন, আমরা বছরে দুই থেকে তিনবার টিআর কাবিখা দিয়ে থাকি। সেখানে একটিবার যদি জেলেদের জন্য কিছু অংশ দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারি অর্থাৎ জেলেদের উপকরণ দিতে পারি, সেটি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আমরা আনব। আর যেসব জেলেদের বাড়ী নেই, ভূমি নেই তাদের তালিকা তৈরী করেন। সেই ব্যবস্থা হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী এই কার্যক্রম চালু রেখেছেন।

মন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র নৌপুলিশ, ডিসি এবং এসপিকে দিয়ে জাটকা রক্ষা হবে না। আমাদের নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে এগিয়ে আসতে হবে। এই জাটকা রক্ষা সপ্তাহ গুরুত্বের সাথে পালন করতে হবে। আমাদের এই জাটকা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে ভরা যৌবনের চাঁদপুর আবার ইলিশের যৌবনে ভরে যাবে এই কথা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন, সেখানে এই ইলিশের উৎপাদন সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এটি আমি আশা এবং বিশ^াস করি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি।

সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন-মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর।

সম্মানিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন শান্ত ও জেলা মৎস্যজীবী লীগ নেতা শাহ আলম মল্লিক।

অনুষ্ঠানে কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ, মৎস্য দপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, মৎস্যজীবী নেতাসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে শহরের মোলহেড থেকে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিসহ সংশ্লিষ্টদের অশংগ্রহনে মেঘনা নদীতে নৌ র‌্যালী বের হয়। র‌্যালীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ শত শত মৎস্যজীবী অংশগ্রহন করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুক

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০