ঢাকা 9:03 am, Friday, 27 June 2025

হাজীগঞ্জে সন্তানসহ আত্মহননকারী সেই রিমার স্বামী আর বাবার পরিবারের পরস্পর বিরোধী অভিযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:02:49 pm, Sunday, 28 April 2024
  • 4 Time View

হাজীগঞ্জে কোলের শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় তাহমিনা আক্তার রিমার বাবার পরিবার ও তার তালাক দেওয়া স্বামী মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের মাঝে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রিমার বাবার পরিবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করলে ও এখনো কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অপর দিকে মাসুদুজ্জামান তার সাবেক স্ত্রী রিমাকে দোষারোপ করে বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছেন গনমাধ্যমের কাছে।

এর মধ্যে আমার বিরুদ্ধে থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আমাকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে কুয়েতে পাঠানো হয়েছে। তাদের অভিযোগ মিথ্যা। বরং আমি যখন বিয়ে করি, তখন তাদের (শশুর) টিনের দোচালা ঘর ছিল, আমি টাকা দিয়ে তাদেরকে টিনশেড বিল্ডিং করে দেই। এরপর অভিযোগে আমার দুই ভাইকে আসামি করা হয়েছে। অথচ শশুর বাড়ির কারণে গত পাঁচ বছর ধরে ভাইদের সাথে আমি কোন সম্পর্ক রাখি নাই।

মাসুদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, শাশুড়ি (তাহেরা আক্তার) বলেছেন, আমাকে হাজীগঞ্জে বাড়ি করে দিবেন। তাঁর কথায় আমি শাশুড়ির ও স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে কুয়েত থেকে নিয়মিত টাকা পাঠিয়েছি। কিন্তু তিনি আমাকে বাড়ি করে দেন নি। এ দিকে মাসুদুজ্জামান হাওলাদার শাশুড়ি ও স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে মোট কত টাকা পাঠিয়েছেন, তা না জানালেও তিনি ৫ লাখ ৯১ হাজার ৯০৯ টাকার একটি স্ট্যাটমেন্ট গণমাধ্যমকর্মীদের দিয়েছেন।

মাসুদুজ্জামান আরও বলেন, আমি রিমাকে হাজীগঞ্জ বাজারে বাসা নেওয়ার জন্য টাকা পাঠাই। ওই টাকা দিয়ে রিমা বাসা ভাড়া নেয় এবং আসবাবপত্র ও ফ্রিজসহ গৃহস্থালী মালামাল কিনে। পরে বাসা ছেড়ে দেবার কারনে আমার টাকায় কেনা, সেই সব আসবাবপত্র তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যায়। এখন আমার সেই মালামালসহ আমি বাড়ি করার জন্য যে টাকা পাঠিয়েছি, ওই টাকাও বা কোথায়? নিশ্চই আমার শশুর-শাশুড়ির কাছে।

এ দিকে জামাতার সকল অভিযোগ অস্বীকার করে রিমার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, আামার মেয়ে (রিমা) যেসব কথা উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দিয়েছে, সবকিছু সত্য ও সঠিক। তার মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে নাতিকে নিয়ে রিমা আত্মহত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমরা জামাইকে (মাসুুদুজ্জামান) ৫ লাখ টাকা দিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছি। আর আমি টিনশেড বিল্ডিং করেছি, আমার শশুর (রিমা নানার বাড়ি) বাড়ির দেওয়া টাকা দিয়ে।

টাকার পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, রিমার বিয়ে হয়েছে ৫ বছরেরও বেশি। যদি জামাই টাকা না পাঠাতো, তাহলে রিমা ও তার দুই সন্তান, কি খেয়ে বেঁচে ছিলো? তবে সংসার খরচের বাহিরে জামাই (মাসুদুজ্জামান) অতিরিক্ত কোন টাকা পাঠিয়েছে কিনা, তা আপনারা দেখেন? বরং সংসারের জন্য যা প্রয়োজন, তাও সে ঠিকমতো দিতো না। এজন্য এবং কারণে-অকারণে সে আমার মেয়েকে ফোনে অসহনীয় মানসিক নির্যাতন করেছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে চাঁদপুর-লাকমাস রেলসড়কের হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৬নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ এলাকায় তাহমিনা আক্তার রিমা তার ষোলমাস বয়সি শিশু সন্তান আব্দুর রহমানকে নিয়ে সাগরিকা টেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ মরেদহ দুইটি উদ্বার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে এবং বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা দেওয়ানজি বাড়ির কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

মারা যাওয়া রিমা (২৪) ওই বাড়ীর রফিকুল ইসলামের মেয়ে ও বাকিলা ইউনিয়নের সন্না গ্রামের হাওলাদার বাড়ির নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে কুয়েত প্রবাসী মো. মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের স্ত্রী। তার সিদরাতুল মুনতাহা নামের সাড়ে চার/পাঁচ বছর বয়সি আরও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এর আগে পারিবারিক কলহের জেরে গত ২৮ মার্চ রিমা তার স্বামী মাসুদুজ্জামান হাওলাদার (৪০), তার ভাসুর মামুন হাওলাদার (৫৫)ও মাহবুব হাওলাদার (৫০) বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।আরো আগে রিমা তার স্বামীকে তালাক পাঠায়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রিমার বাবা তার স্বামী মাসুদুজ্জামানকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে কুয়েত পাঠায়। এরপর পারিবারিক কলহের জেরে রিমাকে ফোনে অশ্লিল ভাষায় গালমন্দ এবং হুমকি-ধমকি দিতেন মাসুদুজ্জামান। এক পর্যায়ে রিমা বাধ্য হয়ে তাকে তালাক দেন। তালাকের পর মাসুদুজ্জামান দেশে এসে ইমুতে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ ও প্রাণনাশ এবং স্বামী-স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমমি-ধমকি দেন।

এ ঘটনায় ভাসুরদের জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো রিমাকে হুমকি-ধমকি দেন বলে রিমার পরিবারের সদস্যরা জানান। এক পর্যায়ে অপমান-অপদস্থ ও হুমকি-ধমকি সহ্য করতে না পেরে তার ষোল মাস বয়সি শিশু সন্তান আবদুর রহমানকে নিয়ে রিমা আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়।

তবে রিমা আত্মহত্যার পূর্বে তার ব্যবহৃত (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) ফেইসবুকে “আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ী নয়, তার মেয়েকে সবাই যেনো দেখে রাখে” উল্লেখ করে একটি পোস্ট দিয়েই ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। ওই সময়ে বিষয়টি হাজীগঞ্জে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়।

ক্যাপশন : হাজীগঞ্জে ষোল মাস বয়সি শিশু সন্তান আব্দুর রহমানকে ট্রেনের নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহননকারী তাহমিনা আক্তার রিমা ও কোলে তার সন্তান আব্দুর রহমান। পাশে সম্প্রতি সময়ের তোলা আব্দুর রহমানের ছবি। -ইল্শেপাড়

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

কচুয়ায় বাজারে কাঠ ফার্নিচার দোকানে আগুন দেওয়ার অভিযোগ

হাজীগঞ্জে সন্তানসহ আত্মহননকারী সেই রিমার স্বামী আর বাবার পরিবারের পরস্পর বিরোধী অভিযোগ

Update Time : 06:02:49 pm, Sunday, 28 April 2024

হাজীগঞ্জে কোলের শিশু সন্তানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় তাহমিনা আক্তার রিমার বাবার পরিবার ও তার তালাক দেওয়া স্বামী মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের মাঝে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রিমার বাবার পরিবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করলে ও এখনো কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অপর দিকে মাসুদুজ্জামান তার সাবেক স্ত্রী রিমাকে দোষারোপ করে বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছেন গনমাধ্যমের কাছে।

এর মধ্যে আমার বিরুদ্ধে থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আমাকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে কুয়েতে পাঠানো হয়েছে। তাদের অভিযোগ মিথ্যা। বরং আমি যখন বিয়ে করি, তখন তাদের (শশুর) টিনের দোচালা ঘর ছিল, আমি টাকা দিয়ে তাদেরকে টিনশেড বিল্ডিং করে দেই। এরপর অভিযোগে আমার দুই ভাইকে আসামি করা হয়েছে। অথচ শশুর বাড়ির কারণে গত পাঁচ বছর ধরে ভাইদের সাথে আমি কোন সম্পর্ক রাখি নাই।

মাসুদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, শাশুড়ি (তাহেরা আক্তার) বলেছেন, আমাকে হাজীগঞ্জে বাড়ি করে দিবেন। তাঁর কথায় আমি শাশুড়ির ও স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে কুয়েত থেকে নিয়মিত টাকা পাঠিয়েছি। কিন্তু তিনি আমাকে বাড়ি করে দেন নি। এ দিকে মাসুদুজ্জামান হাওলাদার শাশুড়ি ও স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে মোট কত টাকা পাঠিয়েছেন, তা না জানালেও তিনি ৫ লাখ ৯১ হাজার ৯০৯ টাকার একটি স্ট্যাটমেন্ট গণমাধ্যমকর্মীদের দিয়েছেন।

মাসুদুজ্জামান আরও বলেন, আমি রিমাকে হাজীগঞ্জ বাজারে বাসা নেওয়ার জন্য টাকা পাঠাই। ওই টাকা দিয়ে রিমা বাসা ভাড়া নেয় এবং আসবাবপত্র ও ফ্রিজসহ গৃহস্থালী মালামাল কিনে। পরে বাসা ছেড়ে দেবার কারনে আমার টাকায় কেনা, সেই সব আসবাবপত্র তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যায়। এখন আমার সেই মালামালসহ আমি বাড়ি করার জন্য যে টাকা পাঠিয়েছি, ওই টাকাও বা কোথায়? নিশ্চই আমার শশুর-শাশুড়ির কাছে।

এ দিকে জামাতার সকল অভিযোগ অস্বীকার করে রিমার বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, আামার মেয়ে (রিমা) যেসব কথা উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দিয়েছে, সবকিছু সত্য ও সঠিক। তার মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে নাতিকে নিয়ে রিমা আত্মহত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমরা জামাইকে (মাসুুদুজ্জামান) ৫ লাখ টাকা দিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছি। আর আমি টিনশেড বিল্ডিং করেছি, আমার শশুর (রিমা নানার বাড়ি) বাড়ির দেওয়া টাকা দিয়ে।

টাকার পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, রিমার বিয়ে হয়েছে ৫ বছরেরও বেশি। যদি জামাই টাকা না পাঠাতো, তাহলে রিমা ও তার দুই সন্তান, কি খেয়ে বেঁচে ছিলো? তবে সংসার খরচের বাহিরে জামাই (মাসুদুজ্জামান) অতিরিক্ত কোন টাকা পাঠিয়েছে কিনা, তা আপনারা দেখেন? বরং সংসারের জন্য যা প্রয়োজন, তাও সে ঠিকমতো দিতো না। এজন্য এবং কারণে-অকারণে সে আমার মেয়েকে ফোনে অসহনীয় মানসিক নির্যাতন করেছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে চাঁদপুর-লাকমাস রেলসড়কের হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৬নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ এলাকায় তাহমিনা আক্তার রিমা তার ষোলমাস বয়সি শিশু সন্তান আব্দুর রহমানকে নিয়ে সাগরিকা টেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ মরেদহ দুইটি উদ্বার করে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে এবং বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের ধড্ডা দেওয়ানজি বাড়ির কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

মারা যাওয়া রিমা (২৪) ওই বাড়ীর রফিকুল ইসলামের মেয়ে ও বাকিলা ইউনিয়নের সন্না গ্রামের হাওলাদার বাড়ির নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে কুয়েত প্রবাসী মো. মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের স্ত্রী। তার সিদরাতুল মুনতাহা নামের সাড়ে চার/পাঁচ বছর বয়সি আরও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এর আগে পারিবারিক কলহের জেরে গত ২৮ মার্চ রিমা তার স্বামী মাসুদুজ্জামান হাওলাদার (৪০), তার ভাসুর মামুন হাওলাদার (৫৫)ও মাহবুব হাওলাদার (৫০) বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।আরো আগে রিমা তার স্বামীকে তালাক পাঠায়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রিমার বাবা তার স্বামী মাসুদুজ্জামানকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে কুয়েত পাঠায়। এরপর পারিবারিক কলহের জেরে রিমাকে ফোনে অশ্লিল ভাষায় গালমন্দ এবং হুমকি-ধমকি দিতেন মাসুদুজ্জামান। এক পর্যায়ে রিমা বাধ্য হয়ে তাকে তালাক দেন। তালাকের পর মাসুদুজ্জামান দেশে এসে ইমুতে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ ও প্রাণনাশ এবং স্বামী-স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমমি-ধমকি দেন।

এ ঘটনায় ভাসুরদের জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো রিমাকে হুমকি-ধমকি দেন বলে রিমার পরিবারের সদস্যরা জানান। এক পর্যায়ে অপমান-অপদস্থ ও হুমকি-ধমকি সহ্য করতে না পেরে তার ষোল মাস বয়সি শিশু সন্তান আবদুর রহমানকে নিয়ে রিমা আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়।

তবে রিমা আত্মহত্যার পূর্বে তার ব্যবহৃত (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) ফেইসবুকে “আত্মহত্যার জন্য কেউ দায়ী নয়, তার মেয়েকে সবাই যেনো দেখে রাখে” উল্লেখ করে একটি পোস্ট দিয়েই ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। ওই সময়ে বিষয়টি হাজীগঞ্জে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়।

ক্যাপশন : হাজীগঞ্জে ষোল মাস বয়সি শিশু সন্তান আব্দুর রহমানকে ট্রেনের নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহননকারী তাহমিনা আক্তার রিমা ও কোলে তার সন্তান আব্দুর রহমান। পাশে সম্প্রতি সময়ের তোলা আব্দুর রহমানের ছবি। -ইল্শেপাড়