ঢাকা 5:35 pm, Monday, 21 July 2025

ইসরায়েলে হামলার বন্ধের যে শর্ত দিয়েছে হিজবুল্লাহ

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:24:39 pm, Wednesday, 3 July 2024
  • 12 Time View

ইসরায়েলে হামলা থামানোর জন্য মাত্র একটি শর্ত দিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সেই শর্তটি হলো— ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে অবশ্যই গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে।

হিজবুল্লাহর অন্যতম শীর্ষ নেতা ও সাংগঠনিক উপপ্রধান শেখ নাঈম কাসেম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিটেটেড প্রেসকে (এপি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ নাইম কাশেম বলেন, হামাসের মিত্র হিসেবে আমরা এখন থেকে (ইসরায়েলে) হামলা চালাচ্ছি। গাজায় যদি যুদ্ধবিরতি হয়, অর্থাৎ ইসরায়েলি বাহিনী যদি সেখানে অভিযান বন্ধ করে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে হামলা বন্ধ করে দেবো। আমাদের আর কোনো শর্ত নেই।

গত ৭ আগস্ট সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। পাশাপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।

অতর্কিত সেই হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৩৭ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান শুরুর ১ মাস পর থেকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। সেই হামলার জবাব দেওয়া শুরু করে আইডিএফও।

এএফপির টালি বলছে, হিজবুল্লাহ ও আইডিএফের পাল্টাপাল্টি এই হামলায় গত ৭ মাসে লেবাননে নিহত হয়েছেন ৪৮১ জন। তাদের মধ্যে বেসামরিকদের সংখ্যা ৯৪ জন। অন্যদিকে লেবাননের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন সেনা এবং ১১ জন বেসামরিক।

তবে সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের তেজ খানিকটা কমে আসছে। পাশাপাশি পুরোপুরি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা না দিলেও গাজায় খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রীর সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রতিদিন ১১ ঘণ্টা অভিযান বন্ধ রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে আইডিএফ। সম্প্রতি ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে মুক্তিও দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল এখন বেশি মনোযোগ দিচ্ছে ইরানের মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর দিকে। সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ত লেবাননকে প্রস্তর যুগে পাঠানোর হুমকিও দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে এপির এক প্রশ্নের জবাবে শেখ নাঈম কাসেম বলেন, আমরা নিজেরাও খানিকটা বিভ্রান্তির মধ্যে আছি। কারণ গাজায় এখন যুদ্ধ ও যুদ্ধবিরতির মাঝামাঝি একটি অবস্থা চলছে। তবে ইসরায়েল যদি হিজবুল্লাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তাহলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

‘ইরান-সমর্থিত হুথি’ বলা হয়, কিন্তু ‘যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত আইডিএফ’ বলা হয় না কেন

ইসরায়েলে হামলার বন্ধের যে শর্ত দিয়েছে হিজবুল্লাহ

Update Time : 01:24:39 pm, Wednesday, 3 July 2024

ইসরায়েলে হামলা থামানোর জন্য মাত্র একটি শর্ত দিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সেই শর্তটি হলো— ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে অবশ্যই গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে।

হিজবুল্লাহর অন্যতম শীর্ষ নেতা ও সাংগঠনিক উপপ্রধান শেখ নাঈম কাসেম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিটেটেড প্রেসকে (এপি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ নাইম কাশেম বলেন, হামাসের মিত্র হিসেবে আমরা এখন থেকে (ইসরায়েলে) হামলা চালাচ্ছি। গাজায় যদি যুদ্ধবিরতি হয়, অর্থাৎ ইসরায়েলি বাহিনী যদি সেখানে অভিযান বন্ধ করে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে হামলা বন্ধ করে দেবো। আমাদের আর কোনো শর্ত নেই।

গত ৭ আগস্ট সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। পাশাপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে।

অতর্কিত সেই হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৩৭ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি।

এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান শুরুর ১ মাস পর থেকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। সেই হামলার জবাব দেওয়া শুরু করে আইডিএফও।

এএফপির টালি বলছে, হিজবুল্লাহ ও আইডিএফের পাল্টাপাল্টি এই হামলায় গত ৭ মাসে লেবাননে নিহত হয়েছেন ৪৮১ জন। তাদের মধ্যে বেসামরিকদের সংখ্যা ৯৪ জন। অন্যদিকে লেবাননের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন সেনা এবং ১১ জন বেসামরিক।

তবে সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের তেজ খানিকটা কমে আসছে। পাশাপাশি পুরোপুরি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা না দিলেও গাজায় খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রীর সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রতিদিন ১১ ঘণ্টা অভিযান বন্ধ রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে আইডিএফ। সম্প্রতি ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে মুক্তিও দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল এখন বেশি মনোযোগ দিচ্ছে ইরানের মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর দিকে। সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ত লেবাননকে প্রস্তর যুগে পাঠানোর হুমকিও দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে এপির এক প্রশ্নের জবাবে শেখ নাঈম কাসেম বলেন, আমরা নিজেরাও খানিকটা বিভ্রান্তির মধ্যে আছি। কারণ গাজায় এখন যুদ্ধ ও যুদ্ধবিরতির মাঝামাঝি একটি অবস্থা চলছে। তবে ইসরায়েল যদি হিজবুল্লাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তাহলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।