হাজীগঞ্জে বড়কুলে জোড়া খুনের ঘটনায় ইউনিয়ন তরুণ লীগের সভাপতি মো. কাউছার হামিদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাতে রাজধানী ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের এন্নাতলী গ্রামের মিয়াজী বাড়ির মৃত আতিকুর রহমানের ছেলে।
কাউসার হামিদ এর পূর্বে একই ইউনিয়নে এন্নাতলী গ্রামে প্রতিবন্ধী এক ভিক্ষুক হত্যা মামলার আসামী ছিলেন। সেই মামলায় কাউসার জামিনে রয়েছে।
মো. কাউছার হামিদকে (৩০) গ্রেফতারের বিষয়টি হাজীগঞ্জ থানা সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় কয়েকদিন পূর্বে স্থানীয় ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আতিক পাটওয়ারী ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হাছান মিয়াজীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে হাছান মিয়াজী বর্তমানে জামিনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বড়কুল গ্রামের পান্নার বাড়ি পাশে (কালা সিতার বাড়ি) দুলাল সাহার বসতঘরের জানালার গ্রীল কেটে দালানঘরে প্রবেশ করে উত্তম চন্দ্র বর্মন তুফান (৭০) ও তার স্ত্রী কাজলী রানি বর্মনকে (৫৫) শ^াসরোধ করে হত্যা করে।
ঘটনার পরের দিন শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের শিকার তুফান স্থানীয় রায়চোঁ (নোয়াহাট) বাজারের মাছ বিক্রেতা ছিলেন। তিনি উত্তর বড়কুল গ্রামের দাস বাড়ির মৃত হর্মণ চন্দ্র বর্ধনের ছেলে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র্যাবের হাতে আটক মো. সোহাগ ও সন্দেহভাজন হিসাবে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে ১২ জনসহ মোট ১৩ জনকে আটক করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে মো. সোহাগ ও মিজানুর রহমান হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
তারা জানায়, ওই দিন রাতে মো. সোহাগ ও মিজানুর রহমানসহ চোর চক্র মদ পান করে চুরির উদ্দেশ্যে দুলাল সাহার বসতঘরে প্রবেশ করলে ঘরে থাকা উত্তম চন্দ্র বর্মন তুফান ও তার স্ত্রী কাজলী রানি বর্মণ ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং তাদেরকে চিনে ফেলে। এ সময় তারা ডাক-চিৎকারের চেষ্টা করলে হাত-পা, চোখ বেঁধে বিছানার উপর বালিশ চাঁপা দিয়ে তাদেরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায় চোরচক্র।
এরপর চুরিকৃত মালামাল ওই দিন রাতেই মিজানের ঘরে রাখা হয় এবং পরে মিজান একটি কাসা/পিতলের মগ রেখে অন্য মালামাল একজন ভ্রাম্যমান হকারের কাছে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করে দেন।
পরবর্তীতে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে গত ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকালে মো. সোহাগ ও মিজানুর রহমানকে নিয়ে পুলিশ চুরিকৃত মালামালের উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে একটি কাসা/পিতলের মগ আসামি মিজানুর রহমানের ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।