মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ্ :
ব্রিটিশ শাসনামল থেকে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন টোরাগড় আদর্শ সমাজ (পঞ্চায়েত) ব্যবস্থা অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৭ জুন) পবিত্র ঈদ-উল আযহার দিনে সহস্রাধিক পরিবারের মাঝে জনপ্রতি প্রায় ৩ কেজি করে মাংস প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, শত বছর পূর্বে টোরাগড় গ্রামে দুটি সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কালের বিবর্তনে গ্রামের লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে চারটি সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়ে থাকে।
এর মধ্যে অন্যতম টোরাগড় আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা। ১৯৪১ সাল থেকে এই সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে কোরবানির মাংস প্রদান করা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও সমাজ ব্যবস্থার বাহিরে এবং যারা সমাজ ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত নয়, তারা ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে নিজ নিজ উদ্যোগে কোরবানির মাংস মানুষের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে লোপ্তে আলী মিজির নেতৃত্ব আব্দুল হক মৃধা, আলী উল্যাহ মৃধা, সুলতান সর্দার, নূর খাঁ ও ইদ্রিস মজুমদারসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই সমাজ ব্যবস্থা চালু করেন। যা কোনো ধরনের সমালোচনা ছাড়াই শতবর্ষ পর্যন্ত চলমান রয়েছে। যারা এই সমাজ ব্যবস্থার নেতৃত্ব দেন তারা বিনা পারিশ্রমিকে কাজটি করে থাকেন।
সমাজ ব্যবস্থার অন্যতম সদস্য ও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম খাঁন জানান, তিনি আশির দশক থেকে এ সমাজ ব্যবস্থার সাথে জড়িত। তখনকার সময় ১২টি গরু দিয়ে শুরু। লোক সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এখন এই সমাজ ব্যবস্থা তিন/চার ভাগ হয়েছে এবং প্রতিটি সমাজেই সমবণ্টনের মাধ্যামে মাংস বিতরণ করা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে টোরাগড় আদর্শ সমাজ ব্যবস্থায় ৬০ থেকে ৭০টি গরুর তিন ভাগের এক ভাগ সমাজে আসে। যারা কোরবানি দিতে না পারে, সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমবণ্টন করে তাদের মাঝে কোরবানির মাংস দেয়া হয়ে থাকে।
বর্তমানে সমাজ ব্যবস্থার সাথে যারা জড়িত তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, আনোয়ার হোসেন বতু, দুলাল মিজি, শাহজাহান তালুকদার, আবুল হাসেম ভুইয়া, জামাল মিজি, দেলোয়ার মিজি, মান্নান মৃধা, দেলোয়ার হোসেন (মোমবাতি), এনায়েত উল্যাহ, শহিদ মৃধা, শহীদুল ইসলাম, হাবীব উল্যাহ্, মনির খন্দকারসহ আরো অনেকে।