অনলাইনে ইলিশ বিক্রিতে প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন অনেক ক্রেতা। যারা এর সাথে জড়িত তারা চাঁদপুরের ইলিশ বলে এবং ঠিকানা ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছেন। এসব প্রতারণা ঠেকাতে কঠোর প্রদক্ষেপ নিয়েছে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন। জেলার স্থায়ী বাসিন্দা অনলাইনে যারা ইলিশ বিক্রি করেন তাদের কাছ থেকে নিবন্ধনের জন্য আবেদন গ্রহণ করেন। ৪৪ জনের আবেদন জমা হলে যাচাই-বাছাই করে ৭ জন ব্যবসায়ীকে নিবন্ধন দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ৭ ব্যবসায়ীর হাতে অনলাইনে ইলিশ বিক্রির জন্য নিবন্ধন সনদ তুলেদেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
তিনি বক্তব্যে বলেন, কাগজপত্র সঠিক পাওয়ার কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে ৭জনকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ ধরণের নিবন্ধন আমরা প্রতিবছর দিব। নিবন্ধনের জন্য কোন টাকা নেয়া হয়নি। পরবর্তীতে ১ থেকে ২ বছরের জন্য নবায়নের জন্য পদ্ধতি চালু করা হতে পারে। আবার নতুন করে নিবন্ধন দিলে তখনও টাকা নেয়া হবে না। আবার এর মধ্যে কেউ যদি তার ব্যবসা বন্ধ রাখেন, তার নিবন্ধন বাদ করে দেয়া হবে। মূলত হচ্ছে ইলিশ নিয়ে চাঁদপুরের যে ঐতিহ্য সেটি সমুন্নত রাখতে চাই। যেন কেউ চাঁদপুরের ইলিশ বলে প্রতারণা করতে না পারে। এই বিষয়টি প্রতিহত করতে চাই।
ডিসি আরো বলেন, নিবন্ধন হওয়া ব্যবসায়ীদের তালিকা জেলা প্রশাসকের ওয়েব সাইটে দেয়া হবে। এতে করে বাকি যারা আছে তারাও নিবন্ধিত হওয়ার জন্য আগ্রহী হবেন। আর যারা বাহিরে থেকে প্রতারণা করছেন তারা এই ধরণের কাজ থেকে বিরত থাকবেন। আমরা এই বিষয়টি প্রচারণা করবো।
তিনি নিবন্ধন পাওয়া ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা হাতিয়ার ইলিশ চাঁদপুরের বলে বিক্রি করবেন না। কারণ হাতিয়ার ইলিশ দাম কিছুটা কম। কোন ক্রেতা যেন প্রতারিত না হয়। একই সাথে চাঁদপুরের ইলিশের ঐতিহ্য ও সুনাম যেন অক্ষুন্ন থাকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. এরশাদ উদ্দিন। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস. এম. এন জামিউল হিকমা, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি রহিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ সহ সরকারি অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তারা।
সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. এরশাদ উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা ৪৪টি আবেদন পেয়েছি। এর মধ্যে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ৭ জনকে নিবন্ধন দিতে সক্ষম হয়েছি। এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে না। চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা যে কেউ আবেদন করতে পারবেন। তাদের আবেদন পত্র যাচাই-বাছাই করে সঠিক মনে হবে, তাদেরকে নিবন্ধনের আওতায় আনবো।
অনলাইনে ইলিশ বিক্রির জন্য নিবন্ধন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে: (ফেসবুক পেজের নাম) ইলিশ ভাইয়া চাঁদপুর, মাছ পল্লী, একিন সপ, তাজা ইলিশ.কম, ইলিশ রানী, রুপালী বাজার, সজিব ইলিশের বাজার চাঁদপুর।