বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে আজাদ সরকার (৫২) নামে ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরেক আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী মোবারক কাজী (৬৩) হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন টোরাগড় এলাকার কাজী বাড়ীর মৃত লাল মিয়া কাজীর ছেলে। সে মামলার ৬ নম্বর নামীয় আসামী।
শনিবার সকালে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে চাঁদপুর বাবুরহাট এলাকা থেকে আটক করেছে।
এ মামলায় হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব হেলালউদ্দিন মিয়াজী, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শুকুর আলম শুভ, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাব্বিসহ কয়েকজন কারাগারে রয়েছে। এছাড়াও আরো কয়েকজন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছে।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন টোরাগড় এলাকায় পৌরসভার সামনে নির্মমভাবে কোপানো হয় বিএনপি নেতা ও হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতি আহম্মেদ কবির হিমেলের বাবা আজাদ সরকারকে। পরে স্থানীয় তারা চিকিৎসার জন্য হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখান থেকে কুমিল্লা রেফার করা হয়। সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন আট নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতি আহম্মেদ কবির হিমেল বাদী হয়ে ১৪ আগস্ট হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১৫ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫ জনকে আসামি করা হয়।
মামলা বিবরণ থেকে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন গত ৪ আগস্ট বিকেলে নিজ বসতবাড়ির সামনে ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি হিমেলের বাবা আজাদ সরকারকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাতেই কুমিল্লার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে মামলা দায়ের করা যায়নি। এরপর বুধবার (১৪ আগস্ট) ১৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২৫ জনকে আসামি করে হাজীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় একই গ্রামের কাজী বাড়ির ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মিঠু কাজী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোবারক কাজী, আওয়ামী লীগ নেতা বশির কাজী, বাদল কাজী ও নুরু কাজী, ছাত্রলীগ নেতা তুষার কাজী, রাকিব কাজী, সিয়াম কাজী ও রুবেল কাজী আসামি করা হয়।
এছাড়াও পৌরসভার মকিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল আলম বেপারী, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকুর আলম শুভ ও তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন আজাদ, আওয়ামী লীগ নেতা ও গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পাঁচৈ গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে জসিম উদ্দিন, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের মৈশামূড়া গ্রামের আবুল বাসারের ছেলে সুমনকে আসামি করা হয়।