• শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ পোস্ট মাস্টার হলেন হাজীগঞ্জের খোরশেদ আলম ধার্মিক ছেলে পেলে অভিনয় ছেড়ে বিয়ে করবেন মডেল প্রিয়াঙ্কা হাজীগঞ্জে নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব হাজীগঞ্জের মনিনাগে সম্পতিগত বিরোধের জেরধরে হামলা, ৮জন আহত ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে’ মতলব উত্তরে ১০ম গ্রেডের দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর স্মরণে দোয়া ও মিলাদ শাহরাস্তিতে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে রবি শস্য বীজ ও নগদ অর্থ প্রদান শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ফরিদগঞ্জ ॥ বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তরা ফরিদগঞ্জে শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ৪

ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষকের প্রতারণার শিকার ২৪ শিক্ষার্থী!

ত্রিনদী অনলাইন
ত্রিনদী অনলাইন
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪

নুরুল ইসলাম ফরহাদ :

এস.এস.সি পাশ করার পর শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অজান্তে তাদের ভর্তির জন্য অনলাইন আবেদন করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান। ১-২জন নয় ২৪ জন শিক্ষার্থীর অনলাইন আবেদন করেছেন সুফার মোশারফ হোসেন। এতে বিপাকে পড়েছে ঐসকল শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক। এই জঘন্য কাজ করেও অবলিলায় মিথ্যা বলে যাচ্ছেন মাদ্রাসার সুফার! প্রতিষ্ঠান প্রধান তার উপর হুজুরের যদি হয় এই অবস্থা সেখানে কেমন শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে তা সহজেই অনুমেও ! সুফারের এমন কর্মকান্ডে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরপাড়া মোহাম্মদিয়া তৈয়্যেবিয়া সুন্নিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে এবার ৩৩ জন দাখিল পরিক্ষার্থী পাশ করে। এদের মধ্য থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবককে না জানিয়ে গোপনে কাওনিয়া হানাফিয়া ফাজিল মাদ্রায় ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করান উক্ত মাদ্রাসার সুফার মাওলানা মোশারফ হোসেন পাটোয়ারী। পরবর্তীতে ঐ সকল ছাত্র এবং তাদের অভিভাবকরা অনলাইনে আবেদন করতে গেলে তাদের আবেদন পূর্বে হয়ে গেছে বলে জানানো হয়। পরে তারা জানতে পারে এই কাজটি তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে করা হয়েছে।

বিষয়টি জানতে অভিভাবকরা মাদ্রাসায় গেলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন অভিভাবক। সাথে সাথে বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকারও করেন মাদ্রাসার সুফার। উপায় না পেয়ে তারা বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। সাংবাদিকদের কাছেও সুফার মোশারফ অনলাইনে আবেদন করেননি বলে অবলীলায় মিথ্যাচার করেন। বরং তিনি দোষটি চাপিয়ে দেন কাওনিয়া হানাফিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের উপর। কাওনিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের রোল ও রেজিস্ট্রেশ্ন নাম্বার গেল কিভাবে? জানতে চাইলে তিনি কোনো সদউত্তোর দিতে পারেননি।

প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সাংবাদিককে বলেন- আমাদের অনেককে কাউনিয়া হানাফিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। অথচ এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানিনা। আমরা আবেদন করতে গিয়ে দেখি আবেদন হয়ে গেছে। টানা ১০ বছর এই প্রতিষ্ঠানে পড়েছি। ইচ্ছে ছিলো এবার এর চেয়ে ভালো একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবো।

অভিভাবক আলমগীর এ প্রতিনিধিকে বলেন- আমার ছেলে এই প্রতিষ্ঠান থেকে দাখিল পাশ করেছে। তার ভর্তির জন্য আমি অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে জানতে পারি অলরেডি আবেদন হয়ে গেছে। পরে জানতে পারলাম এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাই এই কাজটি করেছে। আমার সন্তানকে আরো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর স্বপ্ন ছিলো কিন্তু শিক্ষকরা আমাদেরকে না জানিয়ে তাদের সুবিধামত এবং পছন্দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ব্যবস্থা করে বসে আছেন। শিক্ষকদের বিষয়টি জানালে তারা বলেন এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। আমার যা করার করতাম।

চরপাড়া মোহাম্মদিয়া তৈয়্যেবিয়া সুন্নিয়া আলিম মাদ্রাসার সুফার মাওলানা মোশারফ হোসেন পাটোয়ারী বলেন- শিক্ষার্থীদের অনলাইনের আবেদন কীভাবে হয়েছে আমি জানি না। তবে ফরিদগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা, কাছিয়াড়া মহিলা মাদ্রাসা, কাওনিয়া মাদ্রাসা এবং হর্ণি মাদ্রাসার লোকজন আমাদের মাদ্রাসায় এসে তালিকা নিয়েছে কিন্তু কে অনলাইনে আবেদন করেছে আমরা জানিনা। আমরা কোনো শিক্ষার্থীর অনলাইনে আবেদন করিনি। অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা আমাদের উপর যে দোষারপ করছে, তাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

কাওনিয়া হানাফিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মহিউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন- আমাদেরকে ঐ মাদ্রাসার সভাপতি আবদুল মালেক বুলবুল এবং সুফার মাওলানা মোশারফ হোসেন তাদের মাদ্রসায় ডেকে নিয়ে ২৪ জন শিক্ষার্থীর তালিকা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে অনলাইন আবেদন করতে বলেন। আমি সেই মোতাবেক কাজ করেছি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন- শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অথবা তাদের না জানিয়ে ভর্তি করা বা ভর্তির আবেদন করা বিধি সম্মত নয়। এটা দুই প্রতিষ্ঠান প্রধান একজনও ঠিক কাজ করেননি। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
চরপাড়া মোহাম্মদিয়া তৈয়্যেবিয়া সুন্নিয়া আলিম মাদ্রাসা মূলত দাখিল পর্যন্ত অনুমোদন এবং আলিমে পাঠ দানের অনুমতি রয়েছে কিন্তু পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি এখনো পায়নি। তাই তারা তাদের ক্লাসে শিক্ষার্থী রাখার জন্য এই অপকৌশলের পথ বেছে নিয়েছে। এই কাজটি করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে বেঈমানি করেছেন। সুন্নিয়া প্রতিষ্ঠান হলেও সুন্নাহীন কাজ করে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ধুলার সাথে মিশিয়ে দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

ফেসবুক

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১