মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :
আসন্ন হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবু সুফিয়ান মজুমদার রানা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোসা. রাবেয়া আক্তার রুবিকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। শনিবার (৪ মে) বিএনপির সিনিয়র মহাসচিব এ্যাড. রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এবং প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বহিস্কৃত নেতা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সুফিয়ান মজুমদার রানা হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে তিনি বর্তমানে কোন পদে নেই এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোসা. রাবেয়া আক্তার রুবি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
শনিবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামি ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য ২য় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গঠণতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। বাকি ৩৫ জনের মধ্যে ১৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৬ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, বিএনপির সাংগঠনিক বিভাগ ‘কুমিল্লা বিভাগ’ থেকে দুইজন প্রার্থীকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই প্রার্থীই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার। চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সুফিয়ান রানা ‘ঘোড়া’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তিনি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অপর দিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রাবেয়া আক্তার রুবি ‘প্রজাপতি’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তিনি চাঁদপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ বিষয়ে আবু সুফিয়ান রানার সাথে সংবাদকর্মীদের কথা হলে তিনি জানান, গত ৫ বছর ধরে আমাকে দলের কোন পদেই তো রাখা হয়নি। তাহলে কোন গঠণতন্ত্র মোতাবেক আমাকে বহিস্কার করা হয়েছে?
একই বিষয়ে রাবেয়া আক্তার রুবি সংবাদকর্মীদের জানান, দল যেটা ভালো করেছে সেটাই করেছে। এখানে আমার কোন মন্তব্য নাই।
উল্লেখ্য, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় ১৫৯টি উপজেলায় বিএনপির ২৬ জন চেয়ারম্যান, ১৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১৬ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের পর তাঁদের নির্বাচন থেকে ফেরানোর নানা চেষ্টা করা হয়।
এ লক্ষ্যে প্রার্থীদের কাছে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের একটি চিঠি পাঠানো হয়। পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের বোঝানোর জন্য। সব উপেক্ষা করেই তাঁরা নির্বাচনে নেমেছেন।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী সংবাদমাধ্যমেকে বলেন, ‘দল করতে হলে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন করবে না। সেখানে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া মানে এই অবৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া। দলের চেয়ে নির্বাচনই যদি বড় হয়, তাহলে তো তাঁদের আগে পদত্যাগ করা উচিত। আপনি দল করবেন, আবার দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না, এটা হতে পারে না।’