হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর (সংরক্ষিত-৩) মিনু আক্তারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, তাঁর আপন ছোট ভাই মো. মাসুদ। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে তিনি গত ২২ নভেম্বর (মঙ্গলবার) এ অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি মিনু আক্তারকে ১নং বিবাদী, বড় ভাই সাইফুল ইসলামকে ২নং ও বোন রিমা আক্তারকে ৩নং বিবাদী করেন।
অভিযোগে মাসুদ উল্লেখ করেন, ১নং বিবাদী (সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তার) চরিত্রহীনা, বদমেজাজী ও সবসময় পরপুরুষ নিয়ে চলাফেরা করে। তিনি নিজ খরচে পৈত্রিক সম্পত্তির উপর একটি বসতঘর নির্মাণ করেন। অভিযোগের কিছুদিন পূর্বে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকেসহ তার স্ত্রী-সন্তানদের মারধর করা হয়।
এরপর বড় বোন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তার তাকে ও তার স্ত্রী বাচ্ছাদের জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারধর ও স্ত্রীকে দা দিয়ে জখমসহ বাড়ির মুরুব্বীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন।
এ ছাড়াও গত বছরের ৬ এপ্রিল মো. মাসুদ তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শালিকার (স্ত্রীর ছোট বোন) বাড়ি নোয়াদ্দা গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে থেকে ফিরে এসে দেখেন, বিবাদীরা তার বসতঘরে ঢুকে (প্রবেশ) সেলাই মেশিন ভেঙ্গে কাপড়-চোপড় ও ব্যবহার সামগ্রী পুুড়িয়ে দেয়। এতে তার ৫০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।
এই ঘটনায় এলাকায় শালিসি বৈঠকে বিষয়টির মিমাংসা করার চেষ্টা করা হলে বিবাদী পক্ষ উশৃঙ্খল আচরন করে শালিসদারদের গালমন্দ করে স্থান ত্যাগ করেন। তিনি বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিবাদীগণ তাকে মেরে গুম করার হুমকি প্রদান করেন। বর্তমানে তিনি ২টি শিশু বাচ্চাকে নিয়ে ভয়ভীতির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। তাই পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন মো. মাসুদ।
নিরুপায় হয়ে বিবাদী সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তার, সাইফুল ইসলাম ও রীমা আক্তারের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন মো. মাসুদ।
অভিযোগ অস্বীকার করে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তার বলেন, মাসুদ মায়ের নামে সে ৭০ হাজার টাকা কিস্তি (ঋণ) উঠায় এবং দুই কিস্তি দেওয়ার পরে সে আর কিস্তি দেয় না। এ নিয়ে কথা হলে তার স্ত্রী আমার মায়ের গায়ে হাত তুলে এবং সে গালি-গালাজ করে। পরে মা-বাবা তাকে (ছোট ভাই) বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে পৌরসভায় অভিযোগ দিলে বৈঠকে কাউন্সিলরদের সাথে আমিও ছিলাম। সে বাবা-মায়ের উপর আক্রমন চালায়, গালি-গালাজ করে, কিস্তিু (ঋণ) উঠিয়ে কিস্তিু দেয়না। তখন আমি বড় বোন হিসাবে তাকে একটা কিছু বলেছি। ওই সময়ে বাবা-মা বলছে, এই ছেলেকে (মো. মাসুদ) আর বাড়িতে উঠাবো না।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখন আপনারাই (সংবাদকর্মী) বলেন, যেখানে আমার বাবা, মা, বড় ভাই আছে, সেখানে আমার কি করার আছে? আমি ওই বাড়িতে থাকিনা। মাঝে মাঝে গিয়ে আবার চলে আসি।
এদিকে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগে ফৌজদারী অপরাধের কথা উল্লেখ রয়েছে। তাই বিষয়টি দেখার জন্য অভিযোগটি থানায় পাঠানো হবে।